Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুহুরী নদীর বালু উত্তোলন বিলীন হচ্ছে ভিটেবাড়ি

মো. ওমর ফারুক, ফেনী থেকে : | প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় মুহুরী নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে বিলীন হচ্ছে ভিটেবাড়ি ও জায়গা জমি। দেখার কেউ নেই।

সরেজমিন দেখা যায়, ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর গ্রামের (নাপিত কোনা) নামক স্থানে মুহুরী নদী থেকে কয়েক মাস যাবত বালু উত্তোলন করে আসছে সরকার দলীয় সিন্ডিকেটের নেতাকর্মীরা। সেখানে নদীর পাশে পরশুরাম উপজেলার উত্তর জয়পুর গ্রামের মিঝি বাড়ির বাসিন্দা মো. এছাহাক, মো. ইসমাইল, মো. ইলিয়াছ ও মজুমদার বাড়ির দেলোয়ার হোসেন, মনোয়ার হোসেন ও মো. শাহিনের প্রায় ১০০ শতক জায়গা ছিল। তারা ওই জায়গায় কিছু অংশে গাছ লাগিয়েছে কিছু অংশে ক্ষেত খামার ও ফসল আবাদ করে কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করে।
কিন্তু গত ৭ থেকে ৮ মাস ধরে মুহুরী নদীর পাশে এই সব নিরীহ মানুষের জায়গার ভিতরে ড্রেজার মেশিনে করে বালু তুলে নিচ্ছে। ফলে নদীতে বিশাল ভাঙন দেখা দেয়। আস্তে আস্তে মানুষের জায়গা জমি নদী গর্বে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এদিকে নদীর একপাশে বিশাল বালুর স্তুপ গড়ে ওঠে। এসব বিষয় স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন দেখেও যেন দেখছে না।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা মুহুরী নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন। জায়গার মালিকগণ বালু উত্তোলনে বাঁধা দিলে তাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এই কারণে তারা ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা। তারা আরো জানান, পাঁচ মাস আগে এই বিষয়ে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) সাবিনা ইয়াসমিনের কাছে বিচার দিলে তিনি সাথে সাথে পুলিশ নিয়ে স্পটে হাজির হলে বালু সিন্ডিকেট নেতারা পালিয়ে যায়। পরে কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আবার নদীতে থেকে বালু উত্তোলন শুরু করে। পাশের গ্রাম দেডপাড়া, পরশুরাম উপজেলার দক্ষিণ শালধর বেকের বাজারের পাশে মুহুরী নদী আরেকটি পয়েন্টে উল্লেখিত একই সিন্ডিকেট বালু উত্তোলন করে আসছে। ফলে নদীর পাশের গ্রাম দেডপাড়া ও রতনপুর অংশে বিশাল ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে ৮০ বছরের বৃদ্ধ আমিনুর রহমানের বাড়ি নদী গর্বে বিলীন হওয়ার পথে, তিনি বলেন, আমার শেষ সম্বল এই ঘরটি কেড়ে নিচ্ছে তারা। পাশে সালামত উল্যার বাড়িতে বাস করে ৬০ পরিবারের ৪০০ মানুষ। আস্তে আস্তে যে হারে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছি। অল্প কিছুদিনের মধ্যে সেখানে এই দুটি বাড়ি নদী গর্বে বিলীন হয়ে যাবে। প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের সাথে কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না এসব অসহায় মানুষ। তারা জানান, এই এলাকায় গত ১০ বছরেও কোন ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিমকে চোখে দেখিনি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলগাজী সদর ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম গোলাপ বলেন, উত্তর শ্রীপুর অংশে মুহুরী নদী থেকে বালু উত্তোলনের সাথে আমি জড়িত নই। এখানে অনেক আগ থেকে দলীয় ভাবে বালু উঠানো হচ্ছে। তবে কেবা কারা জড়িত আছে আমার জানা নেই।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মে. সাইফুল ইসলামকে ফোন করলে তিনি ইনকিলাবকে জানান, এই বিষয়ে আমি কোন অভিযোগ পাইনি। এখন যেহেতু জানতে পারলাম সরেজমিনে গিয়ে সংশ্লিষ্টতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভিটেবাড়ি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ