পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কার্যক্রমের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির ভেঙে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল এই খবর ছিল টক অব দ্য কান্ট্রি। দলের পক্ষ থেকে প্রেস রিলিস পাঠানো না হলেও কেন্দ্রীয় অনেক নেতা বিষয়টি তা নিশ্চিত করেছেন। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত না আসছে, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বা দেননি কোনোটাই বলব না। এ খবরের পর থেকে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে ছাত্রলীগের মধ্যে। হঠাৎ যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর। হতাশা বিরাজ করছে এই দুই নেতার অনুসারী পদপ্রত্যাশী নেতাদের মাঝে। তারা বারবার নিশ্চিত হবার চেষ্টা করছেন প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কমিটি ভেঙে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কি-না।
গত শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় ছাত্রলীগের বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় ছাত্রলীগের সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী গণভবনে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বের হবার সময় শোভন ও রাব্বানীকে দেখে বোবাঝকা করেন এবং গণভবন থেকে বের হয়ে যাবার নির্দেশ দেন। এমন খবর প্রচার হবার সঙ্গে সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে রীতিমত ভাইরাল হয়ে যায়। হঠাৎ এক মুহূর্তেই হতাশা গ্রাস করে শোভন ও রাব্বানীর অনুসারীদের। কেন্দ্রীয় নেতারাও বিব্রত অবস্থায় পড়ে যান আসলে কি হবে। বর্তমান কমিটি ইতোমধ্যে পার করেছে ১৩ মাস। দুই বছর মেয়াদের কমিটির এই প্রথম মেয়াদ শেষ হবার আগেই কমিটি ভাঙার কথা উঠছে। ১৩ মাসে মাত্র দুটি কমিটি দিয়েছে শোভন-রাব্বানী। অন্য যেসব পদপ্রত্যাশী নেতা এতোদিন শোভন ও রাব্বানীর রাজনীতি করেছেন তারা যেন অথৈ সমুদ্রে পড়েছেন। কি হবে তা নিয়ে পড়েছেন টেনশনে।
তবে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কোনো নেতা অফিসিয়ালি মুখ না খোলায় ছাত্রলীগের নেতারা কমিটি ভাঙার নির্দেশ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বা প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেননি বলেও দাবি করেন তারা। কিন্তু এরপরও ছাত্রলীগের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক কোনো ধরণের মন্তব্য করেননি এবং সাংবাদিকরাও যোগাযোগ করে তাদেরকে পায়নি। ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক আহসান হাবীব ইনকিলাবকে বলেন, এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি। কিংবা আওয়ামী লীগের কোনো নেতা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। আমরা পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে এ বিষয়ে জানতে পেরেছি। তবে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ খবরটি মিথ্যা বলে জানিয়েছেন বলে জানান আহসান হাবীব।
ছাত্রলীগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ছাত্রলীগের কর্মকান্ডের উপর চরম ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দিতে বলেছেন কি-না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত না আসছে, ততক্ষণ উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন তা বলব না, উনি বলেননি তাও বলব না। সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়ন প্রসেস না হওয়া পর্যন্ত আমি এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারব না।
জানা যায়, গত শনিবার গণভবনের বৈঠকে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে ছাত্রনেতারা দুপুরের আগে ঘুম থেকে ওঠে না। কারো কারো বিরুদ্ধে মাদকের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও উঠে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলনে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত অপেক্ষা করা, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে পৌঁছানোর পর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুষ্ঠানে যাওয়া এবং সিনিয়র নেতা তোফায়েল আহমেদকে প্রধান অতিথি করে আয়োজন করা ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে একই ধরনের অপর একটি ঘটনার কথা এ সময় উঠে আসে।
ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃতি করে আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, আমি ছাত্রলীগের এমন নেতা চাই না, যাদের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ পর্যন্ত উঠেছে। এছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন কলেজের সম্মেলনের দুই মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও কমিটি দিতে না পারা, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি করার বিষয়ে অনৈতিক অর্থনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ আসা, কেন্দ্রীয় কমিটিতে অনেক বিতর্কিত, বিবাহিত ও জামায়াত-বিএনপি সংশ্লিষ্টদের পদায়ন করার বিষয়ে এ সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধুর ক্যান্টিনে দেখা যায় না বলেই চলে। ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে বিবাহিত হওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার বিষয়গুলো নিয়েও কথা বলেন নেতারা। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দু’জনের বিরুদ্ধেই অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ নিয়েও আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ে কানাঘুষা রয়েছে।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নেতাদের অভিযোগ, খবরের জন্য শোভন বা রাব্বানী কাউকেই ফোন দিয়ে পাওয়া যায় না। দেখা করতে চাইলেও তাদের পাওয়া যায় না। এছাড়া বিগত সময়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ বঞ্চিতদের নেতাদের ওপর হামলার অভিযোগে শোভন-রাব্বানীর ওপর ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের নেতারা। ছাত্রলীগে নিজেদের মধ্যেও রয়েছে নানান দ্ব›দ্ব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সঙ্গে কেন্দ্রের দ্ব›দ্ব স্পষ্ট।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী গতকাল একটি অনলাইন গণমাধ্যমে বলেন, আওয়ামী লীগের কিছু অতি উৎসাহী লোক আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এতে আমরা বিচলিত নই। আমাদের বিরুদ্ধে কি ধরণের অভিযোগ উঠেছে, তাও জানি না। তাই আজ (গতকাল) সন্ধ্যায় আমরা গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করব। তিনি আমাদের মায়ের মতো, তাই মা সন্তানকে বকা দিতেই পারেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ মে সম্মেলনের এক বছরের মাথায় ৩০১ সদস্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর সংগঠনটির ভেতর থেকেই নানা সমালোচনা চলছিল। এর আগে ২০১৮ সালের ১২ ও ১৩ মে সম্মেলনে কমিটি করতে ব্যর্থ হয় ছাত্রলীগ। পরে একই বছরের ৩১ জুলাই সম্মেলনের দুই মাস পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম আওয়ামী লীগ সভাপতি চূড়ান্ত করার পর তার ঘোষণা দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।