নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজের একমাত্র টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা চলছে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।
বাকিদের আসা যাওয়ার মিছিলে একাই সামলে চলেছিলেন আফগান ঘূর্ণিতোপ। দেখে, শুনে, বুঝে খেলছিলেন আপন মহিমায়। টেস্ট স্পেশালিস্ট তকমাটি যে এমনি এমনি পাননি মুমিনুল হক রেখে যাচ্ছিলেন তারও স্বাক্ষর। তবে হঠাৎই ভেঙে পড়ে সে প্রতিরোধ।
প্রতিকূলতার মাঝেও তুলে নিয়েছিলেন নিজের ১৩তম টেস্ট ফিফটি। অতিরিক্ত শট খেলার চেষ্টাই শেষ পর্যন্ত কাল হলো মুমিনুলের। উড়িয়ে মারতে গিয়ে উইকেট উপহার দিয়ে এলেন মোহাম্মদ নবিকে।
আগের কয়েক ওভারে বেশ কয়েকটি লফটেড শট খেলে সফল হয়েছিলেন মুমিনুল। সেই চেষ্টা করেছিলেন আবার। কিন্তু পার করতে পারেননি মিড অন ফিল্ডারকে। দলকে আরও বিপদে ঠেলে বিদায় নিলেন সহজ ক্যাচ দিয়ে।
চট্টগ্রামের এই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ৬ বার ফিফটি করে প্রতিটিকেই সেঞ্চুরিতে রূপ দিয়েছিলেন মুমিনুল। পারলেন না এবার। ফিরলেন ৫২ রানে।
৪৫ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৩৭।
মুমিনুলের ফিফটি
দলের বিপর্যয়ের মধ্যে পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছেন মুমিনুল হক। দারুণ কিছু শটে ফিফটিতে পৌঁছে গেলেন ৬৯ বলে। ইনিংসে বাউন্ডারি ৮টি। তার ত্রয়োদশ টেস্ট ফিফটি।
রিভিউ হারাল আফগানিস্তান
মাহমুদউল্লাহকে আউট করার পর একই ওভারে মোসাদ্দেককে ফেরানোর আশায় ছিল আফগানিস্তান। রশিদের বলে এলবিডব্লিউয়ের আবেদন হয় জোরালো। আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেয় আফগানরা। তবে রিপ্লেতে দেখা যায়, ইমপ্যাক্ট ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে।
আফগানিস্তান হারাল তাদের দুটি রিভিউ।
মাহমুদউল্লাহকে ফেরালেন অপ্রতিরোধ্য রশিদ
চা বিরতির পর আরেকটি উইকেট নিতে খুব সময় নিলেন না রশিদ খান। এবার তার শিকার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
শুরু থেকেই বেশ ইতিবাচক খেলার চেষ্টা করছিলেন মাহমুদউল্লাহ। পায়ের ব্যবহার করছিলেন ভালোই। কিন্তু আউট হয়ে গেলেন অনেকটা নিচু হওয়া এক বলে।
গুগলির চেষ্টায় বলটি অনেক শর্ট করে ফেলেন রশিদ। মাহমুদউল্লাহ পেছনে পায়ে পজিশনে চলে যান পুল করতে। কিন্তু বল বাউন্স করেনি খুব বেশি। নিচু হওয়া বল মাহমুদউল্লাহর ব্যাট ফাঁকি দিয়ে আঘাত করে স্টাম্পে। হতবাক ব্যাটসম্যান তাকিয়ে থাকেন হতাশায়।
মাহমুদউল্লাহ ফিরলেন ৭ রানে। রশিদ নিলেন চতুর্থ উইকেট। ৪১ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১২৭। ফিফটি তুলে ৫১ রানে অপরাজিত আছেন মুমিনুল হক। তাকে সঙ্গ দিয়ে ক্রিজে আসা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ঝুলিতে ৭ রান।
বাংলাদেশের দলীয় শতরান
রশিদ খানের ঘূর্ণিতে বেহাল দশা টাইগারদের। দলীয় ৮৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বড় চাপে রয়েছে দলটি। তবে এরপর আর কোন বিপদ না ঘটিয়ে শতরানের কোটা পার করেছে বাংলাদেশ। এক প্রান্ত আগলে রেখেছেন মুমিনুল হক। তাকে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৩৪.৫ ওভারে এসেছে দলীয় শতরান।
৩৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১০৩ রান। মুমিনুল হক ৩৩ রান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৭ ব্যাট করছেন।
বাংলাদেশের হতাশার সেশন
প্রথম সেশনে ব্যাটিংয়ের ছোট্ট সময়টুকুতেই সাদমান ইসলামকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে নেমে এলো আরও বিপর্যয়। এক সেশনে হারাতে হলো চার উইকেট।
সেশনের শুরুটা সৌম্য ও লিটন করেছিলেন সতর্কতায়। কিন্তু কেউই শেষ পর্যন্ত পারেননি লম্বা সময় টিকতে। রশিদ ও নবির স্পিন জুটি নাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। ৫ উইকেটে ৮৮ রান নিয়ে চা-বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ।
এক ওভারেই দুটিসহ রশিদ নিয়েছেন ৩ উইকেট।
সাকিব-মুশফিকের বিদায়ে দিশেহারা বাংলাদেশ
সৌম্য-লিটন কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন প্রতিরোধের। তবে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে সেটিও হলো না। এক বলের ব্যবধানে একই রানের দাঁড়িয়ে দুই অভিজ্ঞ সেনানীকে হারিয়ে দিশেহারা বাংলাদেশ। এবারও শিকারির ভুমিকায় সেই রশিদ খান।
এলেন আর গেলেন মুশফিক
সাকিবের বিদায়ের পর বড় ভরসা ছিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু রশিদ খানের বলে তিনি বিদায় নিলেন দ্বিতীয় বলেই।
আউটটি নিয়ে অবশ্য প্রশ্নের অবকাশ থাকল যথেষ্টই। রশিদের বলটি ডিফেন্স করেছিলেন মুশফিক। বল তার পায়ের অগ্রভাগে বা পিচে পড়ে যায় শর্ট লেগের হাতে। ক্যাচের আবেদন করেন আফগানরা। মাঠের আম্পায়ার সিদ্ধান্ত পাঠান তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে। তবে তার সফট সিগন্যাল ছিল আউট।
রিভিউয়ে বারবার দেখেও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না বল মুশফিকের বুটে লেগেছে নাকি মাটিতে। বলটি খেলার সময় ধুলোর ওড়াউড়ি কাজ আরও কঠিন করে দেয় আম্পায়ারের। ক্যামেরার একেকটি অ্যাঙ্গেল থেকে মনে হচ্ছিল একেকরকম।
শেষ পর্যন্ত সফট সিগনালই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কারণ সেই সফট সিগনাল বদলানোর মতো নিশ্চিত প্রমাণ পাননি তৃতীয় আম্পায়ার। বিদায় নিতে হয় মুশফিককে। এই নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে দশমবার শূন্য রানে ফিরলেন মুশফিক।
৩৩ ওভার শেষে (চা-বিরতি) বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ৮৮।
অল্পতে শেষ সাকিবও
সাকিব আল হাসান ও রশিদ খানের লড়াইয়ে জিতলেন রশিদ। বাংলাদেশ অধিনায়ককে ফেরালেন আফগান অধিনায়ক।
ম্যাচের আগে রশিদ বলেছিলেন, সাকিবকে দ্রুত ফেরাতে চায় তার দল। দায়িত্বটি নিজেই পালন করলেন আফগান অধিনায়ক। রশিদের লেগব্রেকে লাইন কাভার করতে পারেননি সাকিব। তার ডিফেন্স ফাঁকি দিয়ে বল লাগে পায়ে। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর রিভিউ নিয়েছিলেন সাকিব।
খালি চোখে অবশ্য আউটই মনে হচ্ছিল। সাকিব হয়তো আশায় ছিলেন নাটকীয় কিছুর। কিন্তু আশা পূরণ হয়নি। বল লাগছিল মিডল স্টাম্পে।
২০ বলে ১১ রানে ফিরলেন সাকিব। বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৮৮।
থিতু হয়েও পারলেন না লিটন
আফগানিস্তান বোলারদের সামনে শুরু থেকেই ধুঁকছে বাংলাদেশের ব্যাটিং। তবে স্রোতের বীপরিতে কিছুটা থিতু হওয়ার চেষ্টায় ব্যাট করছিলেন লিটন দাস। তবে তাকেও থামতে হয়েছে অস্বস্তি নিয়েই। রশিদ খানের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ৩৩ রানে থেমেছেন লিটন।
২৮ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ ৫৮। থিতু হওয়ার চেষ্টায় মুমিনুল হককে (৫) সঙ্গ দিতে ক্রিজে এসেছেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়কের ঝুলিতে এরই মধ্যে জমেছে ৩ রান।
আশা জাগিয়ে ফিরে গেলেন সৌম্য
উইকেটে দারুণ সেট হয়ে গিয়েছিলেন সৌম্য সরকার। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারলেন না এই ওপেনার। মোহাম্মদ নবির স্লাইডার রক্ষণাত্মক ভাবে খেলতে গিয়েও মিস করেন এ ওপেনার। এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়ে আউট হলেন ব্যক্তিগত ১৭ রানে। আর সৌম্যর বিদায়ের বেশ চাপে পড়েছে বাংলাদেশ।
২০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৩৮ রান। ২১ রানে ব্যাট করছেন লিটন কুমার দাস। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন মুমিনুল হক।
সফল রিভিউতে বাঁচলেন লিটন
মোহাম্মদ নবির জোরালো আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন আম্পায়ার নাইজেল লং। পা সামনে এগিয়ে রক্ষণাত্মক ঢঙে খেলতে গিয়েছিলেন লিটন। বল ব্যাট মিস করে লাগে প্যাডে। রিপ্লেতে দেখা যায় বল বাঁক খেয়ে লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে যাচ্ছিল বল। ফলে এ যাত্রা বেঁচে যান লিটন। এ সময় ১ রানে ব্যাট করছিলেন তিনি।
৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩ রান। লিটন ১ ও সৌম্য ২ রানে ব্যাট করছেন।
শুরুতেই সাদমানকে খুইয়ে লাঞ্চে বাংলাদেশ
মাথার উপর ৩৪২ রানের বিশাল বোঝা। সেই চাপেই কিনা শুরু থেকেই অস্বস্তিতে ভুগছিলেন সাদমান ইসলাম। কয়েকটি বল কঠিন পরিশ্রমে ঠেকাতে পারলেও শেষ রক্ষা হয়নি। দলীয় রানের খাতা খোলার আগেই ইনিংসের চতুর্থ বলে শূণ্য রানে ফিরে গেছেন এই ওপেনার।
ইয়ামিন আহমেদজাইয়ের অফস্টাম্পের অনেক বাইরে রাখা বলে খোঁচা মারতে গিয়েই সর্বনাশটা করেন তিনি। ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ ক্যাচ লুফে নিয়েছেন উইকেটরক্ষক আফসার জাজাই। ফলে শুরুতে চাপে বাংলাদেশ।
৪ ওভার শেষে ঝুলিতে একটি করে রান ও উইকেট নিয়ে লাঞ্চে গেছে দু’দল। এখনও রানের খাতা খেলা হয়নি সৌম্য সরকারের, লিটন কুমার দাসের ব্যাট থেকে এসেছে ঐ এক রান।
প্রথম ইনিংসে ৩৪২ রান তুলেছে আফগানিস্তান
প্রথম দিনে রহমত শাহর ইতিহাসগড়া সেঞ্চুরি আর আসগর আফগানের দৃঢ় ব্যাটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় রশিদ খানের ঝড়ো ফিফটি। আর তাতেই নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৪২ রান তোলে আফগানিস্তান।
আজ শুক্রবার শুরু হওয়া সিরিজের একমাত্র টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাকি ৫ উইকেটে আফগানিস্তান যোগ করতে পারে ৭১ রান।
তাইজুল ইসলাম নিয়েছেন ৪ উইকেট। সাকিব আল হাসান ও নাঈম হাসান নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। একটি করে উইকেট মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজের।
ঝড়ো ফিফটি তুলে ফিরলেন রশিদ
অবশেষে রশিদ খানকে বিদায় করতে পেরেছে বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এগিয়ে এসে চিপ করতে চেয়েছিলেন। ব্যাটে বলে ঠিকভাবে সংযোগ করতে পারেননি। ফলশ্রুতিতে ক্যাচ ধরেছেন বোলার নিজেই। ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ লুফে নিয়েছেন তিনি।
তবে এর আগেই কাজের কাজটি করে নিয়েছেন রশিদ। নিজেদের ইনিংসকে পৌঁছে দিয়েছেন প্রায় সাড়ে তিনশ রানের কাছাকাছি। নিজেও করেছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। ৬১ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫১ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
টেস্ট অধিনায়কত্বের অভিষেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ফিফটি করেছেন রশিদ খান। ঠিক ৫০ বলে ফিফটি করতে ২টি চারের সঙ্গে তিনটি ছক্কা হাঁকান আফগান অধিনায়ক। তাইজুল ইসলামকে দুবার ও সাকিব আল হাসানকে একবার ছক্কায় উড়ান তিনি।
কাইস আহমেদের পর ইয়ামিন আহমাদজাইকেও ফিরিয়েছেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ উইকেটটা পেয়েছে রিভিউ নিয়ে।
বাঁহাতি স্পিনারকে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে প্যাডে লেগে চলে যায় স্লিপে সৌম্য সরকারের হাতে।
আম্পায়ার শুরুতে আউট না দিলেও সাকিব রিভিউ নিলে পাল্টে সিদ্ধান্ত। তখন আফগানিস্তানের সংগ্রহ ছিল ৯ উইকেটে ৩২৭ রান। সেখান থেকে আর বেশিদূর এগোতে পারেনি সফরকারীরা, থামে ৩৪২-এ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস : ১১৭ ওভারে ৩৪২ (ইব্রাহিম ২১, ইহসানউল্লাহ ৯, রহমত ১০২, হাসমতউল্লাহ ১৪, আসগর ৯২, নবি ০, আফসার ৪১, রশিদ ৫১, কায়েস ৯, আহমেদজাই ০, জহির ০; তাইজুল ৪/১১৬, সাকিব ২/৬৪, মিরাজ ১/৭৩, নাঈম ২/৪৩, মাহমুদউল্লাহ ১/৯, সৌম্য ০/২৬, মুমিনুল ০/৯, মোসাদ্দেক ০/১)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।