Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এমপিদের নিয়ন্ত্রণে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট

ভোটে পরাজিত জনসন বিদ্রোহী ২১ এমপিকে বহিষ্কার করলেন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট নিয়ে এক ভোটাভুটিতে হেরে গেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এর ফলে গতকাল বুধবার পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের বিরোধী এমপিরা। এর ফলে তাদের জন্য চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট ঠেকাতে আরো একটি বিল আনার সুযোগও তৈরি হয়। তবে ভোটাভুটিতে হেরে যাওয়ার পর বরিস জনসন বলেছেন, তিনি আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব আনবেন। একই সঙ্গে তিনি তার দলের বিদ্রোহী ২১ জন এমপিকে বহিষ্কার করেছেন যাদের মধ্যে রয়েছেন স্যার উইনস্টন চার্চিলের নাতিসহ বেশ ক’জন সাবেক মন্ত্রীও।
আগামী ৩১ অক্টোবর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ, যেটি ব্রেক্সিট হিসেবে পরিচিত তা কার্যকর হওয়ার কথা। কীভাবে কোন চুক্তিতে সেই বিচ্ছেদ হবে, এ নিয়েই চলছে এখন আলোচনা। তবে এই বিচ্ছেদ নিয়ে কোন চুক্তি হোক বা না হোক, নির্ধারিত তারিখেই ব্রেক্সিট কার্যকর করার ব্যাপারে অনড় থাকার কথা বলেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, তিনি আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব আনবেন। এ নিয়ে গত কিছুদিন ধরেই বেশ উত্তপ্ত ব্রিটেনের রাজনৈতিক অঙ্গন। এর মধ্যে ছুটি শেষে মঙ্গলবার বৈঠকে বসে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট। আগেই এক সভায় বরিস জনসন জানিয়েছিলেন, ব্রেক্সিট নিয়ে নিজ দলের যারা বিরোধিতা করবেন তাদের বহিষ্কার করা হবে। কিন্তু বিরোধী দলের পাশাপাশি নিজ দলের বিদ্রোহী এমপিদের কাছে হাউজ অফ কমন্সে ৩২৮-৩০১ ভোটে হেরে গেলেন তিনি। মিস্টার জনসনের নিজ দলের ২১ জন এমপি যাদের মধ্যে কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীও আছেন তারা এই ভোটাভুটিতে সরকারকে হারাতে বিরোধীদের সাথে যোগ দেন।
ভোটে জয়ের ফলে গতকাল বুধবার পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ পেলেন বিরোধী ও বিদ্রোহী এমপিরা। এই ভোটের ফলে চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের বিরোধীরা ব্রেক্সিট বিলম্বিত করতে পার্লামেন্টে বিল আনতে পারবেন।

ভোটের পর ডাউনিং স্ট্রীট থেকে বলা হয়েছে, যেসব টোরি এমপি বিদ্রোহ করেছে তাদের পার্লামেন্টারি পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হবে। বরিস জনসন বলেছেন, তিনি আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব আনবেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আশা, বহিষ্কার হুমকি ও আগাম নির্বাচনের কথায় বিদ্রোহী এমপিরা হয়তো অবস্থান বদলাবেন।

লেবার নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের পক্ষে দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আর নেই। মিস্টার জনসন বলেছেন, অক্টোবরে নির্বাচনের প্রচেষ্টা চালানো ছাড়া তার কিছু করার নেই। কারণ তিনি বলছেন, দেশের জনগণকেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদিও এটিও তার জন্য খুব একটা সহজ হবে না। কারণ ব্রিটেনে ২০১১ সালের একটি আইনে পার্লামেন্টকে পাঁচ বছরের মেয়াদ দেয়া হয়েছে। এখন সেটি পরিবর্তন করতে হলে সংসদে বরিস জনসনের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন লাগবে। এটি পেতে হলে তার বিরোধী দল লেবার পার্টির সমর্থন দরকার হবে। সেটি মি. জনসনের জন্য খুব একটা সহজ হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তবে এমপিরা যদি চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে বিল এনে সেটি পাশ করাতে সক্ষম হয় তাহলে তারা ব্রেক্সিট ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিলম্বিত করার প্রস্তাব দিতে প্রধানমন্ত্রীকে বাধ্য করতে বিল আনার সুযোগ পাবেন। তবে সেটি তখনি ঘটবে যদি এমপিরা ১৯ অক্টোবরের মধ্যে ব্রেক্সিটের জন্য একটি নতুন চুক্তি অনুমোদন বা চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট না দেন। ধারণা করা হচ্ছে, সরকার ১৫ অক্টোবর একটি সাধারণ নির্বাচন করতে চান। তার দুদিন পরেই ব্রাসেলসে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ভোটাভুটিতে সরকার হেরে যাওয়ার পর বিরোধী লেবার নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের পক্ষে দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আর নেই। তিনি মন্তব্য করেন, ভোটাভুটি হওয়ার আগেই এই বিল পাশ হওয়া উচিত ছিল। এখন পর্যন্ত ২১ জন টোরি এমপি সরকারকে হারাতে বিরোধীদের সাথে যোগ দিয়েছেন। গতকালই তাদের বহিষ্কার করেছেন বরিস জনসন। বিরোধীদের এখন দাবি, ‘নো ডিল ব্রেক্সিট’ বা চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট যেন না হয় সেটি আগে নিশ্চিত করা, তারপর যত দ্রুত সম্ভব সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি। সূত্র : বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রিটিশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ