পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারে রেডিওর ত্রুটি এবং বিমানের ককপিটে লেজার লাইট নিক্ষেপের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিমানবন্দরে লেজার লাইটের কারণে সন্ধ্যার পর বিমান ওঠা-নামার সময় সমস্যায় পড়ছেন পাইলটরা। লেজার রশ্মি কারণে তারা চোখে ঝাপসা দেখেন। এছাড়া যেকোনও সময় দুর্ঘটনার শঙ্কাও রয়েছে। এ বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে তিন মাস আগে অভিযোগ করেন পাইলটরা। তারপরও বন্ধ হয়নি লেজারের উৎপাত। বিমানবন্দরের বাইরে থেকে এ ঘটনা ঘটায় কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছে না বেসামরিক বিমান চলাচল (বেবিচক) কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্টরা জানান, মজা করতে লেজারের আলো বিমানের দিকে ছোড়া হয়। কিন্তু এ থেকে যেকোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে। যদি লেজারের আলো পাইলটের চোখে পড়ে তাহলে তিনি বিভ্রান্ত হয়ে যাবেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিমান অবতরণের সময়টা পাইলটের জন্য সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ওই সময়ে যদি পাইলট যদি চোখে আলো পড়া থেকে বাঁচতে সামনের দিক থেকে চোখ সরান তাহলে যেকোনও ভুল করে ফেলতে পারেন। আর এজন্য যদি বিমান দুর্ঘটনায় পড়ে তাহলে শুধু বিমানটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন নয়। কতগুলো মানুষের জীবন চলে যাওয়ার শঙ্কা থাকে।
বেবিচক সূত্র জানায়, বিমানকে টার্গেট করে লেজারের আলো নিক্ষেপ শাস্তিযোগ্য ও দন্ডনীয় অপরাধ- এ মর্মে গত ১৭ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেবিচক। একইসঙ্গে বিমানের নিরাপদ উড্ডয়ন ও অবতরণ নিশ্চিত করতে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানায় সংস্থাটি। বেবিচক জানায়, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল আইন, ২০১৭-এর ধারা-২৬ অনুসারে এই ধরনের কর্মকান্ড আইনত শাস্তিযোগ্য ও দন্ডনীয় অপরাধ।
পাইলটদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিনিয়ত রাতের বেলায় বিমান ওঠা-নামার সময় ককপিটের দিকে লেজার লাইটের আলো ছোড়া হচ্ছে। বিমানবন্দরের প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকার বাসা, ছাদ থেকে ককপিটে আলো ফেলা হচ্ছে। তীব্র আলো পাইলটদের দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। লেজারের উৎপাতের বিষয়ে বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়াকেও জানিয়েছেন পাইলটরা। তারপরও গত তিন মাসেও কোন কাজ হয়নি। পাইলটদের মতে, বেবিচকের পক্ষ থেকে ব্যাপকভাবে সচেতনা ও প্রচার থাকলে এটি বন্ধ হয়ে যেতো।
একজন পাইলট বলেন, বাংলাদেশে অবতরণ ঝুঁকিপূর্ণ-এই কারণ দেখিয়ে কোনও বিদেশি এয়ারলাইনস যদি দেশে না আসে, কোনও দেশ যদি বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় তাহলে দেশের জন্য নেতিবাচক হবে। ফলে বিমানবন্দরের বাইরে থেকে হচ্ছে, এই কারণ দেখিয়ে বেবিচকের বসে থাকার সুযোগ নেই। তাদের পক্ষে হয়তো নজরদারি করা সম্ভব না। কিন্তু ব্যাপক প্রচার চালানোর ব্যবস্থা করা সম্ভব। কিন্তু সচেতনতার জন্য বেবিচকের কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি।
বেবিচকের এয়ার ট্রাফিক সার্ভিস ও এরোড্রামস বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, পাইলটরা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারে প্রতিনিয়ত আমাদের জানাচ্ছেন তারা লেজার লাইট দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে বেবিচকের থেকে সচেতনামূলক ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরের বাইরে থেকে এ ঘটনায় ঘটনায় আমাদের পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
অন্যদিকে, একটি উড়োজাহাজ উড্ডয়ন থেকে শুরু করে গন্তব্যে পৌঁছাতে আকাশপথে চলাচলে প্রতিটি মুহূর্তে পাইলটকে সহায়তা করে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)। রেডিও’র মাধ্যমে সার্বক্ষণিক এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে উড়োজাহাজে সংযুক্ত থাকেন পাইলটরা। বাংলাদেশের আকাশসীমায় উড়োজাহাজের চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও হযরত শাহজালাল (রহ.)আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উড্ডয়ন-অবতরণের অনুমতি প্রদানকারী এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারের রেডিও’তে ক্রুটি দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘ দিনের পুরাতন রেডিও ব্যবস্থা প্রায় সময় পাইলটের সঙ্গে এটিসি’র যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। কখনও কখনও কথোপকথন পরিস্কার শুনতে সমস্যার মুখে পড়ছেন পাইলট ও এয়ার ট্টাফিক কন্ট্রোলাররা। এতে দূর্ঘটনার ঝুঁকির সৃষ্টি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দরে টার্মিনাল ভবনের উত্তর পাশেই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার। এই টাওয়ারে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা রাত দিন রেডিও’র মাধ্যমে সার্বক্ষণিক উড়োজাহাজ, হেলিকপ্টারের পাইলটদের চলাচলে নির্দেশনা দেন। বাংলাদেশের আকাশসীমায় উড়োজাহাজের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ, আবহাওয়ার তথ্য প্রদান, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উড্ডয়ন-অবতরণের অনুমতি, বিমানবন্দরের গ্রাউন্ডে চলাচল, পার্কিং এ বিষয়গুলোর ভিত্তিতে আলাদা আলাদা রেডিও চ্যানেলের মাধ্যমে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা পাইলটদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন। এদিকে পুরাতন রাডার সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গত শনিবার দুপুর ২টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার কারণে পুরোপুরি রেডিও ব্যবস্থার উপর নির্ভর করতে হয়। শুধু তাই নয়, এয়ার ট্রাফিকে জনবল সঙ্কট রয়েছে। জনবল সংকট, পুরাতন রাডার, দুর্বল রেডিও সিস্টেমের কারণে বাড়তি চাপে থাকতে হচ্ছে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।