Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কোরআনের আলোকে হাদিসে রাসূল সা.

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

হাদিস অস্বীকার করে যারা শুধু কোরআনকেই দ্বীন ইসলামের উৎস মনে করে, কোরআনের ওই সমস্ত আয়াতকেও তাদের অস্বীকার করতে হবে, যেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছে- হাদিস ও সুন্নাত দ্বীনের উৎস এবং শরীয়তের স্বতন্ত্র দলীল। যদি স্বীকার না করে তবে তা হবে কোরআন অস্বীকার করার নামান্তর।

শ্রদ্ধেয় ওস্তাদ আল্লামা ইউসুফ বান্নুরী রহ. বলেছিলেন, কোরআনের একশতেরও অধিক আয়াত এমন আছে, যেগুলোর প্রত্যেকটি হাদিসের শরয়ী দলীল হওয়ার প্রতি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। উদাহরণ স্বরূপ নিন্মে তিনটি আয়াত উল্লেখ করা হলো।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আপনার প্রতিপালকের শপথ, তারা ততক্ষণ মুমিন হবে না, যতক্ষণ না পারস্পরিক বিবাধে তারা আপনাকে মীমাংসাকারী হিসেবে মেনে নেয়। অতঃপর আপনার মীমাংসায় তাদের মনে কোনো ধরনের সঙ্কোচ না আসে এবং তা পূর্ণরূপে মেনে নেয়। (সূরা নিসা : আয়াত ৬৫)। এ আয়াতে স্পষ্ট ঘোষণা আছে যে, রাসূল সা. এর আদেশের আনুগত্য শুধু যে আবশ্যক তা নয়; বরং মুমিন হওয়ারও পূর্বশর্ত। সেই আদেশ উপদেশ ও কর্মনীতিকেই পরিভাষায় হাদিস বলা হয়।

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, ‘কোনো মুমিন নারী-পুরুষের অবকাশ নেই যে, আল্লাহ ও তার রাসূল সা. কোনো কাজের আদেশ দিলে সে কাজে প্রশ্ন করবে। আর যে আল্লাহ ও তার রাসূলের আদেশ অমান্য করে সে স্পষ্ট গোমরাহিতে নিপতিত হলো।’ (সূরা আহযাব : আয়াত ৩৬)।

এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নিজের ও তার রাসূলের আদেশ পালনকে ঈমানের জন্য অপরিহার্য ও মুসলমানের জন্য তা আবশ্যকীয় করে দিয়েছেন। আর রাসূল সা.-এর অবাধ্যতাকে খোদার অবাধ্যতার সাথে তুলনা করেছেন। সুতরাং রাসূল সা.-এর হাদিস তথা বাণী ও কর্ম যদি শরীয়তের অন্যতম দলীল না হত তবে উক্ত আয়াতে এতো কঠোর সাবধান বাণী দেয়া হতো না।

আল্লাহ তায়ালা আরও ইরশাদ করেন, ‘সেই আল্লাহ নিরক্ষর লোকদের কাছে, তাদের থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন, যেন তিনি তাদের নিকট আল্লাহর আয়াতগুলো তেলাওয়াত করেন। এতে করে যাতে তিনি তাদের পবিত্র করেন এবং কিতাব ও প্রজ্ঞার শিক্ষা দান করেন। এর এই লোকেরাই ইতিপূর্বে স্পষ্ট গোমরাহীতে পতিত ছিল। (সূরা জুমআ : আয়াত ০২)। এই আয়াতে রাসূল সা. এর চারটি দায়িত্বের উল্লেখ করা হয়। ১. কোরআন তেলাওয়াত, ২. পরিশুদ্ধকরণ, ৩. কিতাবের শিক্ষা, ৪. প্রজ্ঞার শিক্ষা দান। এখানে কিতাবের শিক্ষা বলতে কোরআনের তাফসির ও ব্যাখ্যার কথা বোঝানো হয়েছে। আর প্রজ্ঞা অর্থ হাদীস ও সুন্নাত। (ইবনে কাসির)।

সুতরাং বোঝা যায় রাসূল সা.-এর দায়িত্ব ডাক পিয়নের মতো শুধু মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছানো নয়; বরং কোরআনের তালিম এবং তাফসির তথা ব্যাখ্যার দায়িত্বও তার প্রতি ন্যস্ত হয়েছে। যারা শুধু কোরআনকেই শরীয়তের দলীল মনে করে, কোরআন তাদের তাগিদ দিচ্ছে যে, পাশাপাশি যেন হাদিস ও সুন্নাতকেও শরীয়তের দলীলরূপে স্বীকার করা হয়।



 

Show all comments
  • মাহিন আদনান ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৩:২০ এএম says : 0
    হাদিস ইসলামী শরীয়তের দ্বিতীয় অপরিহার্য প্রামাণিক মূূল ভিত্তি। যা ওহীর শ্রেণীভূক্ত। হাদিসকে ওহীয়ে 'গায়রে মাত্বল' বলা হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ জামান হোসেন জন ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৩:২০ এএম says : 0
    স্বয়ং আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন -" মা ইয়ান্ত্বিক্বু আনিল হাওয়া ইন হুয়া ইল্লা ওয়াহয়ু ইউহা"। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে থেকে কিছু বলেন নি ওহী বা ঐশী প্রত্যাদেশ ব্যতীত।
    Total Reply(0) Reply
  • মু. অহিদুল হক ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৩:২১ এএম says : 0
    আল ক্বোরআনের আদেশ নিষেধ মান্য করেই আল্লাহ্‌র আনুগত্য করতে হয়, এবং মহানবী (সা.) এর আদেশ নিষেধ ও তার অনুসৃত বিধিবিধান মান্য করেই রাসূলের আনুগত্য করতে হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • জহির আল যাবের ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৩:২১ এএম says : 0
    আল্লাহ রাব্বুল আলামীন স্বীয় বান্দাদের প্রতি অধিক দয়ালু ও ক্ষমাশীল। তিনি তার বান্দাদের যে কোন উপায়ে ক্ষমা করতে ও তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতে পছন্দ করেন।
    Total Reply(0) Reply
  • মাহদী হাসান ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৩:২২ এএম says : 0
    সূন্নাহের অনুসরণ করার কোন বিকল্প নাই। কিন্তু সূন্নাহের অনুসরণ করতে হলে, সূন্নাহ সম্পর্কে জ্ঞান থাকাও জরুরী। কোনটি সূন্নাহ আর কোনটি বিদআত তা জানা না থাকলে, উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করা যেমন কঠিন হবে তেমনি বিদআতকে সূন্নাহ আর সুন্নাহকে বিদআত বলে চালিয়ে দেয়া হবে। তখন সূন্নাহ যেমন কলুষিত হবে
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৩:২২ এএম says : 0
    ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত সবাই যে কুরআন ও হাদিস বুঝতে সক্ষম নয় সে দাবি আমি করছি না। বরং তাদের মধ্যে কতক এমনও আছেন যারা নির্ধারিত সিলেবাস পড়ার পর ইসলামী জ্ঞান-কুরআন ও হাদিস সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করেন এবং কুরআন ও হাদিস সম্পর্কে গবেষণা করে থাকেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন