Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রস্তুত ভাসানচর

রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে সেজেছে নতুন রূপে

আনোয়ারুল হক আনোয়ার, নোয়াখালী থেকে | প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

নোয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলীয় মেঘনার বুকে জেগে উঠা ভাসানচরকে নবরূপে সাজানো হয়েছে। সারি সারি ঘর, সাইক্লোন শেল্টার, অভ্যন্তরীণ সড়ক, লাইট হাউস, পানি সরবরাহ, খেলার মাঠ, পুকুর, মসজিদ, গার্ডেন, সোলার সিস্টেম ও বনায়ন দ্বীপটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এক সময়ের অখ্যাত ভাসানচর এখন বিশ্বে পরিচিত।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষে ভাসানচরকে সর্বক্ষেত্রে প্রস্তুত করা হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে অখ্যাত চরটিকে আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। ভাসানচরের নয়নাভিরাম দৃশ্য যে কোনো পর্যটককে আকৃষ্ট করতে যথেষ্ট।

হাতিয়া উপজেলায় অবস্থিত ভাসানচরের দৈর্ঘ্য ১৪ কিলোমিটার প্রস্থ ১৫ কিলোমিটার। তবে প্রতি বছর এখানে নতুন নতুন চর জাগছে। প্রাথমিকভাবে ১ লাখ রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসনের লক্ষে বিগত এক বছর দৈনিক ২০ হাজার শ্রমিক কাজ করে। এখানে ১৪৪০টি টিনশেড পাকা ঘর রয়েছে। প্রতিটি শেড এ ১৮টি কক্ষ রয়েছে। শেডের দুই পার্শ্বে রয়েছে বাথরুম ও কিচেন। প্রতি চার সদস্য বিশিষ্ট পরিবারকে ১টি করে রুম বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রতিটি রুমে আছে দোতলা বিশিষ্ট ২টি বেড।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে ঝড় জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষাকল্পে ভাসানচরের চারদিকে ১৪ কিলোমিটার উঁচু বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া জলোচ্ছ্বাসের সময় নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে নির্মিত হয়েছে ৪ তলা বিশিষ্ট ১২০টি সাইক্লোন শেল্টার। এখানে ভরাটের পর মাটি থেকে ৪ ফুট উঁচুতে তৈরি হয়েছে ১৪৪০টি টিনশেড পাকা ঘর। এছাড়া রয়েছে আরো কিছু সুযোগ-সুবিধা। ভাসানচরে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহে গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। মাত্র এক বছরের মধ্যে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বিশাল কর্মকান্ড সম্পন্ন হয়। ভাসানচরের উত্তর পার্শ্বে নৌ-চ্যানেল অতিক্রমকালে মালবাহী জাহাজ, কোস্টার ও লাইটার থেকে বাইনোকুলারে ভাসানচরের বর্তমান দৃশ্য দেখে জাহাজের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। দূর থেকে বাইনোকুলারে ভাসানচরকে লাল রংয়ে মোড়ানো দৃশ্যমান হয়।

এ প্রসঙ্গে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের এমপি আয়েশা ফেরদাউস ইনকিলাবকে জানান, ভাসানচরে শুধু ১ লাখ নয় বরং ১০ লাখ রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের পর্যাপ্ত ভূমি রয়েছে। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য সর্বাত্মক সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। তাদের কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করা হবে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি সন্তোষজনক রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর লক্ষে বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরাম ও দাতাসংস্থা বাংলাদেশের উদ্যোগকে সমর্থন দিচ্ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বন্ধুদেশ চীনের মধ্যস্থতায় আলোচনা চলছে। আলোচনা ফলপ্রসূ হলে রোহিঙ্গারা নিজে জন্মভূতিতে ফিরে যাবে। এতে করে বাংলাদেশের জন্যও স্বস্তিদায়ক হবে। এক্ষেত্রে ভাসানচরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন না হলে প্রায় ২৪শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনার বুকে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন প্রকল্পটিকে পর্যটন শিল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। যারা দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করেন তাদের কাছে ভাসানচর হবে আকর্ষণীয় স্থান। সিঙ্গাপুর কিংবা ব্যাংককের চাইতেও আকর্ষণীয় মেঘনার বুকে প্রকৃতির মাঝে গড়ে উঠেছে পর্যটন শিল্পে নতুন সংযোজন ভাসানচর।



 

Show all comments
  • আব্দুস সালাম ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩৮ এএম says : 0
    মিজি মনে রাখবেন, একদিন পুরা জাতিকে এর খেসারত দিতে হবে। আগামী ২০৩০ এর মধ্যে এদেশের জন সংখ্যা দিগুণ হতে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা হলো প্রজনন ক্ষেত্রে বিশ্বখ্যাত। এ দেশের চুরি রাহাজানী বাড়বে, বিভিন্ন সমস্যা সম্মুখীন হবে। তখন এই রোহিঙ্গা এদেশের মানুশদের সাথে যুদ্ধে জড়াবে। এদেশ হবে রোহিঙ্গাদের চারন ভুমি। আমরা ইমোশনাল জাতি
    Total Reply(0) Reply
  • SA Shahinul Islam ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩৮ এএম says : 0
    এমনিতে দেশীয় জলদস্যু বাহিনীর কারনে সাগর উত্যাল। তার উপর আবার রহিংগা এখন জ্বল স্হল আর কিছুই নিরাপদ থাকবে সোনার বাংলার।
    Total Reply(0) Reply
  • Engr Saiful Islam ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    What is the hope of getting the Nobel, Nobel's fortune is not in the middle, Bangladesh is suffering from various diseases,
    Total Reply(0) Reply
  • Golam Mostofa ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    একদিন এই রোহিঙ্গারা ঈসরাইল দের মতো স্বাধীনতা চাইবে, আর তখন এই বাংলার নাগরিক দের জীবন দিয়ে প্রতিহতো করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • শাওন চক্রবর্তী ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
    বাংলাদেশে অনেক গৃহহীন পরিবার রয়েছে তাদের জন্য জায়গার ব্যবস্হা করা উচিত। বিশেষ করে যারা সরকারি খাস জমিতে থাকে তাদেরকে উক্ত জায়গা স্বল্প মূল্যে বন্দোবস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Ariful Islam ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
    এত সুন্দর সুন্দর বাড়ি বানিয়ে দিলে মায়ানমারে কেও থাকবে না,সবাই বাংলাদেশেএ চলে আসবে,,আগে এসেছে রহিংগা মুসলিম'আর কিছু হিন্দু ভাই বোনেরা,এখন আবার বুদ্ধ'রা আসা শুরু খরেছে,,,হে আল্লাহ্‌ আমার সোনার বাংলা'কে তুমি নিজ হাতে হেফাজত কর আমিন"
    Total Reply(0) Reply
  • Md Shanto Talukdar ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
    আমি ১০০% গ্রান্টি দিয়ে বললাম যে এই ভাসানচর আর কোনোদিন ও বাংলাদেশের দখলে আসবে না। আওয়াজ তুলুন ভাসানচরে কোনোভাবেই এদের কে নিতে দেওয়া হবে না। যেখানে আছে সেখানেই থাকুক না, আর তো ৫-৬ মাসের মধ্যে তাদের কে ফেরত পাঠানোর কথা, তাহলে ভাসানচরে নেওয়া হবে কেনো?
    Total Reply(0) Reply
  • ash ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:৫৮ এএম says : 0
    ROHIGGADER AI VASHAN CHORE E ENE RAKHA WICHITH, WORLD ER ONEK DESHE E RIFUJIDER BIVINNO AREATE RAKHA HOY JENO TARA DESHER ONNO STHANE MANUSHER SHAHTE MISHE JETE NA PARE, JEMON AUSTRALIATE, RIFUJI DER BIVINNO JAYTAY JAIL ER MOTO KORE ATKE RAKHE.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ