পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া সফল হয়েছেন দাবী করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৭৮ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং ১৯৯৪ সালে খালেদা জিয়ার সরকার বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করেছিলেন। তারা পেরেছিলেন কিন্তু বর্তমান সরকার সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। দুই বছরে তারা একজনকেও ফেরত পাঠাতে পারেনি। আজকে এমন কূটনৈতিক অবস্থা যে একটা দেশও বাংলাদেশের পক্ষে নেই। চীন, ভারত, জাপান, রাশিয়া সব মিয়ানমারের পক্ষে। তাহলে বাংলাদেশের পক্ষে কে?
দুই বছর চলে গেলো কি করলেন এমন প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে নাকি বন্ধুত্ব সুউচ্চ। একইরকম সম্পর্ক চীনের সাথে। তাহলে বন্ধুরা কি করলো?
গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য ভারসাম্যহীন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেবকে মনে হচ্ছে তিনি খুব বিব্রত, কিছুটা বলা যেতে পারে ভারসাম্যহীন অবস্থা হয়ে গেছে। তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলছেন, রোহিঙ্গাদের সমস্যা নাকী আমরা (বিএনপি) তৈরি করেছি। কী বলবেন। হাসিও পায় তার কথা শুনে। আসলে ওনারা (আওয়ামী লীগ) পারছেন না, তারা ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা পেরেছিলাম। ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান সাহেবের সময় রোহিঙ্গারা এসেছিল। তখন তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যে মিয়ানমারকে বুঝিয়ে শুনিয়ে তাদের ফেরত পাঠিয়েছিলেন। কেন পেরেছিলেন? সেই শক্তি জিয়াউর রহমানের ছিল। সেই সময় জিয়াউর রহমান কক্সবাজারে একটা ক্যান্টনমেন্ট তৈরি করে ফেলেছিলেন। মিয়ানমারকে বলেছিলেন ‘আইদার ইউ গেট ব্যাক, অর ইউ ফেস’ (তুমি ফিরিয়ে নাও নতুবা মুখোমুখী হও)। বেগম খালেদা জিয়ার সময় ১৯৯২ সালে একইরকম ঘটনা ঘটেছিলো। প্রায় ২ লাখ ৪৪ হাজার রোহিঙ্গা সে সময় এসেছিল। তখন তিনি বলেছিলেন, ফেরত নেবে না অন্য ব্যবস্থা নেব। তারা ফিরিয়ে নিয়েছিল।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে এতোগুলো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসলো, কিন্তু সরকার একবারের জন্যও মিয়ানমারকে বকাবকিও করেনি। কোথাও একটা এস্টেটমেন্টও নাই, যেখানে বলা হয়েছে মিয়ানমার জেনোসাইড করেছে, মিয়ানমার এথনিক ক্লেনজিং করছে, হত্যা করছে, নির্যাতন করছে- বিবৃতির কোথাও দেখবেন না।
বার বার তাদের (মিয়ানমারকে) বলছে- ভাই নিয়ে যাও, নিয়ে যাও। কিন্তু তারা নিচ্ছে না। যে এগ্রিমেন্ট (চুক্তি) মিয়ানমারের সাথে সরকার সই করেছে সেটা করার মতো নয়। ওর মধ্যে কোন কিছুই নাই। মিয়ানমার যা বলেছে করতে হবে, এরা তাই করছে। ওদের ট্র্যাপে পড়ে গেছে সরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, রোহিঙ্গারা কি করে এতো বড় সমাবেশ করলেন তা তিনি জানেনই না।
বেগম জিয়া গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন এবং ত্যাগ স্বীকার করেছেন উল্লেখ করে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, দেশনেত্রী কখনোই গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপোষ করেননি। যদি তিনি করতে তাহলে আজকে তাকে কারাবন্দি থাকতে হতো না। তিনি সকলকে সংগঠিত হওয়ার আহŸান জানিয়ে বলেন, আমরা আজকে চারিদিক দিয়ে আক্রান্ত, চতুর্দিকে অন্ধকার, জাতিসত্ত¡া আক্রান্ত হয়েছে। এ থেকে রক্ষা পেতে হলে মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে, রুখে দাঁড়াতে হবে। মানুষকে সংগঠিত করতে হবে। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বাংলাদেশী স্বকীয়তা ধরে রাখতে হলে কাজী নজরুলের কোন বিকল্প নাই।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কবি আবদুল হাই শিকদার নজরুল সঙ্গীত শিল্পীদের অবহেলার কথা তুলে ধরে বলেন, নজরুল সঙ্গীত শিল্পীরা আজকে স্পন্সর পায় না, রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। নজরুলের ওপর পিএইচডি করার কারণে অনেকে আজকে চাকরি পাচ্ছে না। নজরুল চর্চা করলে ভারতের সার্টিফিকেট পাওয়া যায় না, সা¤্রাজ্যবাদীরা স্কলারশীপ দেবে না। কারণ আমাদের বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর প্রত্যেকটির প্রধান হলো ভারতীয়। এজন্য তারা স্পন্সর করে না। মিডিয়াগুলোও তাদের গুরুত্ব দেয় না। কারণ মিডিয়া, পত্রিকা, চ্যানেল দু’একটা বাদ দিয়ে সবগুলো ভারতের পায়ের তলায় পড়ে আছে। বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতার সঙ্গে এরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুইভাবেই জড়িত। এই রকম পরিস্থিতিতে নজরুল চর্চা করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশে ভারতের আগ্রাসনের চিত্র তুলে ধরে কবি শিকদার বলেন, ১০ লাখ ভারতীয় কোন ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই বাংলাদেশে কাজ করছে। বাংলাদেশে যতগুলো হ্যাচারি আছে সমস্ত হ্যাচারিতে বাংলাদেশী কোন চিফ নাই, সব ভারতীয়। যত বিজ্ঞাপনী সংস্থা আছে সমস্তগুলোতে প্রধান ভারতীয়। তিনি বলেন, হিন্দু এবং ভারতীয় আগ্রাসন এক না। এটা সাম্প্রদায়িক কথা না, এটা এখন আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন।
বাংলাদেশ ভুটানের চেয়েও নিচে নেমে গেছে মন্তব্য করে আবদুল হাই বলেন, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী এখনো বলেনি ভারত-কাশ্মির ইস্যুতে তাদের ভূমিকা কি হবে। আর আমাদের দেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ভারত-কাশ্মির ইস্যুতে বাংলাদেশ ভারতের পাশে থাকবে। অথচ অমর্ত্য সেন বলছে, সেখানে গণতন্ত্র, মানবতা সমস্ত কিছু ধ্বংস করা হয়েছে। ভারতীয় হিসেবে আমি গর্ববোধ করি না। অরুন্ধতী রায়রা মানুষ। সেই মানুষদের সাথে আমাদের সম্পর্ক করতে হবে।
জাসাসের সভাপতি ড. মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক নায়ক হেলাল খান, বিশিষ্ট নজরুল গবেষক নাসিম আহমেদ, রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী প্রমূখ। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।