Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অরুণ জেটলির জীবনাবসান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

মারা গেলেন ভারতের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি। শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে গত ৯ আগস্ট দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সেখানে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাকে। সেই অবস্থাতেই গতকাল শনিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে ৬৬ বছর বয়স হয়েছিল তার।

দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন অরুণ জেটলি। অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন গতবছর কিডনি প্রতিস্থাপনও হয় তার। যে কারণে ফেব্রæয়ারি মাসে অন্তর্র্বতী বাজেটের সময় সংসদে উপস্থিত থাকতে পারেননি। শারীরিক অসুস্থতার জেরে মে মাসেও এক বার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেই থেকে সক্রিয় রাজনীতিতে সে ভাবে আর দেখা যায়নি তাকে।

এ বছর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরলেও, মন্ত্রিত্ব নিতে রাজি হননি জেটলি। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ তিনি। চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাই এ বার নিজের জন্য একটু সময় চান। নতুন সরকারে তাকে কোনও দায়িত্ব না দিলেই ভাল। তবে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে গেলেও, সোশ্যাল মিডিয়ায় বরাবরই সক্রিয় ছিলেন তিনি।

এর আগে, গত ৬ আগস্ট জীবনাবসান হয় বিজেপির আরেক শীর্ষস্থানীয় নেত্রী ও প্রাক্তন পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজের। তার পরই এই প্রবীণ নেতার প্রয়াণে শোকের ছায়া ভারতের রাজনৈতিক মহলে। অরুণ জেটলির প্রয়াণে ইতিমধ্যেই শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘অরুণ জেটলির প্রয়াণে শোকাহত আমি। দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করছিলেন। এক জন বুদ্ধিদীপ্ত আইনজীবী এবং অভিজ্ঞ সাংসদ ছিলেন উনি। দেশে গঠনে উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা ছিল তার।’ দেশের বাইরে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটে লেখেন, ‘অরুণ জেটলির প্রয়াণে এক জন বন্ধু হারালাম আমি। তাকে জানার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। তার মতো দূরদর্শিতা এবং উপলব্ধি খুব কম জনের রয়েছে। বহু সুখস্মৃতি রেখে গেলেন। আমরা তার অভাব অনুভব করব।’

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে লেখেন, ‘অরুণ জেটলিজির প্রয়াণে মর্মাহত আমি। অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছেন উনি। এক জন অসাধারণ সাংসদ এবং বুদ্ধিদীপ্ত আইনজীবী ছিলেন। সব রাজনৈতিক দল তাকে শ্রদ্ধা করত। ভারতীয় রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন উনি। তার স্ত্রী, সন্তান, বন্ধু এবং সমর্থকদের সমবেদনা জানাই।’

১৯৭৭ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাশ করেন অরুণ জেটলি। দীর্ঘদিন সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিসও করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলিতেই অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) নেতা নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময় দীর্ঘ ১৯ মাস জেলবন্দি ছিলেন। সেইসময়ই জয়প্রকাশ নারায়ণের সংস্পর্শে আসেন। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জনসংঘে যোগদান করেন। বিজেপিতে যোগ দেন ১৯৯১ সালে। দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে অটলবিহারী সরকারের প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন। পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাতেও জায়গা করে নেন। তবে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর, তার সরকারের অন্যতম কারিগর হয়ে ওঠেন অরুণ জেটলি। প্রথম দফায় মোদি সরকারের অর্থ এবং প্রতিরক্ষা, দুই বিভাগই সামলান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ