বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
দাঁত আল্লাহপাকের এক বিশাল অনুগ্রহ এবং মানব দেহের অত্যাবশ্যক অঙ্গ। আর এটাই মুখমন্ডলের সৌন্দর্যের নিশ্চয়তা দানকারী। দাঁত খাদ্যকে গুড়ো করে পাতলা করে দেয়। তারপর এই খাদ্য মুখের লালার সাথে মিশ্রিত হয়ে পেটে চলে যায় এবং অতি সহজে পরিপাক হয়ে উঠে। দাঁত পরিষ্কার না থাকাতে দাঁতে ও দাঁতের মাড়িতে নানানধরনের রোগ দেখা দেয়। তথাপি চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে পাকস্থলী নষ্ট হয়ে যায় এবং খাদ্য ভালোভাবে পরিপাক লাভ করতে পারে না।
এমনিভাবে দেহ ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে, পরে বিভিন্ন ব্যাধির শিকার হতে হয়। এই জন্যই বর্তমান বিশ্বে আমেরিকা ও অন্যান্য উন্নত দেশ দন্ত চিকিৎসার গবেষণায় উন্নত পর্যায়ে রয়েছে। এসব দেশে রেডিও টেলিভিশনের মত প্রচার মাধ্যমগুলোতে দাঁত যত্মের বিভিন্ন উপায় নিয়ে অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। দাঁত ও দাঁতের মাড়ির নিরাপত্তা, পরিচ্ছন্নতা, শল্যচিকিৎসা এবং অন্যান্য খাতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে থাকে এসব দেশ।
যেমন ব্রিটেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১৯৫৭ সালের এক রিপোর্ট মতে জানা যায় তাদের দেশে দাঁত ও মাড়ির চিকিৎসার ওপর ৫৮ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ড ব্যয় হয়েছে। আর ১৯ আগস্ট ১৯৬০ ইংরেজীতে এক সংবাদে প্রচার করা হয়েছে। আরব দেশসমূহে ছাত্রদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ২৮ হাজার ডলারের টুথব্রাশ এবং মাজন বাজেট করা হয়েছে।
কিন্তু বিশ্বনবী সা. মিসওয়াকের শিক্ষার দ্বারা দাঁতের উজ্জ্বলতা রক্ষণের যে সহজ-সরল পথ বাতলে দিয়েছেন, তা বর্তমানেও একই প্রভাব রেখে যাচ্ছে, যেমনটা ইতোপূর্বে রেখেছিল। এক পবিত্র বাণীতে রাসূল সা. বলেন, যদি আমার উম্মতের জন্য কষ্টদায়ক হবে বলে আমি মনে না করতাম, তবে প্রত্যেক নামাজের সময় মিসওয়াক তাদের ওপর আবশ্যক করে দিতাম। (সহীহ মুসলিম : ১/১২৮)।
অন্য একটি হাদীসে মিসওয়াকের অনেক উপকারিতা বর্ণনা করা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ: মিসওয়াক করার দ্বারা মুখগহ্বা পরিষ্কার হয়। দাঁতের মাড়ি শক্ত হয়, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। পাকস্থলী ঠিক থাকে, ফেরেশতারা খুশি হয়, আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হয় এবং আমলনামায় সওয়াব বাড়তে থাকে। (কাঞ্জুল উম্মাহ : ৯/৩১৪)।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে অনেক লোক এখন টুথব্রাশ ব্যবহার করে। অথচ চিকিৎসকদের মতে এগুলো অনেক ক্ষতিকর। একটি ব্রাশ বারবার ব্যবহার করার দ্বারা বিষাক্ত জিবাণু সৃষ্টি হয়। কারণ ব্রাশ ক্ষয় হয় না; কিন্তু মিসওয়াক যতবার ব্যবহার করবে, ততবার ক্ষয়প্রাপ্ত হবে। এমনকি ব্রাশের পশম শক্ত হওয়ায় বারবার ব্যবহার করায় জিহ্বায় ও মাড়িতে ক্ষত দেখা দেয়া স্বাভাবিক।
এই আশঙ্কাটি মিসওয়াকের মধ্যে নেই, কারণ তার আঁশগুলো নরম ও কোমল হয়। আর মিসওয়াকের পশম অতি কোমল ও পাতলা হওয়ায় এবং ব্রাশের পশম একটু মোটা হওয়ায় মিসওয়াক দ্বারা যত সহজে দাঁতের ময়লা-মরিচা পরিষ্কার করা সম্ভব, ব্রাশের দ্বারা তা সম্ভব নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।