Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চরভদ্রাসনে শিক্ষিকার শ্লীলতাহানি ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা ৭৫ হাজার টাকায় ধামাচাপা

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৯, ৫:৪০ পিএম

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার চরহরিরামপুর ইউনিয়নের পশ্চিম চরসালেপুর গ্রামের আনন্দ স্কুলের এক শিক্ষিকা (৩৫) স্থানীয় তিন বখাটে দ্বারা শ্লিলতাহানী ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর গ্রাম্য মাতুব্বররা সালিশ বৈঠকে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করে ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। গত ১৬ আগষ্ট সন্ধ্যার পর শিক্ষিকা বাড়ীর সামনে ছোট্ট খাল পার হয়ে পিতৃালয়ে যাওয়ার পথে ফাঁকা মাঠে মাদকাসক্ত তিন বখাটে তাকে শ্লিলতাহানীর পর ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে শারীরিক নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মাদকাসক্ত উক্ত তিন বখাটে হলো- একই গ্রামের আনিছ ফকিরের ছেলে সোহেল ফকির (২৪), মৃত হাসেম ফকিরের ছেলে শাহীন ফকির (২৫) ও শেখ সাদেকের ছেলে শেখ জাকির হোসেন (২৮)।

বখাটেরা ফাঁকা মাঠে শিক্ষিকাকে একা পেয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে শিক্ষিকা চোটে ওঠেন। পরক্ষনে কুপ্রবৃত্তি চরিতার্থ করার জন্য তিন বখাটে মিলে শিক্ষিকার সাথে ধ্বস্তা ধ্বস্তি শুরু করে। এ সময় শিক্ষিকার সৌর চিৎকারে তার স্বামী ছুটে এলে বখাটেরা তার স্বামীকেও মারধর করে ছেড়ে দেয়। নির্যাতিত শিক্ষিকা ওইরাতে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ীতে গিয়ে ঘটনা খুলে বলেন এবং তার কাছে সুবিচার দাবী করেন।

গত শনিবার ওই দুর্গম পদ্মার চরে সরেজমিনে গেলে চরহরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চয়োরম্যান মো. আমীর খান বলেন, “উক্ত শিক্ষিকার পরনের সালোয়ার কামিজ ছিড়া ফাটা সহ বিমর্ষ অবস্থায় আমার কাছে এসেছিল। ওই তিন বখাটে আগে পরে একই রকম আরো কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছে। দুর্বৃত্ত জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ থানায় মামলাও রয়েছে। ঘটনার পর দুর্বৃত্তরা উধাও রয়েছে। তাদের অভিভাবকরা আপোষ-মিমাংষার জন্য আমার কাছে এসেছিল কিন্ত আমি পাত্তা দেয় নাই। পরে তেলী ডাঙ্গী গ্রামের উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ীতে বসে সালিশ বৈঠকে তিন দুর্বৃত্তর বিরুদ্ধে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করে ঘটনা দামাচাপা দেওয়া হয়েছে”।

একই দিন নির্যাতিতা শিক্ষিকার বাড়ীতে গেলে তিনি জানান, “ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামে তিনি বসবাস করেন। ঘটনার দিন সন্ধার পর পর্শ্ববতী পিতৃালয়ের উদ্দেশ্যে তিনি রওয়ানা হন। শিক্ষিকার কিছুদুর পিছে পিছে তার স্বামীও আসতে ছিল। ফাঁকা মাঠের মধ্যে মাদকাসক্ত তিন বখাটে তাকে একা পেয়ে প্রথমে টাকা দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে শিক্ষিকা চোটে ওঠলে দুই বখাটে তার দুইহাত ধরে রাখে এবং আরেকজন তার শ্লিলতাহানী ঘটায়। এ সময় শিক্ষিকা সৌর চিৎকার করলে তার স্বামী ছুটে এসে বাঁধা দেয়। পরে বখাটেরা শিক্ষিকা দম্পত্তিতে মারধর ককরে চলে যায়। তিনি আরও জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান সম্পর্কে তার মামা হন। তার বাড়ীতে বসেই ঘটনার আপোষ মিমাংষা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতুব্বররা ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করলেও তিনি হাতে পেয়েছেন ৬০ হাজার টাকা”। এ ব্যপারে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা বলেন, “ পক্ষদ্বয় আপোষ মিমাংষা হয়েই আমার বাড়ীতে বসেছিল জরিমানার টাকা লেনদেন করার জন্য। এরচেয়ে বেশী কিছু আমি জানিনা”।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ