রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যেই প্রশাসনের নাকের ডগায় সরকারি খাস জমির জবর দখলের মহোৎসব চলছে। প্রভাবশালীরা জবরদখল করে নিচ্ছে সরকারি পুকুর, বাজার ও রেলের কোটি কোটি টাকার জমি। সরেজমিন দেখা যায়, শ্রীপুর পৌর এলাকার ভাংনাহাটি গ্রামে প্রায় ২৫ কোটি টাকা মূল্যের ৩ একর ৫৮ শতাংশ সরকারি খাস পুকুরটি প্রভাবশালীরা প্রকাশ্যেই জবরদখল করে নিয়ে স্থায়ী ভাবে রড-সিমেন্টের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ৪৩নং শ্রীপুর মৌজার সিএস, এসএ ও আরএস রেকর্ড অনুযায়ী দেখা যায়, পুকুরটি সরকারি খাস। পর্চা অনুযায়ী কোর্ট অব ওয়ার্ডস এস্টেটের ৪নং খতিয়ানভুক্ত ১৭৫৫/২২০৫ দাগে ৩ একর ৫৭ শতাংশ জমি যার মধ্যে এসএ রেকর্ডে কিশোরী মোহন পোদ্দারের নামে ১২৮নং খতিয়ানে ৪৮ শতাংশ রেকর্ডভুক্ত হয়। বাকি ৩.০৯ একর সম্পত্তি সরকারি খাস পুকুর হিসেবে প্রতিবছরেই সরকারিভাবে লিজ দিয়ে রাজস্ব আদায় হতো। স্থানীয় একটি জালিয়াত চক্র জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বানোয়াট পর্চা দিয়ে ১২৮ খতিয়ানভুক্ত ১৭৫৫/২২০৫নং দাগে ৪৮ শতাংশ জমির স্থলে টেম্পারিং করে ৩.৪৮ শতাংশ বানিয়ে ওই সরকারি খাস পুকুরটি জবরদখল শুরু করে। সম্প্রতি গ্রিন ভিউ রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ ওই সরকারি খাস পুকুরের চারপাশে তড়িঘড়ি করে পাকা সীমানা দেয়াল নির্মাণ করেছে। ভিন্ন দাগ খতিয়ানের কথিত জমির কাগজ দেখিয়ে একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি খাস পুকুরটি জবরদখল করে নিয়ে অন্য দাগ খতিয়ান উল্লেখ করে সাইনবোর্ড সেঁটে দেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি চিহ্নিত দালালচক্র স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাতারাতি সরকারি খাস পুকুরটি জবরদখল করে নেয়। এছাড়া উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ১২৮ শতাংশ জমির মধ্যে ইতোমধ্যেই প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের ৭৫ ভাগ জমি সরকারি দলের প্রভাব খাটিয়ে জবরদখল করে নিয়ে গেছে। জবরদখলকারীরা জমিদার কালী নারায়ণ গুপ্তের কাচারি বাড়ি তথা বর্তমান কাওরাইদ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের আশপাশে জবরদখল করে গড়ে তুলছে দোকানপাট, স্যানেটারি নির্মাণ কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অবৈধ স্থাপনা। প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যেই রাতদিন চলছে সরকারি অফিস প্রাঙ্গনের জমি জবরদখল। এ ব্যাপারে কাওরাইদ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ জানান, তিনি অনেকটাই জবর দখলকারীদের কাছে অসহায়। বাধা দিলে বা প্রতিবাদ করলে শারীরিকভাবে নির্যাতিত হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জবর দখলকারীদের তালিকা প্রেরণ করেছেন। শ্রীপুর পৌর শহরের পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের মূল গেইটের সামনেই প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি খাস জমি সরকারি দলের ছত্র ছায়ায় জবরদখল করে নিয়ে গেছে। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ওই জমিতে রাতারাতি সীমানা দেয়াল নির্মাণ করেন। শ্রীপুর পৌর ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা আলী হোসেন জানান, ওই স্থানে খাস জমি আছে, যা পৌরসভার নিয়ন্ত্রণাধীন, আমাদের কিছু করার নেই। এদিকে ভাওয়াল গাজীপুর রেলস্টেশন থেকে কাওরাইদ পর্যন্ত ৬টি রেলস্টেশন ও রেল লাইনের দু’ধারে প্রায় ২০০ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি রেলওয়ের জমি জবরদখল হয়ে গেছে। দখলকারীরা রেলওয়ের কতিপয় ভূমি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ওই সমস্ত রেলওয়ের জমিতে রাতারাতি গড়ে তুলছে স্থায়ী-অস্থায়ী বসতবাড়ি, দোকানপাটসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারেও সেটেলমেন্ট রেকর্ডভুক্ত বিভিন্ন জায়গা সরকারি দলের ছত্রছায়ায় দখল হয়ে যাচ্ছে। প্রকাশ্যেই সরকারের শত শত কোটি টাকার সম্পত্তি জবরদখল হয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ভূমিকা দুঃখজনক। সরকারি জমি জবরদখল হওয়ার বিষয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় স্থানীয় সাংবাদিকরা খাস পুকুরসহ বিভিন্ন সরকারি সম্পত্তি জবরদখল হওয়ার বিষয় উত্থাপন করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আইনশৃংখলা কমিটির সভাপতি বনানী বিশ্বাস বলেন, এগুলো আইনশৃঙ্খলার বিষয় নয়, তার পরেও খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তাক্ষণিকভাবে আশ্বাস প্রদান করেন। শ্রীপুরবাসী জবরদখল হওয়া জমি উদ্ধারে সরকারের সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।