Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমার বাবাকে হত্যা করল কারা

পেহলু খানের ছেলের প্রশ্ন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

রাজস্থানের আলওয়ার জেলার জাতীয় মহাসড়কের পাশে বড় ছেলে ইরশাদ খানের (২৮) চোখের সামনেই গো-রক্ষকদের নির্মম গণপিটুনির শিকার হন পেহলু খান। ২০১৭ সালের ১ এপ্রিলের এই ঘটনার দু’দিন পরে, আঘাতের কাছে পরাস্ত হয়ে হাসপাতালে মারা গিয়েছিলেন তিনি। দু’বছর পরে, ইরশাদ আবারও অসহায় দর্শকের গণপিটুনির মামলায় অভিযুক্ত ছয়জনকে মুক্তি পেতে দেখেন। পুলিশের তদন্তে ‘গুরুতর ত্রæটি’ থাকার কারণে রাজস্থানের জেলা আদালত তাদের মামরা থেকে খালাস দেয়।
আদালতের শুনানির ফলাফল শুনে তার পরিবার হতাশ হয়েছে জানিয়ে তিনি জিজ্ঞাসা করেন, ‘তাহলে তখন কারা আমার বাবাকে হত্যা করেছিল?’ ইরশাদ বলেন যে, গরু পাচারকারী বলে অভিযোগ করে ৫৫ বছর বয়সী পেহলুর উপর হামলার কথা মনে পড়লে তিনি এখনও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
আলওয়ার সীমান্তবর্তী নুহ (মেওয়াত) জেলার গুড়গাঁও থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে জয়সিংপুরে তার বাড়িতে একটি খাটে বসে ইরশাদ স্মৃতিচারণ করেন, জয়পুর থেকে নুহতে গরু আনার সময় বহরতে যখন প্রায় ১০০ জন লোক তাদের (পেহলু ও তার পুত্র ইরশাদ ও আরিফ) ঘিরে ফেলেছিল। তিনি বলেন, তারা পেহলুর উপর চড়াও হয়েছিল, পেহলু তাদের কাছে মিনতি করে বলেছিল যে, পশুগুলো জবাই করার জন্য নয়। কিন্তু তবুও তারা নির্যাতন করে এবং ভিডিও করেছে, যা পরে ভাইরাল হয়েছিল।
ইরশাদ বলেন, ‘আমি নিশ্চিত ছিলাম প্রত্যেকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড না হলেও কমপক্ষে ২০ বছর জেল হবে। তবে এই রায়টি পুরোপুরি আমাদের হৃদয় কাঁপিয়ে দিয়েছে। আমি দেখেছি যে, আমার বাবাকে এই লোকেরাই হত্যা করেছিল। একদিন আগে তারাই খালাস পেয়ে গেল। এর মধ্যে একজন স্টিং অপারেশনের আগে নিজেই স্বীকার করেছিলেন যে, তিনি আমার বাবাকে হত্যা করেছেন। পুলিশ প্রমাণ পেল না কেন? আমার বাবা কি নিজে মারা গেলেন? সে কি নিজেই নিজেকে হত্যা করেছে? অন্তত বলুন, আমার বাবাকে কারা হত্যা করেছে?’
তবে ইরশাদ ও তার ছোট সাত ভাইবোন বলেছেন যে তারা ‘বিচার বিভাগের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস’ রেখে চলেছে। তার বোন হুনিজা (১৩) জানান, পুলিশের কাছে জবাব দেওয়ার মতো অনেক কিছুই আছে এবং তাদের জবাবদিহি করা উচিত। তিনি বলেন, “২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, আমার বাবা তার মৃত্যুর শয্যায় যে ছয়জনের নাম বলেছিলেন তারা মুক্তি পেয়ে গিয়েছিল। এবং এখন আরও ছয়জনকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে কেউই আমাদের কথা শুনছে না।’
পেহলুর পরিবার আইনী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর, তবে এর ব্যয় তাদের জন্য বহন করা খুবই কঠিন। ইরশাদ বলেন, ‘আমার বাবা মারা যাওয়ার পরে আমরা কঠিন সময়ে পড়েছি। এখন আমি পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য। কিন্তু আমার আয়ের বেশিরভাগ অংশ ন্যায়বিচারের জন্য লড়াইয়ে ব্যয় করছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘তবে আমি এই মামলাটিকে উপেক্ষা করতে পারি না। আমি এই মামলাটি চালিয়ে যাব, যত কষ্টই হোক। আমি যখন আদালতের আদেশের অনুলিপি পাব তখনই আমি জয়পুরের উচ্চ আদালতে যাব।’ সূত্র : টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ