পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঈদুল আজহা সামনে রেখে বেড়েছে সব ধরনের মসলার দাম। কেজিতে এক হাজার টাকা বেড়ে এলাচ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকায়। ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে জিরা, দারুচিনি, গোলমরিচের দামও। এই ঈদে বাড়তি চাহিদা থাকা লবণেরও পর্যাপ্ত মজুদ আছে বলে জানিয়েছেন মিল মালিকরা। দামও নাগালের মধ্যে। তবে তাদের আশঙ্কা, ঈদের একদিন বা দুই দিন আগে লবণের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করা হতে পারে।
সাধারণত কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা বেশি থাকে। এ সুযোগ কাজে লাগান কিছু অসৎ ব্যবসায়ী। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ঈদ সামনে রেখে মসলার দাম বেড়েছে। পাইকারিতে দাম বাড়ানোর প্রভাব খুচরায় পড়েছে, বলছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তবে পাইকাররা বলছেন, মসলা আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে জানা গেছে, কোরবানির ঈদে বেশি চাহিদার তিনটি মসলা এলাচ, দারুচিনি ও জিরা। যার সবগুলোর দামই বেড়েছে। মাসখানেক আগে যে এলাচ প্রতি কেজি বিক্রি হতো ১,৮০০ থেকে ২,২০০ টাকা, আজ একই এলাচ বিক্রি হচ্ছে ২,৬০০ থেকে তিন হাজার টাকায়। এ ছাড়া দারুচিনি কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা।
মানভেদে জিরা কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে জিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। কিশমিশ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গোলমরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা। বর্তমানে কালো গোলমরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা আর সাদা গোলমরিচ বিক্রি হচ্ছে ১,২০০ থেকে ১,৪০০ টাকা। মানভেদে প্রতি কেজি জয়ফল ১,০০০ থেকে ১,২০০ টাকা, জয়ত্রী ২,০০০, লবঙ্গ ৮৫০, কাঠবাদাম ৮৫০, তেজপাতা ১৫০ টাকা থেকে ১৮০, পেস্তাবাদাম ২০০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মতিঝিলের মসলা বিক্রতা আরিফ জানান, কয়েক সপ্তাহে ধরে মসলার দাম বাড়ছে। ঈদের আগে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পাইকাররা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। কেনা বেশি হওয়ায় দাম বাড়তি রাখতে হচ্ছে।
এদিকে পাইকারি বাজারের প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি জিরা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, দারুচিনি ৩০০ থেকে ৩৫০, এলাচি ১,৪০০ থেকে ১,৭০০, তেজপাতা ১৫০ থেকে ১৮০, সাদা গোলমরিচ ১,০০০, কালো গোলমরিচ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মসলার দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ঈদুল আজহা তথা কোরবানির ঈদের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ানোর কারণে খুচরা বাজারে দাম বাড়াতে হচ্ছে। গত মাসে এলাচ বিক্রি করেছি ২,২০০ টাকা। এখন পাইকারি দাম ২,৩০০ থেকে ২,৪০০ টাকার ওপর। আমরা বিক্রি করব কত টাকা? দোকান ভাড়া মাল আনায় খরচ রয়েছে।
পুরান ঢাকার পাইকারি মসলা বাজারের সিজান অ্যান্ড ব্রাদার্সের বিক্রেতা জানান, মাসখানেক আগে কিছুটা দাম বেড়েছিল। তবে গত এক দুই সপ্তাহে মসলার দাম বাড়েনি, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। মতিঝিলে মসলা কিনতে আসা সোহেল নামের এক ক্রেতা জানান, প্রতি ঈদে মসলার দাম বাড়ায়, এবারও বাড়িয়েছে। এটি দেখার কেউ নেই।
দাম নিয়ন্ত্রণে মসলার বাজারে অভিযান চালাচ্ছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এ বিষয়ে অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মÐল বলেন, দাম নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর পুরান ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি মসলার বাজারে অভিযান চালানো হচ্ছে। অযৌক্তিক দাম না বাড়াতে সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে কাঁচা লবণের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নূরুল কবির বলেন, বর্তমানে দামও আগের তুলনায় কম রয়েছে। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের সময় লবণের সঙ্কট তৈরি হবে না।
কবির বলেন, চলতি সপ্তাহেও লবণের দাম কমেছে। গত সপ্তাহে ৭৫ কেজি ওজনের লবণের বস্তা ৬৩০ থেকে ৬৭০ টাকায় বিক্রি হতো। এ সপ্তাহে এর দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৬০০ থেকে ৬৩০ টাকা।
তিনি জানান, কোরবানির সময় দেশে এক লাখ টনের মতো লবণের প্রয়োজন হয়। সব মিল-কারখানায় পর্যাপ্ত পরিমাণ লবণ মজুদ রয়েছে। এদিকে, বাংলাদেশ টেনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ইলয়াছুর রহমান বাবুল বলেন, পর্যাপ্ত লবণ মজুদ আছে।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতা টিপু সুলতান বলেন, ঈদের একদিন বা দুই দিন আগে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করা না হলে দাম বাড়বে না। তবে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি হলে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, দেশে দুই ধরনের লবণ পাওয়া যায়। দেশীয় এবং ইন্ডিয়ান। সবার প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে আপনারা দেশি লবণ ব্যবহার করুন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।