বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুমিল্লায় কোরবানির গরুর চামড়ার কম দর নিয়ে গত ৪/৫ বছর ধরে হযবরল অবস্থা চলতে থাকায় প্রান্তিক পর্যায়ের খুচরা বা মৌসুমী ব্যবসায়িরা সীমান্তের এপার-ওপার সিন্ডিকেটের হাতে চামড়া পৌঁছে দেয়। এবছরও পাচারের আশঙ্কা করছেন এখানকার পাইকারি ব্যবসায়িরা। কেননা এবারেও ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম গত বছরের দর অনুযায়ি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা রাখা হয়েছে। ফলে পাচারচক্রের এপার-ওপার সিন্ডিকেট বেশি দামে চামড়া কিনতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
কুমিল্লা জেলায় পশুর চামড়া বেচাকেনার অন্যতম এলাকা নগরীর গাংচরের ঋষিপট্টি ও লাকসাম উপজেলার দৌলতগঞ্জ বাজার। সারা বছরই ঋষিপট্টি ও দৌলতগঞ্জের ছোটবড় আড়তে গরুর চামড়া কেনা ও সংরক্ষণের কাজ চলে। তবে ঈদুল আজহা (কোরবানীর ঈদ) ঘনিয়ে এলে স্থানীয় পাইকারী ব্যবসায়িরা বেশ নড়েচড়ে ওঠেন। ঋষিপট্টি ও লাকসাম ছাড়াও বুড়িচংয়ের ময়নামতি বাজার, বুড়িচং বাজার, সদর দক্ষিণের সুয়াগঞ্জ, চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার, চৌদ্দগ্রাম বাজার, হোমনা, ইলিয়টগঞ্জ ও দাউদকান্দিতে চামড়া বেচাকেনার ব্যবস্থাস্থল গড়ে উঠেছে। সরকারিভাবে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম গত বছরের দরে এবারেও রাজধানীর বাইরে অনেক কম বলে মন্তব্য করেছেন কুমিল্লার ছোট-বড় পাইকাররা। এধরণের দরে পাচারকারি সিন্ডিকেট খুশি কিন্তু প্রকৃত ব্যবসায়িরা হতাশ। এখানকার চামড়া ব্যবসায়িরা মনে করছেন ভারতের ট্যানারিগুলোতে চামড়া সঙ্কট থাকায় এবারও কুমিল্লা থেকে কোরবানির চামড়ার একটি বড় অংশ পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
কুমিল্লা ঋষিপট্টির চামড়া ব্যবসায়িরা জানান, গত ৩/৪ বছর ধরে ভারতের ট্যানারিগুলোতে কাঁচা চামড়া সঙ্কট চলছে। এখানকার বাজারের চেয়ে ভারতে চামড়ার দাম বেশি।
এবার সরকারিভাবে গরু-ছাগলের চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে তা ভারতের বাজারের চেয়ে অনেক কম। আর একারণে কোরবানির ঈদে সংগৃহীত বিপুল পরিমান গরুর চামড়ার একটি অংশ ভারতে পাচার হয়ে থাকে। মৌসুমী ব্যবসায়িদের একটি বড় অংশ চামড়া পাচার সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। এখানে চামড়ার দাম কমে গেলে তারা পাচারের উদ্দেশ্যে সিন্ডিকেটে চামড়া মজুদ করে। কুমিল্লার পাইকারি ব্যবসায়ীরা আরও জানান, চামড়ায় লবণ দেয়ার পর প্রায় ৩ থেকে ৪ মাস সংরক্ষণ করা যায়। সীমান্ত এলাকার সিন্ডিকেটধারিরা সংরক্ষণ করা চামড়া আস্তে ধীরে ভারতে পাচার করে থাকে। তাই চামড়া পাচার রোধে ঈদের দিন থেকে পরবর্তী ৩/৪ মাস আইন শৃংখলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি রাখার দাবী জানিয়েছেন কুমিল্লার পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
এদিকে কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম গত সোমবার তার কার্যালয়ে জেলার চামড়া ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন। ওই সভায় পুলিশ সুপার বলেছেন, কোন অবস্থাতেই কোরবানির পশুর চামড়া দেশের বাইরে কোথাও পাচার হতে দেয়া যাবেনা। পশুর চামড়া পাচাররোধে ঈদের দিন থেকে জেলা পুলিশের একাধিক টিম টহল ও কঠোর নজরদারীতে থাকবে। এখানকার চামড়া ব্যবসায়িদের সাথে পুলিশের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকবে। কেবল চামড়া পাচার রোধই নয়, চামড়া কেনা বেচায় যাতে সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশ বজায় থাকে এজন্য জেলা পুলিশ কাজ করে যাবে। চামড়া পাচারের সাথে যারাই জড়িত থাকবে তাদের ছাড় নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।