পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভাড়া দিতে না পারায় বরিশালের বানারীপাড়ায় এক কিশোরী যাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে তিন লেগুনা চালক। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ঝাঁড় ফুঁক ও পড়া পানি দেয়র কথা বলে আট বছরের এক অসুস্থ শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ ঘটনা ধামাচাপা ও হাসপাতাল থেকে ধর্ষিতা শিশুটিকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে আরো পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদিকে ঝিনাইদহে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে এক কিশোরকে।
বরিশাল: বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় ভাড়া দিতে না পারায় এক কিশোরী যাত্রীকে (১৫) আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয় জনতা লেগুনার এক চালককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আটক লেগুনা চালক রাজ্জাক বানারীপাড়া উপজেলার ইলুহার ইউনিয়নের মলুহার গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে। নির্যাতনের শিকার কিশোরী পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার গাঁওখালী গ্রামের নৌকায় সবজি বিক্রি করে।
স্থানীয়রা জানান, আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সারহাট এলাকায় খালার বাড়ি বেড়ানো শেষে গত মঙ্গলবার বিকেলে নাজিরপুর উপজেলার গাঁওখালী গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয় ওই কিশোরী। ওই দিন সন্ধ্যায় পয়সারহাট থেকে ট্রলারে বিশারকান্দি আসে সে। এরপর তার কাছে গাড়ি ভাড়া না থাকায় বিশারকান্দি লেগুনাস্ট্যান্ডে চালক রাজ্জাককে মামা ডেকে ভাড়া না থাকার বিষয়টি জানায় কিশোরী। রাজ্জাক বিনা ভাড়ায় কিশোরীকে বৈঠাঘাটা তালুকদার উলা খেয়াঘাটে নামিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গাড়িতে তোলে। কিন্তু কিশোরীকে গন্তব্যে না নামিয়ে বানারীপাড়ার ইলুহার ইউনিয়নের জনতা বাজার সংলগ্ন চাচাতো ভাই রশিদের বাড়ির পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায় রাজ্জাক। সেখানে আটকে রেখে কিশোরীকে ধর্ষণ করে সে।
রাত ১০টার দিকে জনতা বাজার থেকে অন্য লেগুনার চালক মাসুমের গাড়িতে কিশোরীকে তুলে দেয় রাজ্জাক। মাসুম ওই কিশোরীকে বৈঠাঘাটা তালুকদার উলা খেয়াঘাটে না নামিয়ে বিশারকান্দি লেগুনাস্ট্যান্ডের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে আরেক সহযোগী নিয়ে রাতভর কিশোরীকে ধর্ষণ করে। গতকাল বুধবার ভোরে বৈঠাঘাটা তালুকদার উলা খেয়াঘাটে গাড়ি থেকে কিশোরীকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায় মাসুম। এ সময় খেয়াঘাটে কিশোরীকে কাঁদতে দেখে স্থানীয় লোকজন কারণ জানতে চায়। পরে ঘটনার বর্ণনা দেয় কিশোরী।
পরে লেগুনাস্ট্যান্ড থেকে ধর্ষক রাজ্জাককে আটক করে স্থানীয়রা। এরপর বানারীপাড়া থানা পুলিশের ওসিকে বিষয়টি জানানো হয়। ওসি জানতে পেরে লবণসাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) সুজিত কুমার বিশ্বাসকে ঘটনাস্থলে পাঠান। তিনি গিয়ে ধর্ষক রাজ্জাক ও কিশোরীকে থানায় নিয়ে যান।
পুলিশ জানায়, আটকের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে লেগুনা চালক রাজ্জাক ওই কিশোরীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। তাকে আটক করা হয়েছে।
বানারীপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ধর্ষক রাজ্জাককে আটক করা হয়েছে। অপর দুই ধর্ষককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ঝাঁড় ফুঁক ও পড়া পানি দেবার কথা বলে আট বছরের এক অসুস্থ শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মসজিদের ইমামকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গত শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার চাঁদমারি এলাকায় এক মসজিদের ইমামের ব্যক্তিগত কক্ষে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে গতকাল বুধবার সকাল পর্যন্ত ফতুল্লার চাঁদমারি ও ইসদাইরসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ধর্ষক ফজলুর রহমানসহ ছয়জনকে আটক করে র্যাব। আটককৃত অপর পাঁচজন হলেন মসজিদটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি শরীফ হোসেন, ইমামের সহযোগী রমজান আলী, গিয়াস উদ্দিন, হাবিব এ এলাহি এবং মোতাহার হোসেন।
গতকাল বুধবার দুপুরে র্যাব-১১ অধিনায়ক (সিও) লেফটেনেন্ট কর্ণেল কাজী শামসের উদ্দিন প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, ধর্ষিতা শিশুটি ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী এবং ওই এলাকারই বাসিন্দা। তার বাবা একটি গার্মেন্টস কারখানার নৈশ প্রহরী ও মা গার্মেন্টস কর্মী। তাদের তিন মেয়ের মধ্যে এই শিশুটি সবার ছোট।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরো জানান, ধর্ষিতা শিশুটি বেশ কিছুদিন যাবত প্রায় রাতেই দু:স্বপ্ন দেখে ভয় পেতো। এতে শিশুটি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় কয়েকজনের পরামর্শ মতে ঝাড় ফুঁক ও পড়া পানি আনার জন্য শুক্রবার সকালে শিশুটির বাবা চাঁদমারি এলাকায় এক মসজিদের ইমাম ফজলুর রহমানের কাছে শিশুটিকে নিয়ে যায়। ইমাম ফজলুর রহমান এ সময় কৌশলে শিশুটির বাবাকে দোকানে পাঠিয়ে মসজিদের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়। পরে নিজের রুমে শিশুটিকে নিয়ে হাত বেঁধে ও মুখে স্কচ টেপ লাগিয়ে ধর্ষণ করে। পরে তার বাবা এসে শিশুটিকে বাসায় নিয়ে গেলে রক্তক্ষরণ শুরু হয় এবং শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে তারা বাবা মা বুঝতে পারে। এক পর্যায়ে শিশুটি তারা বাবা মাকে ধর্ষণের বিষয়টি জানালে তারা বিকেলে ওই মসজিদে গিয়ে মুসুল্লিদের জানালে ইমামের পক্ষের লোকজন তাদের হুমকি দেয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ শহরের জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে গিয়েও ইমামের লোকজন শিশুটিকেসহ তার বাবা মাকে অপহরণের চেষ্টা করে। হাসপাতালের নার্সদের সহায়তায় শিশুটির বাবা বোরকা পড়ে র্যাব কার্য্যালয়ে গিয়ে অভিযোগ দেন। পরে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ধর্ষক ইমামসহ ছয়জনকে আটক করে।
র্যাব জানায়, শিশুটির শারিরীক অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। টানা ছয়দিন যাবত তার রক্তক্ষরণ হচ্ছে। র্যাবের নিরাপত্তা পাহাড়ার মধ্য দিয়ে শিশুটির চিকিৎসা চলছে। এ ব্যাপারে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা জানায় : ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার ঘাগা তালসার গ্রামে ৬ বছরের এক শিশু ধর্ষণ চেষ্টার দায়ে মেরাজ মিয়া (১৫) নামে এক কিশোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মেরাজ মহেশপুর উপজেলার গৌরীনাথপুর গ্রামের তাজুল ইসলাম তাজুর ছেলে। বুধবার দুপুরে মেরাজকে গ্রেফতারের পর পুলিশ ঝিনাইদহের একটি বিচারিক আদালতে সোপর্দ করে। কোটচাঁদপুরের সাবদালপুর পুলিশ ক্যাম্পের এসআই নীরব হোসেন বলেন, গত সোমবার শিশুটি বাড়ির পাশের বাগানে খেলছিল। এ সময় মেরাজ মিয়া তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। শিশুটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে মেরাজ পালিয়ে যায়। কিশোর মেরাজ ঘাগা তালসার গ্রামে দুলাভাই বাড়িতে থেকে একটি হোটেলে কাজ করতো। ঘটনার দুই দিন পর শিশুটির পিতা খলিলুর রহমান থানায় অভিযোগ করলে বুধবার পুলিশ মেরাজ মিয়াকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর থানায় একটি মামলা রেকর্ড হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।