মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ডেট্রয়েটের কালো মানুষ মার্ক গ্রিয়ার কালো মানুষদের প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিয়মিত অপমানসূচক বক্তব্যে এতটাই ক্ষিপ্ত যে তার নিকট থেকে সর্বপ্রকারে দূরত্ব বজায় রাখতে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন।
গত মাসে তিনি যখন আফ্রিকান-আমেরিকানদের কাছে জনপ্রিয় এক প্রভাতী রেডিও শো দি ব্রেকফাস্ট ক্লাবের একটি এপিসোড দেখার জন্য ইউটিউব ক্লিক করলেন। তিনি একটি বিজ্ঞাপন দেখে ক্রুদ্ধ হলেন যাতে তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলা হল, এটা ট্রাম্পের পুন:নির্বাচনী প্রচারণা থেকে একটি বার্তা।
২৮ বছর বয়স্ক গ্রিয়ার একটি দাতা সংস্থার জন্য কাজ করেন। তিনি বলেন, এটা আমাকে ক্রুদ্ধ করল, কারণ আমি উপলব্ধি করলাম যে তারা কৌশলে এর মধ্যে ঢুকতে চাইছে। আমি তাদের ভালো করেই জানি। কিন্তু অন্য লোকরা যারা এটা দেখছে, তারা তাদের সাথে যেতে পারে। কালো মানুষদের প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গী। রাজনৈতিক নেতাদের উপর তার আক্রমণ। কালো ভোটারদের টার্গেট করে তার নির্বাচনী প্রচারণার সামাজিক মাধ্যম পরিকল্পনা। কালো বিরোধীদের উস্কে দেয়ার তার সাফল্য। কিন্তু কিছু কালো ভোটারের মনোবল ভেঙে দেয়া হচ্ছে ট্রাম্প যুগের অস্বাভাবিক রাজনৈতিক গতিশীলতা। কোনো আধুনিক প্রেসিডেন্টই কালো আমেরিকানদের এভাবে অপমান করেননি বা কেউই ট্রাম্পের মত মানুষজনকে জাতিগতভাবে বিভক্ত করতে চাননি। অন্যদিকে কেউই অর্থনৈতিক স্বার্থের অগ্রনায়ক হওয়ার দাবি করেননি।
গ্রিয়ার যে অনলাইন বিজ্ঞাপন দেখেছিলেন তাতে ট্রাম্পের ঔদ্ধত্যপূর্ণ স্বভাবেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল। একজন প্রেসিডেন্ট হয়ে তিনি জাতিগত অনৈক্যের বীজ বপন করেন। সাদা নন এমন চারজন ডেমোক্র্যাট দলীয় নারী কংগ্রেস সদস্যকে যে দেশ থেকে এসেছেন তাদের সে দেশে ফিরে যেতে বলেন এবং বলেন, কোনো মানুষই ইঁদুর এবং ইঁদুর আক্রান্ত বাল্টিমোর নগরীতে বাস করতে চাইবে না। তার পুনর্নির্বাচন প্রচারণা কালো ভোটারদের চোখের সামনে ট্রাম্পকে আকৃষ্ট করতে সামাজিক মাধ্যমে টাকা ব্যয় করছে।
এর লক্ষ্য হচ্ছে দ্বিমুখী- প্রথম, মুষ্টিমেয় কিছু কালো ভোটারের মন জয় করা। প্রচারণায় আফ্রিকান-আমেরিকান বেকারত্বের কম হার। প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর করা অপরাধ বিচার সংস্কারকে তুলে ধরতে চাইছে। এ বিষয়টি ইতোমধ্যে তার ফেসবুক নির্বাচনী প্রচারণার বিষয় হয়ে উঠেছে।
তবে গোপন আশা এবং ট্রাম্পের একজন মিত্র কর্তৃক ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করা যে প্রেসিডেন্ট কালো ভোটারদের ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে। অথবা কিছু আফ্রিকান-আমেরিকান যেগুলোকে তাদের বিরুদ্ধে অপরিবর্তনীয় বলে মনে করে এমন ব্যবস্থা পরিবর্তনে শক্তি ব্যয় করার ব্যাপারে কালো ভোটারদের দু’বার চিন্তা করাতে পারেন।
এই গুরুত্বপূর্ণ দোদুল্যমানতার পর্যায়ে বহু কালো ভোটারের জন্য ট্রাম্পের জাতিগত আক্রমণ ব্যক্তিগত পর্যায়ে গভীরভাবে ক্ষতিকর। কিন্তু তারা একজন প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করে যিনি অব্যাহতভাবে তাদেরকে খারিজ করছেন।
ডেট্রয়েট পাবলিক স্কুলের ২১ বছর বয়স্কা মুসলিম ইন্টার্ন মালেক আলদাসুকি বলেন, আমি মনে করি ট্রাম্প আবারো জয়ী হতে পারেন। মিশিগানের ইস্ট ল্যানসিং-এর মালেক প্রায়ই কালোদের উপর প্রেসিডেন্টের আক্রমণে খুব হতাশ বোধ করেন। তিনি বলেন, এটা হচ্ছে কিছুটা হলেও বিশ্বাসহীনতার পরিস্থিতি। কারণ এমন বহু সময় আসে যখন আমরা আমেরিকান লোকদের বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হওয়াটা আমি উপলব্ধি করেছি।
এদিকে ডেমোক্র্যাটরা মনে করছে যে প্রেসিডেন্টের জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি এক বিরাট সুযোগ এনে দিয়েছে। ২০১৬ সালে মিশিগানের মত নির্বাচনী লড়াই কেন্দ্রে কালো ভোটারদের ভোট লাভে বিপর্যয়ের পর ডেমোক্র্যাটরা এখন ট্রাম্পের প্রতি অবজ্ঞা সৃষ্টি করতে পারে এমন একটি গ্রুপকে উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করছে। যারা ২০২০-এর নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে। তারা হচ্ছে ভোট দিতে কম ইচ্ছুক কালো ভোটার যারা একদম শেষ মুহূর্তে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেন যে ভোট দেবেন কি না।
ভোটদানের হার থেকে দেখা যায় যে ২০১৬ সালের নির্বাচনে তাদের অনেকেই ঘরে অবস্থান করছিলেন। এ নির্বাচনেই গত দুই দশকে কালোরা কম অংশগ্রহণ করেন। মিশিগান, উইসকনসিন ও পেনসিলভানিয়ার মত নগর এলাকায় কালো ভোটারদের ভোটদানের সংখ্যা যদি কয়েক শতাংশ বেশি করা যায় তাহলে ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনের আশা ব্যর্থ হতে পারে।
ইতোমধ্যেই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে যে, ট্রাম্পের আচরণে ২০১৬ সালের মতই বর্ণবাদী মানসিকতার আছর রয়েছে। সুতরাং তাকে পরাজিত করা সম্ভব হলেও হতে পারে। দীর্ঘদিনের কালো ডেমোক্র্যাট নেতারা বলছেন যে একমাত্র বারাক ওবামার পুনর্নির্বাচনের সময়ই শুধু কালো ভোটারদের এ রকম সাড়া পাওয়া গিয়েছিল।
আটলান্টার এক সাবেক মেয়র শার্লি ফ্রাংকলিন বলেন, আমার দাঁতের ডাক্তার সেদিন আমার সাথে নির্বাচন নিয়ে ৪০ মিনিট আলাপ করলেন। কিছু লোক নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী। তবে বেশির ভাগই নয়। তারা শুধু বলে যে ট্রাম্পকে যে হারাবে, আমি তাকেই ভোট দেব। এটাই বেশির ভাগ কালোর মনের কথা। (অসমাপ্ত)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।