বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ চলতি (২০১৫-১৬) অর্থবছর রেমিটেন্স প্রবাহে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির মধ্যে দিয়েই শেষ হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০১৩-১৪ অর্থবছরে আগের বছরের চেয়ে কম রেমিটেন্স এসেছিল। এর আগে এবং পরে এমন চিত্রের দেখা না মিললেও এবার তা ঘটতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গত বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসের রেমিটেন্সের তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের মে মাস পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ১ হাজার ৩৪৫ কোটি ৪৭ লাখ (১৩ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। এই অঙ্ক ২০১৪-১৫ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ১ শতাংশ কম। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে ১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৭৫ লাখ (১৩.৮৭ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। সর্বশেষ মে মাসে ১২০ কোটি ৫৬ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে, যা গত বছরের মে মাসের চেয়ে প্রায় ৯ শতাংশ কম।
অর্থবছরের বাকি আর এক মাস। অর্থাৎ চলতি জুন মাসেই শেষ হয়ে যাবে ২০১৫-১৬ অর্থবছর। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে ২০১৬-১৭ অর্থাৎ নতুন অর্থবছর।
রমজানের ঈদকে সামনে রেখে জুন মাসে রেমিটেন্স প্রবাহে ভালো প্রবৃদ্ধি হলেও অর্থবছর ‘নেতিবাচক’ প্রবৃদ্ধি দিয়েই শেষ হবে বলে মনে করছেন তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই রেমিটেন্স কমছে। অর্থনীতির সূচকগুলোর মধ্যে রেমিটেন্সের অবস্থা বেশ খারাপ। এবার মনে হচ্ছে ১৫ বিলিয়ন ডলারের কম রেমিটেন্স আসবে। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন (এক হাজার ৫৩২ কোটি) ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল। তার আগের বছরে (২০১৩-১৪) এসেছিল ১৪ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার।
২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ১৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স। মার্কিন মুদ্রা ডলারের বিপরীতে ইউরো, সিঙ্গাপুর ডলার, মালয়েশিয়ান রিংগিতসহ অন্যান্য মুদ্রার দরপতনের কারণে বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রবাহ কমেছে বলে মনে করেন অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত। তিনি বলেন, ইউরোপ, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরে আমাদের প্রচুর বাংলাদেশি কাজ করেন। সা¤প্রতিক সময়ে সেসব দেশের মুদ্রার বেশ খানিকটা অবমূল্যায়ন হয়েছে। সেই অবমূল্যায়নের ফলে সে সব দেশে আবস্থানকারী আমাদের প্রবাসীরা এখন আগের চেয়ে কম অর্থ দেশে পাঠাচ্ছেন। এটাই রেমিটেন্স কমার প্রধান কারণ বলে আমি মনে করি। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সম্প্রতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের যে বাজেট পেশ করেছেন তাতেও রেমিটেন্স প্রবাহের ‘ধীরগতির’ কথা স্বীকার করেছেন।
বাজেট বক্তৃতায় মুহিত বলেছেন, আমাদের প্রত্যাশার তুলনায় কিছুটা কম প্রবাস আয় দেশে এসেছে। তবে শ্রমবাজার স¤প্রসারণ, দক্ষতা উন্নয়ন, নিরাপদ অভিবাসনসহ আমাদের নানামুখী পদক্ষেপ ও ক‚টনৈতিক তৎপরতার কারণে সা¤প্রতিক মাসগুলোতে প্রবাস নিয়োগ উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আমার বিশ্বাস, অচিরেই প্রবাস আয়ের প্রবাহে গতিশীলতা আসবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় এক কোটি বাংলাদেশি বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত আছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৩৯ কোটি ডলারের রেমিটেন্স আসে। আগস্টে আসে ১১৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ১৩৫ কোটি ডলার আসে সেপ্টেম্বরে। অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে আসে যথাক্রমে ১১০ কোটি, ১১৪ কোটি ২৫ লাখ এবং ১৩১ কোটি ২৬ লাখ ডলার। জানুয়ারিতে এসেছিল ১১৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারি মাসে এসেছিল ১১৩ কোটি ৩১ লাখ ডলার। মার্চ ও এপ্রিল মাসে এসেছিল যথাক্রমে ১২৮ কোটি ১১ লাখ এবং ১১৯ কোটি ৭৪ লাখ ডলারের রেমিটেন্স। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেমিটেন্স সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে তা কমে ১৪ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছে।
রিজার্ভ ২৮.৮৮ বিলিয়ন ডলার
রেমিটেন্স কমলেও রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারার কারণে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ) বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ সর্বশেষ ছিল দুই হাজার ৮৮৮ কোটি (২৮.৮৮ বিলিয়ন) ডলার। গত ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ২৯ বিলিয়ন ডলারের ‘ঘর’ অতিক্রম করে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের ৯০ কোটি ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে যায়। গত কয়েক দিনে তা বেড়ে ফের ২৯ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে অর্থাৎ জুলাই-এপ্রিল সময়ে বাংলাদেশ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ শতাংশ বেশি আয় করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।