বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঢাকায় এডিস মশার সংক্রমনে ডেংগু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবার পাশাপাশি এখন বরিশালেও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। শুধু বরিশাল নয়, ঝালকাঠী ও পিরোজপুর সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্নস্থানেও ডেংগু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ইতোমধ্যে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন এবং বরগুনা ও গৌরনদীর একটি ক্লিনিকে রক্ত পারিক্ষা করে বের হবার পথে অপর এক ডেংগু রোগীর মৃত্যু ঘটেছে। এরা সবাই ঢাকা থেকে ফিরে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
তবে এর চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে ঢাকা থকে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে আগত বিভিন্ন নৌযান ও বাস-এ করে এডিস মশার দক্ষিণাঞ্চলে আগমন। ইতোমধ্যে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ‘অবিলম্বে ঢাকা ছেড়ে আসা সব যানবাহনে যথাযথভাবে মশক নিধন নিশ্চিত করে যাত্রা শুরু করার’ তাগিদ দিয়েছেন। আসন্ন ঈদ উল আজহার আগে ঢাকা থেকে অন্তত ৫লাখ মানুষ বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে ঘরে ফিরবে। এসময় প্রতিদিন শতাধীক যাত্রীবাহী নৌযান ছাড়াও আরো অন্তত দেড়শ বাস রাজধানী থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রী পরিবহন করবে প্রতিদিন। এসব যানবাহন ডেংগুবাহী এডিস মশা নিয়ে আসার সম্ভবনা প্রবল বলে মনে করছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগন। তাদের মতে, ‘অবিলম্বে রাজধানী থেকে বহির্গামী সব যানবাহন মশামূক্ত করেই যাত্রার অনুমতি দেয়া উচিত হবে। নচেত আসন্ন ঈদকে ঘিরে শুধু দক্ষিণাঞ্চল নয় সারা দেশেই ডেংগু মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে’।
এ অবস্থায় বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্র পরিস্কার পরিচ্ছনা অভিযান যোরদারের পাশাপাশি মশক নিধনে যুদ্ধকালীন তৎপড়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সাধারন মানুষ। কিন্তু বরিশাল মহানগরীতে এখনো মশক নিধন সদর রোড ও এর আসেপাশের এলাকা সহ কথিত ভিআইপি এলাকাতে সীমাবদ্ধ বলে অভিযোগ নগরবাশীর। নগরীর ময়লা আবর্জনা পরিস্কার কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও ড্রেন সহ পয়ঃনিস্কাশন ব্যাবস্থা এখনো করুন। নগরীর বেশীরভাগ ড্রেন এখনো মশক প্রজনন কেন্দ্র। ড্রেনের পয়ঃ নিস্কাশন ব্যাবস্থা বেশীরভাগই রুদ্ধ। খালগুলোতে প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে বরিশালে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শণিবার সন্ধা পর্যন্ত প্রায় ১৮০ ডেংগু রোগীর চিকিৎসা চলছিল। ইতোপূর্বে আরো প্রায় ১শ রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ী ফিরেছে। হাসপাতালের চিকিৎসাধীন ও চিকিৎসা নিয়ে বাড়ী ফেরাদের বেশীরভাগই ঢাকা থেকে ফিরে ডেংগু জ্বরে আক্রান্ত হয়।
অপরদিকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেংগু রোগীদের চিকিৎসায় চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে হাসপাতাল প্রশাসন। একদিকে ডেংগু রোগীদের জন্য বেড নেই, অপরদিকে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত সরকারী এ হাসপাতালটিতেও ডেংগু সনাক্তকরনে ‘এনএসÑ১ ডিভাইস’ সংকটে পরিক্ষা নিরিক্ষা প্রায় বন্ধ। বেশীরভাগ রোগীকে বাইরে থেকে রক্তের নমুনা পরিক্ষা করাতে হচ্ছে। হাসপাতাল কতৃপক্ষ অবশ্য বিকল্প পদ্ধতিতে ডেংগু পরিক্ষার কথা জানিয়েছেন। এখনো বেশীরভাগ ডেংগু রোগী এ হাসপাতালটির মেঝেতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে সরকারী বরিশাল কলেজের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র জহিরুল ও কৃষক লোকমান হোসেন ঢাকায় না গেলেও বরিশালে বসেই ডেংগু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এখন হাসপাতালে। এছাড়া বরিশালের মুলাদী উপজেলা সদর ও আসেপাশের কয়েকটি গ্রামে অতিমাত্রায় ডেংগু রোগীর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় একই পরিস্থিতি বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়ও ।
এদিকে ডেংগু নিয়ে খোদ বরিশাল মহানগরীতেও কিছু অতি উৎসাহী প্রচারনা সহ গুজবের ডালপালা ছড়াতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের সচিব ইসরালই হোসেন বৃহস্পতিবার রাতে জ্বর ও পাতলা পায়খানা নিয়ে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি হবার পরে একটি মহল তা ডেংগু বলে প্রচারনা শুরু করে। কিছু অনলাইন মিডিয়াও বিষয়টি ফলাও করে প্রচারনা চালায়। অথচ শুক্রবারই তিনি সুস্থ্য হয়ছেন। সিটি মেয়র তাকে হাসপাতালে গিয়ে দেখেও এসেছেন। হাসপাতাল সহ ৪টি ল্যাবে তার রক্তের নমুনা পরিক্ষা করেও ডেংগুর কোন আলামত পাওয়া যায়নি বলে চিকিৎসকগন জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে সুস্থ্য হয়ে তিনি ঘরে ফিরেছেন
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।