Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সুদহার কমাল ফেড

এক দশক পর এই ঘোষণা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

 এক দশকেরও বেশি সময় পর সুদহার কমাল মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক ঝুঁকি থেকে অর্থনীতিকে রক্ষার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড দীর্ঘ অর্থনৈতিক স¤প্রসারণ ধরে রাখতে সুদহার কমাল ব্যাংকটি।
বুধবার ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির বৈঠকে সুদহার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ২-২ দশমিক ২৫ শতাংশ রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এক বছর ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুদহার হ্রাস নিয়ে ক্রমাগত চাপের পর এ পদক্ষেপ নিল ফেড। এ দফা বৈঠকে ফেডের সুদহার কর্তন বাজারে প্রত্যাশিত ছিল।
২০০৮ সালে বৈশ্বিক আর্থিক সংকট চলাকালে সুদহার শূন্য শতাংশের কাছাকাছি নামিয়ে এনেছিল ফেড। সে সময় পতনশীল অর্থনীতিকে উদ্ধারের জন্য সুদহার কমানো হয়। এ দফায় ফেডের সুদহার হ্রাসকে চীন ও ইউরোপের মন্থর প্রবৃদ্ধি এবং ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধসংশ্লিষ্ট অনিশ্চয়তা থেকে মার্কিন অর্থনীতিকে রক্ষার সতর্কতামূলক পদক্ষেপে হিসেবে দেখা হচ্ছে। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেন, মার্কিন অর্থনীতির পূর্বাভাস অনুকূল রয়েছে। এ পূর্বাভাসকে সমর্থন দিতে সুদহার কমানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ পদক্ষেপের লক্ষ্য দুর্বল বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ও বাণিজ্য উত্তেজনার মন্দা ঝুঁকি প্রতিরোধ। আরো বড় সুদহার কর্তনের আশা করায় ফেডের এ পদক্ষেপ ট্রাম্প ও বাজার উভয়কেই হতাশ করেছে। বুধবারের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ফেড তার আগ্রাসী সুদহার বাড়ানোর অবসান ঘটাল। সুদহার কমানোর ঘোষণার পর বুধবার দিন শেষে এসঅ্যান্ডপি-৫০০ সূচক ১ দশমিক ১ শতাংশ নেমে যেতে দেখা গেছে, যা ৩১ মের পর সূচকটির সবচেয়ে বড় পতন।
এদিকে ফেডের আরো সুদহার কর্তনের আভাস দিয়েছেন পাওয়েল। তিনি বলেন, এ পদক্ষেপ ধারাবাহিক সুদহার কর্তনের শুরু নয়, আবার কেবল একবারই সুদহার কমানো হচ্ছে এমনটাও আমি বলছি না। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরো সুবিধাজনক অবস্থানগ্রহণের জন্য নীতি সমন্বয় যথাযথ বলে আমরা মনে করছি।
উল্লেখ্য, গত বছর চার দফা সুদহার বৃদ্ধি করে ফেড। সর্বশেষ ডিসেম্বরে সুদহার বাড়ানো হয়। তবে বুধবারের বৈঠকে ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির সব সদস্য সুদহার কর্তনের পক্ষে ছিলেন না। কমিটির দুজন কর্মকর্তা অর্থনীতির জন্য আরো প্রণোদনা পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন। বিশেষ করে যখন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকার পাশাপাশি বেকারত্বের হার ৫০ বছরের সর্বনিম্ন ও মজুরি বাড়তে শুরু করেছে।
বোস্টন ফেডারেল রিজার্ভের প্রেসিডেন্ট এরিক রোজেনগ্রেন ও কানসাস সিটি ফেডের প্রেসিডেন্ট এসথার জর্জ সুদহার হ্রাসের বিপক্ষে ভোট দেন ও সুদহার অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে মত দেন। এ মুহূর্তে সারা বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে একটি ঝামেলাপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হচ্ছে। বিশ্বজুড়েই ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে পতন দেখা যাচ্ছে। এছাড়া চীন ও ইউরোপের প্রবৃদ্ধি দুর্বল হয়ে পড়ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাণিজ্যযুদ্ধ ফেডের জন্য পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। ট্রাম্পের চীনের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে লড়াই ও সমঝোতার মধ্যে ছোটাছুটি এবং মেক্সিকোর মতো বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর শুল্কারোপের হুমকি পরিস্থিতি অনিশ্চিত করে রেখেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘোষণা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ