বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাংলাদেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রকাশিত সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
তাদের প্রতিবেদনে রোগীর সংখ্যা, সরকারি ও বেসরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যার পার্থক্য, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের ব্যর্থতা এবং এ নিয়ে ভীতি ছড়িয়ে পড়ার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের এক ভিডিও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালের ভয়াবহ চিত্র।
দেখা গেছে, হাসপাতালের বেডে রোগীদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না। আক্রান্তদের মেঝেতে আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। ঢাকা শিশু হাসপাতালের ডা. জহিরুল ইসলাম লিটন ডয়চে ভেলেকে বলেন, শিশুরা স্কুলে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছে।
মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক বিরাজ করছে উল্লেখ করে এশিয়া নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনো ধরনের লক্ষণ দেখা দিলেই তারা হাসপাতালে ছুটছেন।
ঢাকার হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। আক্রান্তদের জন্য শয্যার ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো।
গ্রাম্য এলাকাগুলোতে এ ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সেখানকার পরিস্থিতি অজানা।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর পরিচালক মীরজাদী সাবরিনাকে উদ্ধৃত করে চীনা সংবাদমাধ্যম সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, অচিরেই ডেঙ্গু রোগের ভাইরাসের প্রকোপ কমার সম্ভাবনা কম।
কারণ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ রোগের ভাইরাসবাহী এডিস মশার প্রজনন প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এ রোগের বিস্তার ঠেকাতে মশার বংশ বিস্তারের এলাকা যথাযথভাবে শনাক্ত ও ধ্বংস করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন মীরজাদী সাবরিনা।
শিরোনামে একদিনে এক হাজারেরও বেশি ডেঙ্গু রোগীর হাসপাতালে ভর্তির খবর দিয়ে রাষ্ট্রীয় রুশ টেলিভিশন আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেঙ্গুর প্রকোপ ঠেকাতে মশার বংশ বিস্তার কমানো ও নিয়ন্ত্রণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট তাদের এ সংক্রান্ত সংবাদের শিরোনামে বলছে, বাংলাদেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি ‘অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে খারাপ অবস্থায়’ পৌঁছেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১৩ হাজার মানুষ ডেঙ্গুরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। যে কারণে কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার শুরু করতে বাধ্য হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তারকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির তথ্য রাখা শুরু হয়েছে। সেই থেকে বিচার করলে এবারের অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ।
কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘এই সময়’র খবরে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু ও বন্যাজনিত কারণে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬৩টিতেই ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের তথ্য বলছে, এক নেত্রকোনা ছাড়া বাকি সব জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
সরকারি এই পরিসংখ্যান সেল বলছে, গত ১ জানুয়ারি থেকে আজ বুধবার (৩১ জুলাই) পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৭ হাজার ১৮৩। আর প্রাণঘাতী এ রোগে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৪ জন। যদিও বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা তিনগুণের বেশি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।