পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিতরণকৃত ঋণ ফেরত আসছে না ব্যাংকে। খেলাপি হলে বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে—এমন প্রত্যাশা থেকে সুদ পরিশোধ বন্ধ করেছে বেশির ভাগ বড় করপোরেট। ব্যাংক আমানতের প্রবৃদ্ধিও নিম্নমুখী। ফলে নগদ অর্থের টানাটানিতে দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো। এর ধারাবাহিকতায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধিও নেমে এসেছে ছয় বছরের সর্বনিম্নে।
এমনই এক পরিস্থিতিতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গভর্নর ফজলে কবির আজ বুধবার নতুন এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন। এ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলন কক্ষে বেলা সাড়ে ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
মুদ্রানীতি প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাজেটে ঘোষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতিসহ সরকারের লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনের সহায়ক মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। মুদ্রানীতিতে সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাগুলো অপরিবর্তিত থাকবে। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি বিদায়ী অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা কমানো হবে। তবে জুন শেষে অর্জনের চেয়ে বেশি হবে। এছাড়া পুঁজিবাজারকে প্রাণবন্ত করার জন্য কিছু উদ্যোগও নতুন মুদ্রানীতিতে যুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) জন্য বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। কিন্তু অর্জিত হয়েছে মাত্র ১১ দশমিক ২৯ শতাংশ, যা গত ছয় বছরে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৩ সালের জুনের শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছিল ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশে।
এরপর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। পরের অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৭৮ শতাংশে। এরপর ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ১৫ দশমিক ৬৬ ও ১৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। অথচ এক যুগ আগে ২০০৭-০৮ অর্থবছরেও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ২৫ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়দায়িত্ব এখন মুদ্রানীতি ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। ঘোষিত মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়েও। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক সে পথে হাঁটেনি। ফলে ঘোষিত মুদ্রানীতি কাগজেই থেকে গেছে।
ঘোষিত মুদ্রানীতি অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অবাস্তব হওয়ার কারণেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মুদ্রানীতি শুধু ঘোষণার বিষয় নয়, এটি বাস্তবায়নে যথাযথ উদ্যোগেরও প্রয়োজন হয়। পুরো অর্থবছর ধরে বাজারে তারল্য সংকট চলছে। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় না নিয়ে অসামঞ্জস্যপূর্ণ মুদ্রানীতি প্রণয়নের কারণেই এটি ব্যর্থ হচ্ছে।
এ অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশে কর্মসংস্থান বাড়াতে হলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হবে। কিন্তু আমরা দেখছি, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছেও যেতে পারেনি। উল্টো সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যের চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে। এটি কাঙ্ক্ষিত হতে পারে না। নতুন অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের অসামঞ্জস্যতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সমস্যাগুলো নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকতে হবে। একই সঙ্গে ঘোষিত মুদ্রানীতি বাস্তবায়নে কঠোর হতে হবে। অন্যথায় দেশের আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা আরো খারাপ হবে।
সাধারণত, বাজেটে ঘোষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মুদ্রানীতি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতির অন্যতম দুটি উপাদান হলো সরকারি ও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন। উপাদান দুটি সাধারণত মুদ্রাবাজারে অর্থের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণের মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহূত। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, মুদ্রানীতির এ দুটি উপাদানই ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থ হয়েছে ব্যাপক মুদ্রা (ব্রড মানি) জোগানের লক্ষ্যমাত্রাও।
সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল মুদ্রানীতিতে। অর্থবছরের মাঝপথে এসে সে লক্ষ্য কমিয়ে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও অর্থবছর শেষে পুনর্নির্ধারিত লক্ষ্যও অধরা থেকে যায়। এ সময় বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১১ দশমিক ২৯ শতাংশ।
যদিও সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত। বিদায়ী অর্থবছরে প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। সরকারের ঋণ চাহিদার কথা বিবেচনা করে দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে তা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। যদিও বাস্তবে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ। গত জুন শেষে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ দশমিক ১৪ শতাংশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।