Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরিস জনসনের ক্ষমতারোহণ উদযাপন

তুরস্কে পূর্বপুরুষের গ্রাম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০১৯, ১২:২৯ এএম

নিজেদের আপন একজনকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসতে দেখে সুদূর তুরস্কের একটি গ্রামের মানুষের মাঝে আনন্দ খেলে যাচ্ছে। মধ্য তুরস্কের একটি গ্রামের মানুষ জানেন এককালে তাদের সাথেই বসবাসকারী পরিবারের একজন আজ ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী।
তুর্কি রাজধানী আঙ্কার থেকে ৬২ মাইল উত্তরে কানকিরি প্রদেশের কৃষি প্রধান কালফাত গ্রামের অধিবাসীরা মঙ্গলবার তাদের প্রধান মিলনায়তনে জড়ো হয়েছিলেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের পদত্যাগের ফলে সৃষ্ট অচলাবস্থায় কনজারবেটিভ পার্টির নেতৃত্বের নির্বাচনে এদিন জয়ী হন মি. বরিস জনসন -বলেন শহরের প্রশাসক, বায়রাম তাভুকু।
স্থানীয় মানুষ মি. জনসনের আগের মন্তব্যগুলোকে ‘রাজনৈতিক বক্তব্য’ মনে করে তা আমলে নিচ্ছে না। ঐসব বক্তব্য কখনও কখনও মুসলিম-বিরোধী বা তুর্কি-বিরোধী বলে মনে করা হয় এবং তারা আশা করেন যে, তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে কালফাত গ্রাম পরিদর্শন করবেন।
১,৩০০ গ্রামের প্রাক্তন প্রশাসক আদেম কারাগাক বলেন, ‘আমরা সম্মানিত যে, ওসমানিয়া বংশোদ্ভূত একজন যিনি এদেশ থেকে গেছেন, তার উত্তরসূরি একটি বিরাট দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে উঠেছেন।’
মি. জনসনের পূর্বপুরুষ হাজি আহমেদ রেজা ইফেন্দি ১৮১৩ সালে সেখানে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি যে বাড়িতে বাস করেছিলেন তা এখনও রয়েছে।
তার পূর্বপুরুষরা ‘সারিওগলাঙ্গিলার’ নামে পরিচিত ছিলেন, যার মোটামুটিভাবে অনুবাদ করা যায় ‘স্বর্ণকেশী ছেলে পরিবারের’ হিসেবে। কারাগাক বলেন, যদিও মি. জনসন তার তুর্কি পূর্বপুরুষের কাছ থেকে তার স্বর্ণকেশ উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন কি-না জানা যায়নি।
ইটন স্কুল এবং অক্সফোর্ডে লেখাপড়া এবং সম্পদশালী হবার কারণে মি. জনসনের পরিবারের ব্রিটিশ উচ্চ মধ্যবিত্তের সাথে ওঠাবসা ছিল। অথচ আধুনিক ব্রিটেনের বহু জাতিগত, বহু-সাংস্কৃতিক প্রকৃতি বুঝতে সক্ষম হওয়ার বিষয়ে তাকে চ্যালেঞ্জ করা হলে তিনি তার তুর্কি শিকড়ের পরিচিতি তুলে ধরতেন।
জুন মাসে একটি কনজারবেটিভ পার্টি নেতৃত্বের বিতর্ক চলাকালে ইসলামফোবিয়ার অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি নিজেকে রক্ষা করেছিলেন।
জনসন বলেন ‘যখন আমার মুসলিম দাদা ১৯১২ সালে তার জীবনের ভয়ে এই দেশে এসেছিলেন, তখন তিনি তা করেছিলেন কারণ তিনি জানতেন যে, এটি এমন একটি জায়গা ছিল যাদের উদারতা ও উন্মুক্ততা এবং বিশ্বজুড়ে মানুষের স্বাগত জানানোর আগ্রহ ছিল।’
‘আমার মনে হয় আমার মুসলিম দাদা তার বড় নাতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন দেখলে অবাক হতেন। তিনি খুব গর্বিত হতেন এবং আমি মনে করি এটি এই দেশের জন্য শ্রদ্ধাবোধের কারণ হত।’
২০১৬ সালে যখন তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে তুরস্ক সফর করেন, মি. জনসন সাংবাদিকদের বলেন যে, তার পরিবার কালফাত থেকে এসেছে। এ গ্রামে এখন হাজি আহমেদ রেজা ইফেন্দির বংশোদ্ভূত ৬টি পরিবার বাস করে। দূরসম্পর্কের চাচাতো ভাই সাটিমিস কারাতকিন বলেন, অদূর ভবিষ্যতে তাদের গ্রাম মি. জনসনকে স্বাগত জানানোর জন্য অপেক্ষায় থাকবে। বরিসের বাবা স্ট্যানলি জনসন ১০ বছর আগে কালফাত গ্রাম পরিদর্শন করেছিলেন। সূত্র : এপি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ