Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

অরক্ষিত ২১ লেভেলক্রসিং

সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথ

সৈয়দপুর (নীলফামারী) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৯, ১২:০১ এএম

নীলফামারীর সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথে ২১টি লেভেলক্রসিং রয়েছে অরক্ষিত অবস্থায়। এতে করে যে কোন মুর্হূতে এসব লেভেলক্রসিংয়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথের ই/১২৮ নম্বর লেভেলক্রসিং ২০১৫ সালের ১৪ আগস্ট রাতে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দুর্ঘটনায় ৪ পুলিশ সদস্য নিহত হন এবং আহত হন তৎকালীন সৈয়দপুর থানার ওসিসহ কয়েক পুলিশ সদস্য। এমন দুর্ঘটনার পর কিছুটা হলেও টনক নড়ে রেল কতৃপক্ষের।

জানা গেছে, ওই দুর্ঘটনার পর সেখানে একটি নতুন করে ঘন্টিঘর তৈরি করা হয়। নিয়োগ দেয়া হয় দুজন গেটম্যানও। আর ব্যারিয়ার (গেট) বসানোর জন্য অবকাঠোমো নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু ব্যারিয়ার (গেট) লাগানো হয়নি অদ্যাবধি। ফলে ঢেলাপীরবাজার থেকে বড়–য়াহাট সড়কে ওই লেভেলক্রসিংয়ের এক পাশে বাঁশ দিয়ে এবং অপর পাশে গেটম্যান দাঁড়িয়ে যানবাহন আটকিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। সৈয়দপুর- চিলাহাটি রেলপথে আরও বেশ কিছু অনুমোদিত লেভেলক্রসিং (রেলগেট) রয়েছে। যেগুলোতে নেই গেট কিংবা গেটম্যান।

সৈয়দপুর থেকে নীলফামারীর ডোমারের চিলাহাটি পর্যন্ত রেলপথের দৈর্ঘ্য ৫৪ কিলোমিটার। ওই দূরত্বে ৩৬টি লেভেলক্রসিং রয়েছে। তার মধ্যে ৩৩ টি বৈধ এবং অবৈধ ৩ টি লেভেলক্রসিং। আর বৈধ লেভেলক্রসিংয়ের মধ্যে গেটম্যান আছে মাত্র ১২টি। কয়েকটিতে আবার গেটম্যান থাকলেও নেই গেট (ব্যারিয়ার) কিংবা ট্রেনের খবরাখবর নেওয়ার মতো কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা। পোড়াহাট এলাকায় ই/১২৮ নম্বর ওই লেভেলক্রসিংয়ে গেলে দেখা যায় এক কক্ষবিশিষ্ট একটি ঘন্টিঘর নির্মাণ করা হয়েছে। গেট লাগানোর জন্য পাকা ও লোহার কিছু অবকাঠোমো বসানো হয়েছে। কিন্তু ব্যারিয়ার (গেট) আর লাগানো হয়নি। বেলা ১ টা ৩৮ মিনিটে ওই লেভেলক্রসিং অতিক্রম করে রাজশাহী থেকে চিলাহাটিগামী আন্তঃনগর তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনটি। এ সময় দায়িত্বরত গেটম্যান মামুনুর রশীদ করিম ওই লেভেলক্রসিংয়ের এক পাশে একটি বাঁশ আটকিয়ে এবং অপর প্রান্তে নিয়ে দাঁড়িয়ে ঢেলাপীর-বড়–য়াহাট সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে ট্রেন পার করছিলেন।

গেটম্যান করিম জানান, প্রায় দেড় বছর যাবৎ এখানে দায়িত্বপালন করছেন। তিনি ছাড়াও আরো একজন গেটম্যান ওই লেভেলেক্রসিংয়ে দায়িত্বে রয়েছে। তাদের কোন রকম প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি। লেভেলক্রসিংয়ে গেট না থাকায় তিনি স্থানীয়ভাবে একটি বাঁশ যোগাড় করেছেন। আর সেই বাঁশ দিয়েই সড়কে যানবাহন আটকিয়ে ট্রেন পার করছেন। স্টেশন মাস্টারের সঙ্গে তাদের কোন রকম যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই।

মূলত আগের স্টেশনের গেটম্যানের সঙ্গে নিজস্ব মুঠোফোনে ট্রেনের খবরাখবর নিয়ে গেটে বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ট্রেন পার করে থাকেন। অনেক সময় পূর্বে স্টেশনের গেটম্যান মোবাইল ফোন রিসিভ করেন না। তখন লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রেন আসা দেখে লেভেলক্রসিংয়ে বাঁশ লাগিয়ে যানবাহন আটকিয়ে ট্রেন পার করেন। আর রাতে বেলা ট্রেনের আলো দেখে কিংবা হ্ইুসেল শুনে দায়িত্ব পালন করেন তারা। তিনি জানান, স্টেশনের সঙ্গে তাদের সরাসরি কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় সময় ট্রেন আসার অনেক আগেই লেভেলক্রসিংয়ে বন্ধ করতে হয়। এ নিয়ে অনেক সময় পথচারী কিংবা যানবাহন চালকদের সঙ্গে তাদের চরম বাকবিতÐার ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ রেলওয়ের সৈয়দপুরের উর্ধ্বতন উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. সুলতান মৃধা জানান, ওই সব লেভেলক্রসিংয়ে অবকাঠামো বসানো সম্পন্ন হয়েছে ইতোমধ্যে। খুব শিগগিরই ব্যারিয়ার (গেট) লাগানোর কাজ শেষ হবে



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লেভেলক্রসিং
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ