Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লায় দেশি পশুতেই ভরসা

সাদিক মামুন কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৯, ১২:০২ এএম

কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে কুমিল্লার প্রকৃত খামারি, খন্ডকালিন খামারি ও গৃহস্থরা বৈজ্ঞানিক ও আধুনিক পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া মিলে প্রায় আড়াই লক্ষাধিক গবাদি পশু এবারের হাটে তুলবেন। এছাড়াও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে মৌসুমী ব্যবসায়ি ও বেপারীদের আনা প্রায় এক লাখসহ সাড়ে তিন লক্ষাধিক গরু জেলার স্থায়ী ও অস্থায়ী চার শতাধিক হাটে স্থান পাবে। কুমিল্লা জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এবারের ঈদে দেশি গরুতে ভরসা রাখার জন্য কোরবানীদাতাদের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। কুমিল্লার সীমান্ত পথে যাতে অবৈধভাবে ভারতীয় গরু কোরবানীর পশুর হাটে আসতে না পারে এব্যাপারে বিজিবিসহ জেলা প্রশাসনের ভূমিকা রাখার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় খামারিরা।

কুমিল্লার প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারে হৃষ্টপুষ্টকরণ প্রক্রিয়ার আওতায় কুমিল্লার ১৬ উপজেলায় এক লাখ ৩৮ হাজার ৮৫৩টি ষাঁড়, ৬৬ হাজার ৮০৩টি বলদ, ২৪ হাজার ২৩৪টি গাভী, ৩৩৮টি মহিষসহ দুই লাখ ৩০হাজার ২২৮টি গবাদিপশু কোরবানীর জন্য বিক্রি করতে হাটে তোলা হবে। এছাড়াও হাটে ছাগল, ভেড়া স্থান পাবে ২৭ হাজার ৩২১টি। এছাড়াও মৌসুমী ব্যবসায়ি ও বেপারীদের হাত ধরে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আনা আরও প্রায় এক লাখ গরু স্থান পাবে হাটগুলোতে। সবমিলে এবারে কুমিল্লার পশুর হাটে কোরবানীর পশুর সংখ্যা দাঁড়াবে সাড়ে তিন লাখের বেশি। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করায় গরুর সুস্থতা নিয়ে চিন্তিত নন কুমিল্লা খামারিরা। জেলার খামারিদের মতে এবারে কোরবানীর পশুর সঙ্কট দেখা না দিলেও গো-খাদ্য, পরিচর্যা খরচ বেড়ে যাওয়ায় ষাড়, বলদ, গাভী, মহিষ, ছাগল, ভেড়ার দাম গতবারের চেয়ে বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কোরবানীকে সামনে রেখে হৃষ্টপুষ্টকরণ প্রক্রিয়ায় এবারে গবাদীপশু লালনে এগিয়ে রয়েছে মনোহরগঞ্জ, মুরাদনগর, হোমনা, বরুড়া, নাঙ্গলকোট, দাউদকান্দি, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, দেবিদ্বার, সদর দক্ষিণ ও তিতাস উপজেলা। কুমিল্লার সদর দক্ষিণের রাজাপাড়া এলাকায় গড়ে তোলা গরুর খামারি জাহিদ রিপন জানান, প্রচলিত, প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করণের বিকল্প নেই। এপদ্ধতির গরুর কদর বেশি। আর ইনজেকশন, ট্যাবলেট, পাউডার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি থাকে। গরু মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই তিনি এবারে তার খামারে নিরাপদ দেশীয় পদ্ধতিেেত মোটাতাজা করেছেন। প্রতিবছরই দেখা যায় ঈদের সপ্তাহখানেক আগে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ি হাটে অবৈধভাবে আনা ভারতীয় গরু হাটে তুলেন। দামের ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশীয় খামারি ও গৃহস্থদের গরু বিক্রিতে। এতে লোকসানের মুখে পড়তে হয় খামারিদের। তাই স্থানীয় খামারিদের রক্ষায় অবৈধভাবে আনা ভারতীয় গরু যাতে হাটে উঠতে না পারে এজন্য প্রশাসনকে ভূমিকা রাখার আহŸান জানিয়েছেন। কুমিল্লার প্রাণী সম্পদ অফিসের কর্মকর্তা ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, কুমিল্লা অঞ্চলের হৃষ্টপুষ্ট আড়াই লাখের বেশি গবাদীপশু এবারে কুরবানীর হাটে উঠবে। এছাড়া মৌসুমী ব্যবসায়ি ও বেপারীরাও দেশের অন্যান্য জায়গা থেকে কুমিল্লার হাটগুলোতে প্রচুর গরু তুলবেন। হাটে যাতে কোন অবস্থাতেই রোগা, জীর্ণশীর্ণ এবং ক্ষতিকারক ওষুধ, ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে মোটা-তাজা করা নাদুস-নুদুস গরু বিক্রি করতে না পারে এ ব্যাপারে আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখবো। হাটগুলোতে ভেটেনারী মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পশু

৮ জুলাই, ২০২২
৮ জুলাই, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ