বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি কি তোমাদের এমন পথ দেখিয়ে দেবো, যার দ্বারা আল্লাহ তায়ালা তোমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন এবং আখেরাতে তোমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন?
সাহাবায়ে কেরাম বললেন, অবশ্যই দেখিয়ে দিন হে আল্লাহর রাসূল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কষ্টের সময় ভালোভাবে অজু করা। বেশি বেশি মসজিদে গমন করা। এক নামাজের পর অন্য নামাজের জন্য অপেক্ষা করা। - জামে তিরমিযী : ৫১।
যে তিনটি আমলের কথা রাসূল বলেছেন তা হলো,
এক. কষ্টের সময় ভালোভাবে অজু করা। কষ্টটা দুই ধরনের হতে পারে। শারীরিক কষ্ট ও মানসিক কষ্ট। শারীরিক কষ্ট যেমন, কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ল। এ সময়ে অজু করতে কষ্ট হয়। মানসিক কষ্ট যেমন, কেউ এমন জায়গায় গেল যেখানে অজু করার মতো পানি নেই। পানি কিনে অজু করতে হবে। এ অবস্থায় অজু করলে টাকা ব্যয় হবে বিধায় মনে কষ্ট লাগতে পারে।
অপর এক হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন কোনো মুমিন বান্দা অজু শুরু করে এবং তার চেহারা ধৌত করে তখন পানির ফোঁটার সঙ্গে তার চোখের দৃষ্টির কারণে যে গোনাহ হয়েছে তা ঝরে পড়ে যায়। যখন সে হাত ধৌত করে তখন পানির ফোঁটার সঙ্গে তার হাতের গোনাহ ঝরে যায়। এভাবে গোনাহ মাফ হতে হতে অজু শেষে সে গোনাহ থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে বেরিয়ে আসে। - জামে তিরমিযী : ০২।
দুই. বেশি বেশি মসজিদে গমন করা। মসজিদের পথে অধিক পরিমাণ যাতায়াত করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ আমল। হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে রওনা করে, তার প্রতিটি কদমে একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয় এবং একটি করে গোনাহ মাফ করা হয়। - সহিহ বুখারী : ৬৪৭।
তিন. এক নামাজের পর অন্য নামাজের জন্য অপেক্ষা করা। এ অপেক্ষা দুইভাবে হতে পারে। প্রথমত, মসজিদে বসে বসে পরবর্তী নামাজের জন্য অপেক্ষা করা। যেমন, কেউ আসরের নামাজ পড়ার পর মসজিদে বসে মাগরিবের নামাজ পড়ার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। দ্বিতীয়ত, কেউ নিজ প্রয়োজনে নামাজ পড়ে বের হয়ে গেল। কিন্তু তার মনে মনে এ ফিকির থাকে, কখন আজান হবে আবার মসজিদে ছুটে যাবো। এভাবে নামাজের পর ঘরে ফিরে এসেছে তবুও তার মন পড়ে থাকল মসজিদে, কখন আজান হবে আর আমি মসজিদে চলে যাবো। এটাও এক নামাজের পর অন্য নামাজের জন্য অপেক্ষা করার অন্তর্ভুক্ত।
উল্লিখিত এ তিনটি আমল যেগুলো দ্বারা আল্লাহ তায়ালা গোনাহ মাফ করেন তার সবগুলোই নামাজের পূর্বের আমল। অজু করা, মসজিদে আসা ও নামাজের অপেক্ষা করা। নামাজের পূর্ববর্তী আমলের যদি এ ফজিলত হয়, তাহলে নামাজের কী ফজিলত হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের এ তিনটি আমল ও নামাজ গুরুত্বসহ আদায় করার তাওফিক দান করুন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।