Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইমরানের যুক্তরাষ্ট্র সফর নয়াদিল্লির কূটনৈতিক ব্যর্থতা

ভারতীয় বিশেষজ্ঞের অভিমত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিশ্চিতভাবে আঞ্চলিক রাজনীতির জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। পররাষ্ট্র বিষয়ক ভারতের সিনিয়র এক বিশেষজ্ঞ এ কথা বলেছেন। ওয়াশিংটন চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে এই ঘোষণা দিয়েছে। প্রায় একই সময়ে বেইজিং থেকে আসা খবরে জানা গেলো যে, অস্ত্রবিরতিতে তালেবানদের রাজি করাতে এবং কাবুল সরকারের সাথে তাদের আলোচনায় বসতে রাজি করানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের প্রচেষ্টার সাথে যুক্ত হয়েছে পাকিস্তান।

গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া ওই যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আফগান-অভ্যন্তরীণ সংলাপের মধ্যে যে স্থায়ী অস্ত্রবিরতি চুক্তি সম্পাদিত হবে, সেটি অর্জনের জন্য সকল পক্ষকে ভ‚মিকা রাখার জন্য এই চার দেশ আহ্বান জানাচ্ছে’। এম কে ভদ্রকুমার তার সা¤প্রতিক কলামে লিখেছেন: ‘কোন সন্দেহ নেই যে, যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান নতুন করে পরস্পরের কাছাকাছি আসার মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের আঞ্চলিক নিরাপত্তা দৃশ্যপটে নতুন সমীকরণ যুক্ত হচ্ছে’।
‘সুস্পষ্টতই, বেইজিং শান্তি আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখেছে, যার সূত্রে তালেবান নেতা মোল্লা বারাদার গত মাসে বেইজিং সফর করেন এবং এটা দোহা আলোচনার ক্ষেত্রে একটা বাঁক বদলের সূচনা করে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের প্রতিদ্ব›িদ্বতার সম্পর্কের জটিলতার দিকটি উঠে এসেছে, যেটা আমরা ভারতীয়রা সবসময় অবজ্ঞা করে এসেছি’।

ভদ্রকুমার উল্লেখ করেছেন যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে যে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, সেটা শুধু তালেবানদের আলোচনায় আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য নয়। ‘আসলে পাকিস্তান তাদের আফগান এজেন্ডাতে বড় ধরনের কোন ছাড় দেয়নি। তালেবানদের ওপর নিজেদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তারা শান্তি আলোচনাকে ত্বরান্বিত করেছে মাত্র। পাকিস্তান তালেবানদের আফগান রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করতে চায় - যেখানে তালেবানদের ভ‚মিকা থাকবে প্রধান এবং এর মাধ্যমে ভারত-বিরোধী একটা কৌশলগত শক্তি তৈরি হবে। এই উদ্দেশ্যের জায়গা থেকে পাকিস্তান কখনই সরে আসেনি’।

ভারতীয় এই বিশেষজ্ঞের মতে, পাকিস্তানকে এই দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে যাতে আফগানিস্তান আর কখনও ‘সন্ত্রাসের কারখানায়’ পরিণত হতে না পারে, যেটা পশ্চিমের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। ‘যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক রক্ষার ব্যাপারে পাকিস্তান ব্যাপক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এবং তারা এমন ব্যবস্থা নেবে যাতে যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে তাদের অনুক‚ল ব্যবস্থা গ্রহণ করে”।

তিনি বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের একটি দাবি পূরণ করছে, যেটার মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতা, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি এবং বাণিজ্য সবকিছুই রয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, হোয়াইট হাউজ বলেছে যে, শান্তিপূর্ণ দক্ষিণ এশিয়া গড়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সবসময় তাদের দৃষ্টিকে খোলা রাখবে, যেখানের কাশ্মীর ইস্যুর ব্যাপারে ইঙ্গিত রয়েছে।

‘ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে তাই ইমরান খানের জন্য ট্রাম্পের আমন্ত্রণটি একটা তিক্ত বাস্তবতা মাত্র। সর্বোচ্চ যেটা তারা করতে পারে, সেটা হলো গত পাঁচ বছরের বিশাল ক‚টনৈতিক ব্যর্থতার জন্য একটা সাহসী ভাব ধরতে পারে মাত্র, যেখানে তারা অব্যাহতভাবে পাকিস্তানের সাথে আলোচনার প্রস্তাব নাকচ করে এসেছে এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে এসেছে, আফগানিস্তানকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রক্সি যুদ্ধের ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে, তালেবানদের আফগানিস্তানের গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং আফগানিস্তানের ব্যাপারে ভারত-আমেরিকান মিত্রতার ব্যাপারে অতিরিক্ত সুধারণা পোষণ করে এসেছে’। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

Show all comments
  • Mustafizur Rahman ১৪ জুলাই, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
    একমত তো বটেই, ভারতের আর খানা নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Mirza Anik Hasan ১৪ জুলাই, ২০১৯, ১:৩৮ এএম says : 0
    আফগান ইস্যুতে ভারতের পলিসি পুরাই ভেস্তে গেছে। এখন কাবুলে দিল্লির কোনো খানা নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • মাহমুদুল হাসান রাশদী ১৪ জুলাই, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    আামেরিকাও জানে পাকিস্তানকে ছাড়া আফগানিস্তানে আলোচনা ফলপ্রসূ হবে না, তাই ইমরান খানকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে উপায় নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohi Uddin ১৪ জুলাই, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
    আমার মনে হয় ভারতের পলিসি সব জায়গায়ই মার খাবে। কারণ অ্যাগ্রেসিভ কোনো পলিসি টেকসই হতে পারে না। একটা প্রতিবেশী দেশের সাথেও দিল্লির ভালো সম্পর্ক নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • MD. Mahmood azim ১৪ জুলাই, ২০১৯, ৮:৫৩ এএম says : 0
    Nirjatider saty Allah thaken
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ