Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বৃষ্টিতে পানিবন্দি নগরবাসী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

আবিরাম বৃষ্টিতে গতকালও নগরবাসীর দুর্ভোগের শেষ ছিল না। বৃষ্টির তোড়ে জনজীবন থমকে যাবার উপক্রম হয়েছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে গেছে। যথারিতি গতকাল শনিবার বিকালের মুষলধারে বৃষ্টিতে রাজধানীর মতিঝিল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ঘাট তলিয়ে যায়। আর বৃষ্টির পানি দ্রæত নিষ্কাশন না হওয়ায় ব্যস্ততম প্রধান সড়ক ও বিভিন্ন অলিগলিতে হাঁটু পানি জমে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানিবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। সৃষ্ট অবস্থার সামালদিতে গতকাল শনিবার বিকালে বৃষ্টিতে পানিবদ্ধ ডিএনডি বাঁধ এলাকায় দুর্ভোগে পড়া মানুষকে নৌকায় পারাপার হতে দেখা গেছে। রাজধানীর পানিবদ্ধতাপ্রবণ এলাকাগুলোতে এভাবে নৌকায় পারাপার হতে প্রায় সময় দেখা যায়।
গতকাল শনিবার বিকালের প্রবল বর্ষণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়। এমন কয়েকটি এলাকার মধ্যে রয়েছে কদমতলীর ওয়ায়েস কলোনী, শহীদ নগর, শ্যামপুর, ডেমরা, মাতুয়াইল, সারুলিয়া, সাদ্দাম মার্কেট, তুষারধার। বৃষ্টিতে রাস্তা তলিয়ে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট দুর্ভোগ থেকে নারী-শিশু-বৃদ্ধ ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাসহ ওই এলাকায় বসবাসকারীরা নৌকায় চলাচল করতে দেখা গেছে।
গতকাল বিকালে সরজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান, কাকরাইল-শান্তিনগর এলাকায় হাটু পানিতে সড়কে যানবাহন আটকে আছে। পানিবদ্ধাতায় অনেকগুলো সিএনজিচালিত অটোরিকশা রাস্তায় বিকল হয়ে পড়ে। অটোরিকশা পরিবর্তন করে অনেককে গন্তব্যে যেতে হয়েছে। দ্রæত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় মানুষকে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে।
অল্প বৃষ্টিতেই মগবাজার, মৌচাক হয়ে মালিবাগ রেলগেট, রামপুরা ব্রিজ, মেরুল বাড্ডা, মধ্য বাড্ডা এলাকায় হাঁটুপানি জমে যায়। জমে যাওয়া পানির কারণে অটোরিকশা ও অন্য যানবাহন রাস্তায় আটকে পড়ে। মধ্য বাড্ডায় রাস্তার ওপর ময়লার ভাগাড় পানিতে মিশে একাকার হয়ে সড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দেয়। ঢাকায় দীর্ঘদিন ধরে অল্প বৃষ্টিতে পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও সিটি কর্পোরেশন দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেয় না বলে অভিযোগ দুর্ভোগে পড়া যাত্রীদের।
নর্দ্দা, কালাচাঁদপুর থেকে বারিধারা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কে অল্প বৃষ্টিতেই হাঁটু পরিমাণ পানি জমে যায়। এতে যানবাহন আটকে পড়ে। দুর্ভোগে পড়ে অফিসগামী যাত্রীরা। ফলে রিকশায় বাড়তি ভাড়া দিয়ে অনেককে অফিস ও কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে। তবে সামান্য বৃষ্টিতে পানিবদ্ধতার জন্য সিটি কর্পোরেশনের অবহেলাকে দায়ী করেন যাত্রীরা।
বৃষ্টিতে উত্তরার জসিম উদ্দিন রোড, এয়ারপোর্ট সড়ক, মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে, আইসিসিডিডিআরবি থেকে মহাখালী বাসস্টান্ড পর্যন্ত পানি জমে যায়। পানির সাথে রাস্তায় পড়ে থাকা ময়লা-আর্বজনা মিলে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। বৃষ্টির কারণে কোথাও কোথাও তীব্র যানজট, কোথাও গাড়ি না থাকায় যাত্রীদের ময়লা পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে চলাচল করতে দেখা যায়।
বৃষ্টিতে কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকার সব সড়ক ও স্টেশনের প্রবেশ মুখ হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়ে মালামাল নিয়ে আসা যাত্রীরা। তবে পানি দ্রæত নেমে না যাওয়ায় যাত্রীরা চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে সদরঘাট টার্মিনাল পর্যন্ত, ঢাকা মেডিকেলের সামনে রাস্তা, গোলাপ শাহ মাজারের সামনে পানি জমে যায়। রাস্তায় থাকা ময়লা বৃষ্টির পানিতে মিশে দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দেয়। সদরঘাটমুখী যাতায়াতকারীদের ময়লা পানি মাড়িয়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে যেতে দেখা গেছে। কাকরাইল থেকে নয়াপল্টন হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত পুরো রাস্তা ও আশপাশের গলি বৃষ্টিতে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে যায়।
অধিকাংশ স্থানে ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা ও গর্ত থাকায় যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। অনেক জায়গায় যাত্রীদের সড়কে পড়ে ভিজে যেতে দেখা গেছে। তবে সিটি কর্পোরেশনকে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। এছাড়া রাজধানীর অন্যান্য এলাকায়ও সামান্য বৃষ্টিতে সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়, সৃষ্টি হয় সেই চিরাচরিত দুর্ভোগ। তাৎক্ষণিকভাবে পানি নেমে না যাওয়ায় সৃষ্টি হয় পানিবদ্ধতা।
গতকাল শনিবার বিকালে নিউমার্কেট এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, বৃষ্টির পানিতে নিউমার্কেটের নিচতলার অধিকাংশ দোকানপাট পানিতে তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও হাঁটু পানি জমেছে। নিউমার্কেট ও আশেপাশের এলাকায় দেখা দিয়েছে পানিবদ্ধতা। এ মার্কেটের বহু দোকানিকে বৃষ্টি থেকে তাদের জিনিসপত্র রক্ষার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। আবার কিছু কিছু ক্রেতাকে বৃষ্টিতে ভিজেও কেনাকাটা করতে দেখা যায়। মার্কেটের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আশরাফ বলেন, ভাই বেচুম কী, ঘুমায়তাছি, চোখে-মুখে টেনশন। আল্লাহই জানে এ বৃষ্টি কখন থামে! দোকান থেক্কে কখন না জানি পানি সরে! ক্রেতাও নেই তেমন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ