রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
কুষ্টিয়া পৌরসভার ড্রেন ও সড়কের কাজে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। পৌরসভার প্রকৌশলীদের নিষেধ অমান্য করে ঠিকাদারের লোকজন রাতের বেলা নিম্নমানের ইট, খোয়া ফেলে কাজ করছে। ভরা বর্ষার মধ্যেও তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে কয়েকদিন আগে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, কুষ্টিয়া শহরের প্রধান সড়কসহ দুটি সড়কের পাশে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। একই সাথে সড়ক প্রসস্তকরণ ও সংস্কারের কাজ চলছে।
বিষয়টি স্বীকার করে কুষ্টিয়া পৌর মেয়র আনোয়ার আলী বলেন, ‘ঠিকাদারের কাজই চুরি করা। পৌরসভার জনবল কম থাকায় সব কিছু দেখা সম্ভব হচ্ছে না। তারপর যতটুকু সম্ভব কাজ বুঝে নেয়া হচ্ছে। রাতের বেলায় কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার। যাতে পৌরবাসী এসব সুবিধা ভোগ করতে পারে। আরো লোকবল থাকলে কাজ করতে সুবিধা হয়।’
পৌরসভা সূত্র জানায়, কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর থেকে বড় বাজার পর্যন্ত এন এস রোডের প্রায় সোয়া দুই কিলোমিটার ও মজমপুর থেকে রেনউইক কার্যালয় পর্যন্ত সড়কে প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার পৌরসভার পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রধান ড্রেন নির্মাণ কাজ চলছে। একই সাথে নালা নির্মাণের ফলে প্রশস্ত হওয়া সড়কের অংশ নির্মাণসহ দুটি সড়কই সংস্কারণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি এনএসরোডের অন্তত চার জায়গায় সড়ক বিভাজন করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের প্রথম দিকে কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে কাজ শেষ হবার কথা ছিল। কার্যাদেশ পেয়েছে নেশন টেক নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবপস্থাপনা পরিচালক হলেন ইফতেখারুল ইসলাম শিমুল।
পৌরসভা সূত্র আরও জানা যায়, এনএস রোডের উভয় পাশে ৫ থেকে ৬ফিট প্রস্ত নালা নির্মাণ করা হচ্ছে। নালার ওপরে টাইলস দিয়ে পথচারীদের হাটার ব্যবস্থা থাকবে। একইভাবে কওসের উদ্দীন সড়কের একপাশে নালায় টাইলস বসানো হবে। নালা নির্মাণের ফলে মূল সড়ক বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বর্ধিত অংশও সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এরপর পুরো সড়ক সংষ্কার করার কথা। অভিযোগ উঠেছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে এসব কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও অর্ধেক কাজ শেষ হয়েছে। কাজে গাফিলতি, ধীরগতি ও নিম্নমানের ইট খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে সড়ক খোড়াখুড়িতে পৌর বাসিন্দারা খুবই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
রিকশা ও ইজিবাইকে চলতে গিয়ে অনেকে পড়ে আহতও হচ্ছে। এদিকে কোন কোন জায়গায় বৃষ্টির পানিতে খোয়ার ভেতরে পানি প্রবেশ করে দুর্বল হয়ে পড়ছে। শাপলা চত্বর এলাকার বাসিন্দা ও কুষ্টিয়া চেম্বারের সহ-সভাপাতি এসএম কাদেরী শাকিল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়ার প্রাণকেন্দ্র ও ব্যস্ততম সড়কে কাজ চলছে। কাজের গতি ও মান দেখে মনে হচ্ছে এই সড়কের কোন বাপ-মা নেই। কাজের গতিতে ব্যবসায়ীরাও ব্যবসাতে ক্ষতির মুখে পড়ছে।
সচেতন নাগরিক কমিটি কুষ্টিয়া শাখার সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম টুকু বলেন, এত ব্যস্ত এলাকায় ধীর গতির কাজ খুবই অমার্জনীয়। তাছাড়া প্রকাশ্যে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়ম এটা কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, কাজের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। এখনও অনুমোদন হয়নি। তবে কাজ ভালো হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের তিনি বলেন, ‘কিছু কাজ সাব কন্ট্রাক্ট দেয়া হয়েছে হয়তো সেগুলোতে সমস্যা হতে পারে। তবে এটা জানা নেই। জেনে অবশ্যই প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই শহরেই আমার বাড়ি। আমাকেও সড়কে চলতে হয়। সেক্ষেত্রে কোন অনিয়মের সুযোগ নেই।’
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘নিম্নমানের ইট ও খোয়া ব্যবহারের বিষয়টি জানার পর এক মাস আগে সরেজিমন পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়েছিলাম। ওই সব সামগ্রী দ্রুত সরানোর জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে গত ২৬ মে চিঠি দেয়া হয়েছে। কাজেও ধীরগতি। কার্যাদেশ অনুযায়ী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশা করা যাচ্ছে চলতি বছরের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।