Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাঁচ নদী বিপদসীমার ঊর্ধ্বে পানি বাড়ছে ৬৬ স্থানে

অভ্যন্তরীণ ও উজানে ভারতে ভারী বর্ষণ

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

উত্তর-পূর্ব ভারতের উজানে অতিবৃষ্টির কারণে নেমে আসা ঢল-বান এবং অভ্যন্তরীণ ভারী বর্ষণের কারণে দেশের ৫টি নদ-নদী ৫টি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদ-নদীসমূহের ৯৪টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে ৬৬ পয়েন্টে। পানি হ্রাস পাচ্ছে ২৪টি পয়েন্টে। গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় সর্বশেষ পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রসূত্রে একথা জানা গেছে। বিপদসীমা অতিক্রমকারী নদ-নদী ও স্থানগুলো হচ্ছে, সিলেট অঞ্চলে সুরমা নদী সুনামগঞ্জের বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার ঊর্ধ্বে রয়েছে।

সুরমা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বাড়ছে পানি। খোয়াই নদী বাল্লা পয়েন্টে বিপদসীমার ৫১ সে.মি. উপরে, জাদুকাটা নদী লরেরগড় পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৮ সে.মি. উপরে, মুহুরী নদী পরশুরামে বিপদসীমার ১৩০ সে.মি. উপরে এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাঙ্গু নদী দোহাজারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩২ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবো’র পূর্বাভাসে জানানো হয়, পদ্মা ছাড়া প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পৃথক পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এবং এরসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা রাজ্যগুলোতে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল সংলগ্ন ভারতের বিহার এবং নেপালে অতি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এর ফলে আগামী ৭২ ঘণ্টায় প্রধান সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের নদ-নদীসমূহ সুরমা, কুশিয়ারা, কংস, মনু, খোয়াই, ফেনী, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, হালদাসহ এসব এলাকার নদীগুলোর পানি দ্রæত বৃদ্ধির শঙ্কা রয়েছে। গতকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে ১৭৫ থেকে ৬৮ মিলিমিটার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের নদ-নদীর উৎস তথা উজানভাগের উত্তর-পূর্ব ভারতের ব্যাপক এলাকায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ অব্যাহত আছে। এরমধ্যে গতকাল ২৪ ঘণ্টায় আসামের চেরাপুঞ্জিতে ৩২৮ মি.মি., দার্জিলিংয়ে ১০২ মি.মি.সহ কৈলাশহর, শিলং, দিব্রুগড়, আগরতলায় অতিভারী বর্ষণ হয়েছে।

এদিকে উত্তর জনপদের অন্যতম প্রধান নদী তিস্তায় পানি বৃদ্ধির দিকে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার মাত্র ২০ সে.মি. নিচে, কাউনিয়া পয়েন্টে ৫১ সে.মি. নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর পাশাপাশি দেশের অন্যতম বৃহৎ নদ ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি সবকটি পয়েন্টে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বিপদসীমার নিচে রয়েছে।
সারাদেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত

বর্ষার মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর এবং বঙ্গোপসাগরে জোরদার থাকায় আষাঢ়ী বৃষ্টিপাত সারাদেশেই অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় কুতুবদিয়ায় (কক্সবাজার) ২৬৭ মি.মি.। তবে এসময় ঢাকা ও খুলনা নগর ও আশপাশে বৃষ্টিপাত হয়নি।

আজ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কোথাও কোথাও হতে পারে ভারী থেকে অতিবর্ষণ।
এদিকে বায়ুচাপের তীব্রতার কারণে বাংলাদেশ উপকূল সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ