Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশজুড়ে বর্ষণ বজ্রপাতের শঙ্কা

চট্টগ্রামে পাহাড়ধসের সতর্কতা বন্দরে ৩ নম্বর সঙ্কেত

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

আষাঢ়স্য বর্ষণে আবহাওয়ার বিলম্বে পালাবদল শুরু হয়েছে মাসের শেষ দিকে এসে। সেই সাথে হিমেল হাওয়া, মেঘ-বাদলের ঘনঘটায় দীর্ঘস্থায়ী ভ্যাপসা গরমের প্রায় অবসান হয়েছে। জনজীবনে এসেছে প্রত্যাশিত স্বস্তি। গতকাল (রোববার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সবক’টি জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ, কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় বরিশাল বিভাগের খেপুপাড়ায় ১৫৪ মিলিমিটার। আজ সোমবার চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে চট্টগ্রামে পাহাড়ধসের সতর্কতা বহাল রয়েছে। এ সপ্তাহজুড়ে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, এ বছরে দীর্ঘস্থায়ী তাপদাহ ও অনাবৃষ্টি-খরার দহনের পর বর্ষাকালীন বিলম্বে এই বর্ষণের সাথেই বজ্রপাতের আশঙ্কা থেকে যাবে দেশের অনেক জায়গায়। কেননা এ সময়ে বায়ুমন্ডলের ঊর্ধ্বভাগে ও নিচের দিকে তাপমাত্রার ব্যাপক হেরফের বা তারতম্য থাকবে। বজ্রমেঘের আধিক্য, জেটবায়ু, ঊর্ধ্বমুখী বায়ু ও নিচের দিকের বায়ুচাপ ও প্রবাহের বিপরীতমুখী চাপ সৃষ্টি হতে পারে তীব্রভাবে।

সাধারণত মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত বজ্রবৃষ্টি ও বজ্রপাতের ঘনঘটা তৈরি হয়। তবে জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানাবিধ কারণে বাংলাদেশে বজ্রপাতের মাত্রা বছর বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ এরজন্য বজ্রনিরোধক ‘টাওয়ার বৃক্ষ’ তালগাছ রোপন, পূর্বাভাস ব্যবস্থা ও প্রযুক্তিগত দিক উন্নয়ন ও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

এরফলে বজ্রপাতের মাত্রা বৃদ্ধির শঙ্কা আছে। বজ্রপাতের বিপদ থেকে আত্মরক্ষায় আকাশে ঘন মেঘের আনাগোনা, হালকা বৃষ্টি ও গুমোট ভাব দেখা দিলেই দ্রুত সতর্ক হতে হবে। সতর্কতার দিকগুলো হচ্ছে ফসলি জমি, খোলা মাঠ-ময়দান, রাস্তাঘাট, ক্ষেত-খামার এবং নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাওড়ে জেলে মাঝি-মাল্লাদের নিরাপদ স্থানে বিশেষত নিজেদের বাড়িঘরে অবিলম্বে আশ্রয় নিতে হবে। আবহাওয়ার ওই ধরনের আলামত দেখা গেলে, গাছতলায় আশ্রয় নেয়া মোটেও নিরাপদ নয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বজ্রপাত থেকে আত্মরক্ষার বিষয়টি দুর্যোগ-পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হলেও দেশে এ নিয়ে জনসচেনতা, সতর্কতা এবং প্রস্তুতি দুর্বল।

এদিকে স্বরূপে ফিরে আসা আষাঢ়ের ২৩তম দিনে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ২৬, গোপালগঞ্জে ৪১, চট্টগ্রামে ৬৬, সীতাকুন্ডে ১৩৬, রাঙ্গামাটিতে ৫৮, কুমিল্লায় ৩৪, নোয়াখালীতে ৭১, কক্সবাজারে ৪৩, সিলেটে ২১, রাজশাহীতে ৮, রংপুরে ৩২, দিনাজপুরে ৪৮, বগুড়ায় ১২, ময়মনসিংহে ২৯, খুলনায় ৭, বরিশালে ২১ মি.মি.সহ দেশের প্রায় সর্বত্র বর্ষণ নামে। বৃষ্টিপাতের কারণে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে গেছে ২৮ থেকে ৩২ ডিগ্রির ঘরে।

আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ এলাকায় এবং খুলনা বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ, বজ্রবৃষ্টি এবং কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণও হতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া সতর্কবার্তা
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বাংলাদেশের ওপর বর্ষার মৌসুমি বায়ু সক্রিয়। এ কারণে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বরিশাল এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতি ভারী (৮৯ মি.মি.র ঊর্ধ্বে) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ী এলাকায় কোথাও কোথাও ভ‚মিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ