Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শুধু নুসরাত নয়, একাধিকবার তাকে মেয়েদের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৯, ৬:৩৯ পিএম

সিরাজ উদ-দৌলা জিজ্ঞাসা করেন, 'পাথরের সঙ্গে কপাল ঠুকলে মাথা ফাটবে, নাকি পাথর ফাটবে?’


ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাকে শুধু নুসরাত নয়, নিজ দপ্তরে একাধিকবার তাকে অন্য মেয়েদের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছেন বলে জানিয়েছেন মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী মোহাম্মদ মোস্তফা

আজ বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে মোহাম্মদ মোস্তফা এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, "সিরাজ উদ-দৌলাকে শুধু নুসরাত নয়, এর আগেও নিজ দপ্তরে একাধিকবার তাকে মেয়েদের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছি। এতে তিনি আমাকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেন। একবার তিনি প্রশ্ন করেছিলেন ‘পাথরের সঙ্গে কপাল ঠুকলে মাথা ফাটবে, নাকি পাথর ফাটবে?’ আমি বলেছিলাম, 'মাথাই ফাটবে।'"

পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হাফেজ আহম্মদ এবং বাদীর আইনজীবী শাহজাহান সাজু এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, পাঁচ নম্বর সাক্ষী মোস্তফার সাক্ষ্য শেষে তাকে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফরিদ উদ্দিন খান নয়ন, আহসান কবির বেঙ্গল নুরুল ইসলাম,গিয়াস উদ্দিন নান্নু ও মাহফুজুল হক জেরা করেন।

আগামী রোববার বেলা ১১টায় এই মামলার ছয় নম্বর সাক্ষী লোকমান হোসেনের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য তারিখ ধার্য করা হয়েছে।

এর আগে সকাল ১০টায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে মামলার প্রধান আসামি সিরাজ উদ-দৌলাসহ ১৬ আসামিকে কারাগার থেকে বিচারিক আদালতে হাজির করা হয়।

মোস্তফা জেরার বরাত দিয়ে বাদীর আইনজীবী শাহজাহান সাজু জানান, আসামিপক্ষের আইনজীবিদের প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী নৈশপ্রহরী মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন,‘অধ্যক্ষের দপ্তর ছিল নিচতলায়। মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণের ঘটনা একাধিকবার আমার চোখে পড়েছে। পরে তিনি নিচতলা নিরাপদ মনে না করায় ‘সাপ ঢুকেছে, নিচতলার দপ্তর নিরাপদ নয়’-বলে পাশের ভবনের দ্বিতীয় তলায় তার অফিস স্থানান্তর করেন।’

আদালত সূত্র জানায়, ২৭ ও ৩০ জুন নুসরাত হত্যা মামলার বাদী ও নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানকে জেরার মধ্য দিয়ে বহুল আলোচিত এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। এরপর নুসরাতের সহপাঠী নিশাত সুলতানা, নাসরিন সুলতানা ফূর্তি ও চার নম্বর সাক্ষী মাদ্রাসার অফিস সহকারী নুরুল আমিনের সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন করা হয়।

২৯ মে আদালতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে। ৩০ মে মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে স্থানান্তর করা হয়। ১০ জুন মামলাটি আমলে নিয়ে শুনানি শুরু হয়। ২০ জুন অভিযুক্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারিক আদালত।

এ মামলায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের, জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে ৬ এপ্রিল গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ ও পিবিআই এই মামলায় ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে ১২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২৭ মার্চ নিজ কক্ষে ডেকে নুসরাতকে যৌন হয়রানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা। এ ঘটনায় নুসরাতের মা বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করলে পুলিশ সিরাজ উদ-দৌলাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।



 

Show all comments
  • মোঃ আসাদ উজ্জামান (আসাদ) ৪ জুলাই, ২০১৯, ১০:৫৩ পিএম says : 0
    আইনের ভিতরে এমন মানুষ এখনো আছে যে আসামীদের পক্ষ নিয়ে কথা বলে,
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Shajedul Islam ৬ জুলাই, ২০১৯, ৬:১৮ পিএম says : 0
    Yes. Observing still there some animal who are supporting criminals.
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ৭ জুলাই, ২০১৯, ৫:৫৪ এএম says : 0
    এই জানোয়ারটার স্বাস্থি দ্রুত হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Moni Rujjaman ৯ জুলাই, ২০১৯, ৭:০১ এএম says : 0
    এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন
    Total Reply(0) Reply
  • Moni Rujjaman ৯ জুলাই, ২০১৯, ৭:০৩ এএম says : 0
    জন সম্মুখে ফাঁসি চাই
    Total Reply(0) Reply
  • Moni Rujjaman ৯ জুলাই, ২০১৯, ৭:০৪ এএম says : 0
    জন সম্মুখে ফাঁসি চাই
    Total Reply(0) Reply
  • Bahauddin ৯ জুলাই, ২০১৯, ৪:২২ পিএম says : 0
    gaye kerosin dhele agon jaliye pore mara hok.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ