Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাহুল গান্ধীর পদত্যাগ নতুন সভাপতি পাচ্ছে কংগ্রেস

উত্তরসূরি হিসেবে আলোচনায় শিন্ডে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

কংগ্রেস সভাপতির পদে আর থাকতে চান না, লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরেই তা জানিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর বহু চেষ্টা করেও তার সিদ্ধান্ত বদলাতে ব্যর্থ হলো ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেস। গতকাল বুধবার টুইটে তার পদত্যাগপত্রটিও দিয়ে দিলেন রাহুল গান্ধী। আর দলের ওয়ার্কিং কমিটিকে বললেন, দেরি না করে দলের নতুন নেতা বেছে নিতে। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, রাহুলের উত্তরসূরি হিসেবে সুশীল কুমার শিন্ডের নাম নিয়েই দলের শীর্ষ স্তরে আলোচনা চলছে।

রাহুলের পিতা, দাদী, পিতামহ সবাই ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। পদত্যাগপত্রে তিনি কংগ্রেসের পরাজয়ের দায়ভার নিজ কাঁধে নিয়ে নেন। পদত্যাগপত্রে রাহুল লিখেছেন, ‘কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে দলের ভোট-ভরাডুবির জন্য আমিই দায়ী। আগামী দিনে দলের এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন বিশ্বাসযোগ্যতার। আর সেই জন্যই সব দায় মেনে নিয়ে আমি পদত্যাগ করলাম।’ নতুন নেতা বেছে নেয়ার প্রক্রিয়ায় যে তিনি আর থাকতে চান না, পদত্যাগপত্রে তার উল্লেখও করেছেন রাহুল। লিখেছেন, ‘কখনোই শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভের জন্য লড়াই করিনি।’ তিনি ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রতি ‘ঘৃণা বা রাগ’ নেই জানিয়ে বলেন, ‘আমার দেহের প্রতিটি জীবন্ত কোষ স্বাভাবিকভাবেই তাদের ভারত ধারণাকে প্রতিরোধ করে।’ যে ধারণাকে তিনি বিভক্ত ও ঘৃণার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত বলে অভিহিত করেন। তিনি নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুদ্ধ করিনি, আমরা ভারতের সমগ্র রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি।’

এ দিন রাহুল বলেন, ‘আর দেরি না করে খুব দ্রুত নতুন সভাপতি বেছে নিক কংগ্রেস। দলের ওয়ার্কিং কমিটি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য শিগগিরই বৈঠকে বসুক। আমি এই প্রক্রিয়াটায় আর থাকতে চাই না। ইস্তফা দিয়েছি ইতিমধ্যেই। আমি আর সভাপতি নই।’ এই নির্বাচনের ফলাফল আগামী দিনে ভারতকে কী কী দিতে পারে আরো বেশি পরিমাণে, তারও উল্লেখ করেছেন রাহুল। লিখেছেন, ‘এই ক্ষমতা দখল (দ্বিতীয় মোদি সরকার) দেশজুড়ে হিংসাকে পৌঁছে দেবে এমন এক মাত্রায়, যা আমরা ভাবতেও পারছি না। তা দেশের দুর্দশা আরো বাড়াবে। কৃষক, বেকার, মহিলা, উপজাতি, দলিত ও সংখ্যালঘুরাই তার শিকার হবেন সবচেয়ে বেশি।’

এদিকে কংগ্রেসের শীর্ষস্তরের কয়েকটি সূত্রের খবর, নেতা বেছে নিতে আর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৈঠকে বসছে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি। এক নেতার কথায়, ৭৭ বছর বয়সি দলিত নেতা শিন্ডেকে যদি বেছে নেয়া হয়, সেটি হবে গান্ধী পরিবারের প্রতি তার আনুগত্যের জন্যই। শিন্ডে নিজের উচ্চাকাক্সক্ষা কখনও প্রকাশ করেননি। এক বার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী না হতে পারায় রাজ্যপাল করে দেয়া হয়েছিল তাকে। তাতেও টু শব্দ করেননি। শরদ পাওয়ারের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। পাওয়ারের এনসিপির সঙ্গে কংগ্রেসের মিশে যাওয়ার জল্পনা অনেক দিনের। পাওয়ার নিজের কন্যা সুপ্রিয়া সুলেকে মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের সভানেত্রী ও সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে তুলে ধরতে চান। সে সব মিলিয়েই এখন শিন্ডের নাম সভাপতির দৌড়ে এগিয়ে। শিন্ডে না হলে গহলৌত, মল্লিকার্জুন খড়্গ,ে গুলাম নবি আজাদের নামও তালিকায় রয়েছে বলে কংগ্রেস সূত্রের দাবি।

উল্লেখ্য, ভারতের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে গোটা দেশেই অত্যন্ত খারাপ ফল করে কংগ্রেস। রাহুল গান্ধীর নিজের আসন, কংগ্রেসের দূর্গ বলে পরিচিত আমেথিতে প্রতিদ্ব›দ্বী বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যান। যদিও কেরালার ওয়ানাড কেন্দ্র থেকে জিতে কিছুটা হলেও মুখ রক্ষা হয় তার। এরপরেই খারাপ ফলের দায় নিয়ে গত ২৫ মে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তার পদত্যাগের সিদ্ধান্তের পরেই দেশজুড়ে বিভিন্ন কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে পদত্যাগ করার হিড়িক পড়ে যায়। তবে, কোনো কিছুই টলাতে পারেনি রাহুলকে। কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি পদে আর না থাকার সিদ্ধান্তেই অনড় থাকলেন তিনি। সূত্র : এনডিটিভি, টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ