Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক

প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা

জেলার সদর, রামগঞ্জ ও কমলনগর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ইউনিয়নের নির্বাচন আজ অনুষ্ঠিত হবে। জেলা ও উপজেলা আ.লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রতিটি ইউনিয়নে আ.লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন। বিভিন্ন এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপি প্রার্থীদের প্রচার মাইক, প্রাচার কাজে ব্যবহৃত গাড়ী এবং বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নৌকা ও দলের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থীরা মাঠ দখলের লড়াইয়ে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে। এতে সংঘাত-সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে ভোটাররা। ভোট গ্রহণের দিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে বিএনপিসহ অন্য চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য প্রার্থী ও সাধারণ ভোটাররা। বিএনপি দলীয় প্রার্থী ছাড়াও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, সমর্থকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে। আ.লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের সাথে নানান পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে অপরদিকে বিএনপিসহ অন্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বহিরাগত সন্ত্রাসী হামলা, ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, ভোটকেন্দ্র থেকে তাদের এজেন্টদের জোরপূর্বক বের করে দেয়া এবং ভোট কেন্দ্র দখলের আশঙ্কায় আতঙ্কিত। সাধারণ ভোটার ও বিরোধীদলীয় প্রার্থীদের মাঝে ভয়ভীতি-আতঙ্ক ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১০ নম্বর ভাটরা ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু হান্নান লাভলুর (ধানের শীষ) বাড়ীতে গত বৃহস্পতিবার বিকালে প্রতিপক্ষর লোকজন প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। এসময় তারা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ভাঙচুরে বাধা দেয়ায় বিএনপি দলীয় প্রার্থী আবু হান্নান লাভলুর মা সাহেরা খাতুন (৬০) ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিয়েছে বলে জানান বাড়ীর লোকজন। গত ২ জুন রামগঞ্জ উপজেলার ২নং নোয়াগাঁও ইউনিয়ন বি.এন.পি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বিল্লাল পাটওয়রীর প্রচার কর্মীকে বেধম মাদর করে নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত গাড়ি, মাইক ছিনতাই করে সন্ত্রাসী রা। ইতোপূর্বে সন্ত্রাসীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে বি.এন.পির মনোনীত প্রার্থী বিল্লাল পাটওয়ারীর হোটাটিয়া বাড়ীতে হামলা চালিয়ে বাসার দরজা, জানালা, রুমের আসবাবপত্র ভাঙচুর, মূল্যবান মালামাল ও নগদ একলক্ষ টাকা নিয়ে যায়। এ সময় তারা বিল্লাল পাটওয়ারীকে না পেয়ে তার পরিবার-পরিজনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং বিল্লাল পাটওয়ারীকে এলাকা ছাড়ার আলটিমেটাম দিয়ে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয়। এলাকা না ছাড়লে পরবর্তীতে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে বীরদর্পে চলে যায়। গত বুধবার রাতে একই ইউনিয়নের উদন পাড়ায় আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কাজী ফরহাদ হোসেনের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও লুটপাট এবং তার কর্মী বিল্লাল হোসেন, সবুজ হোসেন, মেহেদী হাসান, ফয়েজ হোসেন,শরীফ হোসেন, রিপন হোসেন, স্বপন হোসেন, ফরাদ হোসেন, হৃদয়, রবিন ও স্বপনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। গত বুধবার রাতে রামগঞ্জস্থ জিয়া অডিটোরিয়ামে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা আ.লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন- নৌকা হল স্বাধীনতার প্রতীক, শেখ হাসিনার প্রতীক। এ প্রতীকের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিবে তাদেরকে নির্বাচনে কেন্দ্র যেতে দিবেন না। লক্ষ্মীপুরে বিগত দিনে ৩৮টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভা নির্বাচন হয়েছে সবগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয় হয়েছে। আমরা জেলা আ.লীগ বিগত দিনেও বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে গিয়েছি, আজও কেন্দ্রে কেন্দ্রে যাব, মনিটরিং করবো। আমরা যদি শেখ মুজিব ও হাসিনাকে ভালবাসি তাহলে আমরা নৌকার বিরুদ্ধে যেতে পারি না। তাই আমাদের দলের মধ্যে যারা নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে এবং তাদের পক্ষে অবস্থান করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করেছি। তারা কোনদিন দল করার সুযোগ পাবেন না। আর যারা তাদেরকে পিছন থেকে সহযোগিতা করছে তাদেরকেও দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। তিনি হুশিয়ার করে বলেন, যতবড় শক্তিশালী হোক না কেন নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান করলে টিকতে পারবে না। নৌকার প্রার্থীদেরকে বিজয় করে, সবাই মিলে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করবো এবং বলবো লক্ষ্মীপুরের অলক্ষ্মী দূর হয়েছে। উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আলহাজ শাহাজানের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেওয়ান বাচ্ছুর পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. নূরুউদ্দিন চৌধূরী নয়ন, সহ-সভাপতি সফিক মাহমুদ পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক সহিদ উল্লাহ প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ