Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বদরগঞ্জে আলুর বাম্পার ফলনে বাধা লেটব্রাইট রোগ উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় কৃষক

প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বাদশাহ ওসমানী, বদরগঞ্জ (রংপুর) থেকে : রংপুরের বদরগঞ্জে এবছর আলুর চাষাবাদ হয়েছে লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি ফলনও হয়েছে বাম্পার। কিন্তু ফাইটোপথোরা ইনফেসটেন্স (চযুঃড়ঢ়ঃযড়ৎধ রহভবংঃধহং) নামক ছত্রাকের আক্রমণে আলু ক্ষেতে লেইট বাইট রোগ বাম্পার ফলনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সাথে ঘন কুয়াশা এবং বৈরি আবহাওয়ার কারণে শত চেষ্টা করেও কৃষকরা এ রোগ প্রতিরোধ করতে পারছেন না। এ কারণে আলুর উৎপাদন কমে যাওয়া ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের কৃষক মাসুদ রানা জানায়, আলু রোপণের সময় আবহওয়া ভাল থাকায় এবছর প্রায় ২ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। প্রথমদিকে আলুর চারা সুন্দর ও তরতাজা ছিল। কিন্তু এখন গাছে আলু আসার আগে এক ধরনের ছত্রাক আক্রমণ করায় গাছ মরে যাচ্ছে। এ কারণে আলুর আশানুরূপ ফলন নিয়ে আমরা শঙ্কায় পড়েছি। বদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ বছর ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আলুচাষের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেয়া হয়েছে। উপজেলায় মোট ২হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আলুচাষ হয়েছে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১০০ হেক্টর বেশি জমিতে আলুচাষ হয়েছে। এসব আলুর মধ্যে রয়েছে স্থানীয় জাতের শীল বিলাতি, সাদা গুটি, লাল পাকড়ি, ঝাউ বিলেতি, ইন্দুর কানি প্রভৃতি। এছাড়া উচ্চ ফলনশীল (উফশি) জাতের আলুর মধ্যে রয়েছে কার্ডিনাল, ডায়মন্ড, গ্র্যানুলা, ফেনসিল, স্ট্যারিকস, কারেজ, রাজা, কুপরি, সুন্দরি। কৃষি অফিস আরও জানায়, স্থানীয় জাতের আলু ১১০-১২০ দিনের মধ্যে ঘরে উঠে। আর উফশি আলু ৭৫-৮৫দিনের মধ্যে চাষিরা ঘরে তুলতে পারেন। সাধারণত বছরের আশ্বিন মাসের শেষ থেকে মধ্য কার্তিক পর্যন্ত স্থানীয় জাতের আলু জমিতে রোপণ করে থাকেন চাষিরা। আর উফশি জাতের আলু রোপণের উৎকৃষ্ট সময় কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস। যে সব কৃষক নির্ধারিত সময়ে আলু রোপণ করেছেন তারা বিপাকে পড়েছেন। কেননা এরই মধ্যে আলু ক্ষেতে দেখা দিয়েছে লেইট বাইট রোগ। শত চেষ্টায়ও এ রোগ নিয়ন্ত্রণে আসছে না। বিষ্ণপুর ইউপির মুন্সীপাড়া গ্রামের কৃষক ওবায়দুল হক ও বুলবুল ইসলাম জানায়, দেড় বিঘা ১৫ কাঠা ও ২ বিঘা জমিতে আলুচাষ করেছিলেন। লেইট বাইটের কারণে এরই মধ্যে ১০কাঠা পরিমাণ আলুক্ষেত পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে। এক বিঘা পরিমাণ আলুক্ষেত নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে। কৃষি অফিসের পরার্শ অনুযায়ি আলুক্ষেতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করেও কোন ফল পাইনি। একই এলাকার কৃষক আবুল কালাম, জাহেদুলের সাথে কথা হলে তারাও আলুক্ষেতের একই পরিণতির কথা জানান। তারা আরও জানান, মাত্র ৫-৭দিনের মধ্যে আলুক্ষেতের এ করুণ দশা হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আলুর উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে এবং আলুর উৎপাদন খরচও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কনক চন্দ্র রায় জানান, কিছু জমিতে লেইট বাইট রোগ দেখা দিয়েছিল তবে তা বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মাহবুবার রহমান জানান, লেইট বাইট একটি ছত্রাকজনিত রোগ। আবহাওয়ার তারতম্য, কুয়াশা ও প্রচ- ঠা-ার কারণে লেইট বাইট রোগ দেখা দিয়েছে। উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা ১০টি টিমে বিভক্ত হয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। কিছু জমিতে লেইট বাইট রোগ দেখা দিলেও বর্তমানে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বদরগঞ্জে আলুর বাম্পার ফলনে বাধা লেটব্রাইট রোগ উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় কৃষক
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ