Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যমুনার বুকে জেগে ওঠা চরে সবজি আবাদ : বাড়তি ফসলে স্বাবলম্বী প্রান্তিক চাষিদের মুখে সুখের হাসি

প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মাহফুজ মন্ডল, বগুড়া থেকে : বগুড়ার সারিয়াকন্দী ও ধুনটে যমুনা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে ফসল চাষ করে দিন ফিরিয়ে এনেছেন কৃষকরা। বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনা নদীর অনাবাদি চরের জমিতে মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, চিনা বাদাম চাষ করছে চাষিরা। ইতিমধ্যে চরে চাষ করা মিষ্টি কুমড়া বাজারে বিক্রি শুরু করেছে। বাড়তি ফসল চাষ করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের খেপির পাড়া যমুনা নদী বিধৌত চরগ্রামে প্রায় ৮০ বিঘা অনাবাদি জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছেন আবুল হায়াত নামে এক কৃষক। নদীর চরে পলি পড়ায় এবার মিষ্টি কুমড়ার ব্যাপক ফলন হয়েছে। সারিয়াকান্দীর এই কৃষক জানান, উল্টরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জায়গায় ব্যবসায়িক কাজে গিয়ে দেখতে পান তিস্তা নদীর চরে বালুকাময় জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষাবাদ। তিনি এমন চাষাবাদ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। ফিরে এসে নদীর চরে পলি পড়া জমিতে লাগান মিষ্টি কুমড়া। হাটশেরপুর ইউনিয়নের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ হতে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরের খেপিরপাড়া চরগ্রামে নিসলা বালুময় জমিতে অন্যত্র থেকে দোআঁশ মাটি সংগ্রহ করে এবং ৬ হাজার খড়া (গাছ চাষের জন্য গর্ত) তৈরি করে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন। প্রতিটি খড়া তৈরি করতে তার খরচ হয়েছে ১০০ টাকা করে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর চাষাবাদ করা হয়। মিষ্টি কুমড়ার ভাল ফলন পাওয়া গেছে। ধুধু চরেও ফসল ফলিয়ে ভাল লাভ করা যায় বলে এই কৃষক জানান। স্থানীয় চাষিরা ওই চরের বুকে কম্পোস্ট সার ও গোবর ছিটিয়ে দিয়ে চাষের উপযোগি করেন। অনাবাদি জমিকে আবাদি জমি তৈরি করেন। তৈরিকৃত ওই জমিতে দেশি ও হাইব্রিড জাতের মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন জাতের ফসল ফলিয়েছেন তারা। সারিয়াকিন্দর খেপির পাড়া চর এলাকার আব্দুল হান্নান নামে আরেক কৃষক জানান, তার তেমন জমি নেই। তারপর নদীর চরে জেগে ওঠা চরে কিছু কিছু বাদাম, মিষ্টি আলু চাষ করেছেন এবার। এই ফলনগুলো চরে ভাল হয়। চরের তো আর সীমা রেখা নেই। হাফ কিলোমিটার এর মত এলাকায় চীনা বাদাম ও মিষ্টি আলু চাষ করা হয়েছে। এবার ভাল দামে মিষ্টি আলু বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। কারণ বাজারে এখন ১৫ থেকে ২০ টাকা কেটি দরে মিষ্টি আলু বিক্রি করা যাচ্ছে। খরচ বাদ দিয়ে মিষ্টি আলু থেকে তিনি এবার প্রায় ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। তিনি জানান, যমুনার বুকে বিভিন্ন এলাকায় তার মত অনেক চাষিই অনাবাদি জমি তৈরি করে চাষাবাদ করছে। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মি. চন্দিদাস কুন্ডু জানান, সারিয়াকান্দী ও ধুনটে যমুনার বুকে জেগে ওঠা চর এলাকায় ব্যাপকভাবে মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলুসহ বিভিন্ন জাতে শাক-সবজি আবাদ করেছেন স্থানীয় চাষিরা। এ ব্যাপারে কৃষি অফিস থেকে চরের চাষিদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামশ ও সহযোগিতা করা হয় বলে কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যমুনার বুকে জেগে ওঠা চরে সবজি আবাদ : বাড়তি ফসলে স্বাবলম্বী প্রান্তিক চাষিদের মুখে সুখের হাসি
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ