পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
প্রস্তাবিত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ভ্যাট, আয়কর এবং আমদানি শুল্ক হারে প্রয়োজনীয় বেশকিছু সংশোধনের দাবি জানিয়েছে এফবিসিসিআই।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) স্থানীয় এক হোটেলে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এফবিসিসিআই অধিভূক্ত বিভিন্ন চেম্বার এবং এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা স্ব স্ব খাতের পক্ষে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি। বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, এফবিসিসিআই’র সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমই’র সাবেক প্রেসিডেন্ট এফবিসিসিআই’র পরিচালক মো. সিদ্দিকুর রহমান, বিজিএমই’র প্রেসিডেন্ট লুবানা হক, বাংলাদেশ চেম্বার অফ ইন্ডাষ্ট্রিজের (বিসিআই) প্রেসিডেন্ট আনোয়ারুল আলম চৌধুরী (পারভেজ) সহ বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, দেশে ব্যবসা বান্ধব বাজেট প্রনয়নে সরকার আন্তরিক। মহান জাতীয় সংসদে আসন্ন ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের উপস্থাপিত বাজেটকে ব্যবসায়ী সমাজ স্বাগত জানিয়েছেন। সরকার উদার নীতি গ্রহণ করে এ বাজেট প্রনয়ন করেছে। দেশের বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হয়েছে। প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তুলছেন, এখানে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি বলেন, দেশী বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে সরকার বিশেষ সুবিধা প্রদানের নীতি গ্রহন করেছে। ব্যবসা পরিচালনা করতে পণ্যের উপর শুল্ক ও ভ্যাট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার আন্তরিকতার সাথে চেষ্টা করছে। দেশের ব্যবসা-বানিজ্যের উন্নতি মানেই দেশের উন্নতি।
এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, আগামী ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের জনমুখী ও ব্যবসা-সহায়ক জাতীয় বাজেট প্রণয়নের জন্য এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শিল্পখাতে বিনিয়োগ, উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি, রফতানিমূখী শিল্পের বহুমূখী প্রসার, প্রণোদনা ও অধিক প্রতিযোগিতা সক্ষম করাকে বাজেটে উন্নয়ন কৌশল হিসাবে নেয়া হয়েছে যা ইতিবাচক। এছাড়াও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, আরএন্ডডি, ইনোভেশন, মানবসম্পদ, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে বাজেটে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিনিয়োগ, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান প্রক্রিয়াকে গতিশীল করবে।
বাজেটে শিল্প ও বিনিয়োগ সহায়ক ইতিবাচক উদ্যোগের পাশাপাশি কিছু বিষয়ের প্রস্তাবনা করা হয়েছে এর মধ্যে রয়েছে, শিল্পের সকল কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতি থেকে আগাম কর প্রত্যাহার, যোগানদারের ক্ষেত্রে ‘মূসক ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এর পরিবর্তে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব, বার্ষিক টাার্ণওভারের সীমা এক কোটি টাকার পরিবর্তে তিন কাটি টাকা করার প্রস্তাব, পৃথক নিবন্ধনের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের বিধান করা, আইন প্রতিপালনে অনিয়মে জরিমানার হার ১০ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এই জরিমানার হার পূর্বের মত বহাল রাখার প্রস্তাব, কোম্পানীর ক্ষেত্রে কর্পোরেট কর হার ২ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস, পোশাক ও বস্ত্র খাতের মত অন্যান্য রফতানি খাতেও একই রকম কর্পোরেট কর হার করার প্রস্তাব, প্রাপ্ত নগদ ভর্তুকির ক্ষেত্রে অগ্রিম কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ বহাল রাখাসহ তৈরি পোশাকের সকল রফতানি খাতে একই ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান। স্টক ডিভিডেন্টের উপর আরোপিত ১৫ শতাংশ কর সম্পূর্ন প্রত্যাহার প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।