Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘আমেরিকান আয়লান’ আবারো নাড়া দিল বিশ্ব বিবেককে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০১৯, ১২:৩৭ এএম

আরও একবার অভিবাসন সঙ্কটের ভয়াবহতা দেখলো বিশ্ব। এল সালভেদরের এক অভিবাসী ও তার মেয়ের পানিতে ভেসে আসা নিথর দেহের ছবি নাড়া দিয়েছে বিশ্বকে। আবারও সবার চোখের সামনে ভেসে উঠেছে সিরীয় শিশু আয়লান কুর্দির নিথর দেহ। ছবিতে দেখা যায়, অস্কার আলবের্তো মারটিনেজ রামিরেজ নামের ওই অভিবাসীর কাঁধ জড়িয়ে আছে তার ২৩ মাস বয়সী মেয়ে ভ্যালেরিয়া।
গত কয়েক মাসে ব্যাপক হারে বেড়েছে মেক্সিকো থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ। সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ না করলে সব ধরনের মেক্সিকান পণ্য আমদানির ওপর ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ শুল্কের হার প্রতি মাসে বাড়তে থাকবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। স্বভাবতই অনুপ্রবেশ আরও বেড়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্ত্রী ও ২৩ মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে রিও গ্রান্দে পার হয়ে টেক্সাস যেতে চেয়েছিলেন অস্কার আলবের্তো মারটিনেজ রামিরেজ। মেক্সিকোর মাতামোরোস নদীর কাছে গত সোমবার তাদের সন্ধান পাওয়া যায়। লা জোর্নাদা পত্রিকার প্রতিবেদক জুলিয়া লো ডাক বলেন, গত রোববার মাতামোরোস পৌঁছান মার্টিনেজ। তার স্ত্রী ও মেয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন তিনি। কিন্তু যখন বুঝতে পারেন যে এই প্রক্রিয়ায় অনেক সময় লেগে যাবে, তখন তিনি সাঁতরে পার হওয়ার চেষ্টা করেন।
প্রথমে মেয়েকে নিয়ে নদী পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান মার্টিনেজ। এরপর স্ত্রীকে নিতে আবার ফিরে আসেন। কিন্তু তার দেখাদেখি মেয়েও পানিতে ঝাঁপ দেয়। তাকে বাঁচাতে ফিরে যান মার্টিনেজ। কিন্তু তখন পানির গতি অনেক বেশি থাকায় হার মানতে হয় দু’জনকেই। পরে তাদের নিথর দেহ ভেসে ওঠে নদীর পাড়ে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের জীবনের ঝুঁঁকি নিয়ে যে বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিতে হয়, গত সোমবারের হৃদয়বিদারক এই ছবিটিই তার প্রমাণ। এর আগে রোববারও দুই শিশু ও এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিলো।
গত ১০ জুন থেকে মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা কার্যকরের কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। এ নিয়ে মীমাংসা করতে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর মধ্যে আলোচনা চলতে থাকে। সর্বশেষ এক যৌথ ঘোষণায় জানানো হয়, গোটা সীমান্তে অভিবাসন সংক্রান্ত কর্মসূচিকে বিস্তৃত করার ব্যাপারে রাজি হয়েছে মেক্সিকো।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত লিও গ্রান্দে পাড়ি দিতে গিয়ে অনেক অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে, যা বিগত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মেক্সিকোর সীমান্তবর্তী শহর পিয়েদ্রাস নেগরাসে পুলিশ কর্মকর্তা ক্লডিয়া হার্নান্দেজ বলেন, এই নদীটি খুবই বিপজ্জনক। যারা এখানে থাকেন না তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। আমি এখানে বড় হয়েছি। আমি কখনোই এই নদীতে যাবো না। নদীর স্রোত আপনাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ