Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতে দুই বছরে ফুরিয়ে যাবে ২১ শহরের পানি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৯, ১২:০৭ এএম

ভারত তার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ পানি সংকেটর মুখে পড়তে যাচ্ছে। প্রায় ৬০ কোটি মানুষ তীব্র পানি সংকটে পড়বে বলে সতর্ক করে দিয়েছে ভারত সরকারের নীতি নির্ধারণী সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন ফর ট্রান্সফরমিং ইন্ডিয়া (এনআইটিআই) বা নীতি আয়োগ। তারা ভারতের ২৪টি রাজ্য থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে ভারতের ২১টি নগরীতে আগামী দু’ বছরের মধ্যেই ভ‚গর্ভস্থ পানি ফুরিয়ে যাবে বলে এতে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।

‘কম্পোজিট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট ইনডেস্ক’ শীর্ষক এই রিপোর্টি প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী নীতিন গড়করি। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতি বছর প্রায় দুই লাখ ভারতীয় মারা যায় পানীয় জলের সংকটের কারণে। ভারতের নগরী এবং শহরগুলো যেভাবে দ্রুত বাড়ছে, তাতে নগরাঞ্চলে পানির চাহিদা আরও বাড়বে। সামনের দিনগুলোতে বিপর্যয় আরো বাড়বে। পানির সংকটের মুখে থাকা ২১টি শহরের মধ্যে আছে, রাজধানী নয়াদিল্লি, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই ও হায়দারাবাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো। আগামী বছর শেষে এসব শহরের ভ‚-গর্ভস্থ পানি শেষ হয়ে যাবে। ফলে প্রায় দশ কোটি মানুষ এই মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হবে।

ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভি বলছে, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মানুষ খাবার পানি পাবে না।
ধারণা করা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় বর্ষা মৌসুমের সময়কাল কমে যাবে। গত পাঁচ বছরে এই অঞ্চলে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আগের চেয়ে কমেছে। ২০১৫ সালে ৮৬ শতাংশ কম নিয়ে যা ছিল সবচেয়ে খারাপ অবস্থায়। এটিকেই সবচেয়ে বেশী উদ্বেগের বিষয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভারতে চলতি মৌসুমেও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে গেছে। উল্টো তীব্র দাবদাহের কারণে গোটা অঞ্চল বিশেষ করে ভারতজুড়ে মারাত্মক গরম পড়েছে। দেশটির অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে বিহার পর্যন্ত বৃষ্টির বদলে যে তাপমাত্রা দেখা যাচ্ছে, তা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।

দক্ষিণ ভারতের তামিলনাডু প্রদেশের রাজধানী চেন্নাইতে বর্তমানে পানি নেই। ট্যাংকারে করে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। পানি নেই আবার উল্টো এখানকার তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। গত দশ দিনের মধ্যে ৯ দিনই তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। গত ১০ জুন ছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ ৪৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিয়ে জুন মাসে শহরটির গড় তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। রাজ্যটিতে মানুষ এখন আর স্বাভাবিক উপায়ে পানি পাচ্ছে না। তারা ট্রাকে করে সরবরাহকৃত পানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া গত বছর প্রদেশটিতে যে গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে তা আগের চেয়ে ৬২ শতাংশ কম।

তামিলনাডুর প্রাদেশিক ফিশারিজ মন্ত্রী ডি জয়াকুমার বলেছেন, ‘বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে যে স্বল্পতা দেখা দিয়েছে তা পূরণ করতে কাজ করছে সরকার। আগামী অক্টোবর-ডিসেম্বরে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বৃষ্টির আগ পর্যন্ত সরকার এই পানি সংকট মোকাবিলা করতে সক্ষম।’ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘গোটা চেন্নাই শহরে ৪০০টি ট্যাংকারের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিদিন ৯ হাজার বার পানি সরবরাহ করছে এসব ট্যাংকার। যদি প্রকৃতি আমাদের সাহায্য না করে তাহলে আমরা মেতুরে অবস্থিত ভীরেনাম হ্রদ থেকে এক হাজার মিলিয়ন কিউবিক ফুট পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা করবো।’
প্রসঙ্গত, ভারতের ৭০ শতাংশ মানুষ কৃষিকাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। আর তাদের চাষাবাদ করা জমিতে প্রয়োজনীয় পানির ৭৫ শতাংশের যোগান আসে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে। তাই এই পানি স্বল্পতা চাষাবাদ এবং খাবার পানীয়’র যোগানে মারাত্মক বিপর্যয় তৈরি করবে দেশটিতে। ফলে খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়তে পারে। সূত্র : এনডিটিভি, বিবিসি।



 

Show all comments
  • Abdullah Tashin ২২ জুন, ২০১৯, ১১:২০ এএম says : 0
    ভারতে পানি সংকট এটা কোন সমস্যা ভারতীয় সাম্প্রদায়িক নেতারা 'জয় শ্রী রাম' বললেই তো রাম তাদের জন্য স্বর্গীয় অমৃত পাঠিয়ে দিবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Miah Muhammad Adel ২২ জুন, ২০১৯, ৪:২৭ পিএম says : 0
    এযে দেখি ব্যাঙের সর্দির কথা বলা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সব নদ-নদীর পানি কুক্ষিগত করেও উদরপূর্তি হচ্ছে না। পানিসংকটের অবতারণা করা হচ্ছে। এটা আবার কুম্ভিরাশ্রু বিসর্জনের দিকেও যায়। এতসব অপপ্রচার করে আবার কোন নদীর পানির উপর জলদস্যুতা শুরু করতে চায়। মতলব বুঝা মুশকিল। লেখকের লেখা "জলদস্যুপনা" বইটা পড়ুন লেখকের মতামতটা উপেক্ষা করার আগে। আরও পড়ুন একাধিক খণ্ডে সমাপ্ত "The Dam-Deluged Gasping Gange" Vol. 1, published by German Academic Publishing Company Lap Lambert. (Land Use and Land Cover Changes) "The Dam-Deluged Gasping Ganges" Vol. 2, published by German Academic Publishing Company Lap Lambert. (Land Use and Land Cover Changes) "The Dam-Deluged Gasping Ganges" Vol. 3, published by German Academic Publishing Company Lap Lambert. (Land Use and Land Cover Changes) "Farakka Barrage Vol 1: The Symbol of Bluffing, Blackmailing, Bullying, and Cornering Downstream for Upstream Water Piracy", published by German Academic Publishing Company Lap Lambert. (Land Use and Land Cover Changes & Water Politics)) "Farakka Barrage Vol 2: The Symbol of Bluffing, Blackmailing, Bullying, and Cornering Downstream for Upstream Water Piracy", published by German Academic Publishing Company Lap Lambert. (Land Use and Land Cover Changes & Water Politics) এমন কিছুই উদ্ধৃত করলাম না যার moderation প্রয়োজন আছে।
    Total Reply(1) Reply
    • Miah Muhammad Adel ২২ জুন, ২০১৯, ৫:৩২ পিএম says : 4
      ইনকেলাবকে ধন্যবাদ।

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ