Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সন্তানের বিরুদ্ধে মায়ের অভিযোগ

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৯, ১২:০৯ এএম

কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক বৃদ্ধ মা সন্তানের নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে অভিযোগ করেছেন। বর্তমানে পাষন্ড সন্তানের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে নিজবসত ভিটা ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন ভাইয়ের বাড়িতে। ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে সন্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন মা সাহেরা বেগম সারা। এ অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে, কাজী পাড়া গ্রামে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের কাজীপাড়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা কুদ্দুছ বকসীর স্ত্রী পাঁচ সন্তানের জননী সাহেরা বেগম সারা (৬৫) বড় ছেলে ও সেজো ছেলের বিরুদ্ধে তাকে মারধরসহ নানা ভাবে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার এ প্রতিনিধির সাথে সাহেরা বেগমের কথা হলে তিনি জানান, স্বামী মুক্তিযোদ্ধা কুদ্দুছ বকসী প্রায় ৮ বছর পূর্বে মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে একটি ঝুঁপড়ি ঘরে তিনি বসবাস করে আসছেন। বৃষ্টির সময় সেই ঘরে পানি পড়ে, অতি কষ্টে থাকেন। ৫ সন্তানের মধ্যে চার ছেলে ও একটি প্রতিবন্ধি মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে সামছুল আলম বকসী ও সেজো ছেলে সিরাজুল ইসলাম বকসী সব সময় তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে আসছেন। মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করার পর প্রতিবারই ওই দুই সন্তান সমুদয় টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় টাকা দিতে না চাইলে জীবননাশের হুমকি দিতো। গত রমজান মাসে পিতার বাড়ি থেকে প্রাপ্ত জমি বিক্রয়ের আড়াই লাখ টাকা সন্তানদের মাঝে বন্টন করে দিলে আবারো টাকা আনার জন্য শরীরিক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন করে। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ফজরের নামাজের অজু করার জন্য টিউবওয়েল চাপার শব্দে ওই দুই সন্তানের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে বলে তারা উঠে এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ পারাসহ ঝুঁপড়ি ঘরে পেট্রল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার হুমকি দেয়। এ ঘটনা আমি প্রতিবেশিসহ আমার বড় ভাইকে জানালে তারা সকলে মিলে আলোচনা করে মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকা থেকে ঘর, টিউবওয়েল, ল্যাট্রিন আলাদাভাবে নির্মান করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ওই দুই সন্তান শরীরিক ও মানুষিকভাবে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে আমি জীবন রক্ষার্থে ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করি। বর্তমানে অসুস্থ্য অবস্থায় নিজবসত ভিটা ছেড়ে উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের আপুয়ারখাতা এলাকার আউদিয়ারপাড় গ্রামে বড় ভাই মাওলানা আব্দুল হাই সিদ্দিকির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।

আব্দুল হাই সিদ্দিক জানান, ভাতার টাকা দিয়ে ছোট বোন সাহেরা বেগমের ঘর মেরামত করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকেই ভাগিনারা তাদের মা কে মারধরসহ জীবন নাশের হুমকি দেয়ায় আমার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। টাকার জন্য তারা সব সময় আমার বোনের উপর নির্যাতন করে আসছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাদের অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে অফিসার ইনচার্জকে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য বলা হয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অভিযোগ

১৩ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ