রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
উথান মÐল, নাজিরপুর (পিরোজপুর) থেকে : পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার দীর্ঘা ইউপিতে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর কর্মী-সর্মথকদের প্রচারণায় বাধাসহ হুমকি-ধমকি দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এছাড়া নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচারণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমানে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ দ্বীজদাস হালদার। এসব ঘটনার প্রতিকারসহ নির্বাচনের আগে ইউপিতে বিজিবি ও র্যাব মোতায়েনের দাবি জানিয়ে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৪নং দীর্ঘা ইউনিয়নে আগামী ৪ জুন ৬ষ্ঠ ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলার শহীদ জননী মহিলা মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট দ্বিজদাস হালদার স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে টেলিফোন প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন। তিনি ওই ইউনিয়নে ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশুতোষ বেপারী পূর্ব থেকেই তাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার চাপ সৃষ্টিসহ ষড়যন্ত্র করে আসছিল। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকেই আশুতোষ বেপারী তার লোকজন নিয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী দ্বিজদাস হালদারের নির্বাচনী কাজে বিভিন্ন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে থাকে। তার কর্মী-সর্মথকদের প্রচার-প্রচারণায় বাধাসহ পোস্টার-ব্যানার ছিড়ে ফেলে। তার কর্মী-সর্মথকদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতিসহ মামলা দিয়ে পুলিশি হয়রানির হুমকি দিয়ে গণসংযোগে বাধা দেয়। ভোটারদের প্রকাশ্যে টেবিলে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার হুমকি এবং তাদের কথা অনুযায়ী নৌকা প্রতীকে ভোট না দিলে দেশ ছাড়াসহ প্রাণে মারার হুমকি দেয়। জনসভার বিধান না থাকলেও উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে জনসভা করছে। সে সভায় নেতারা প্রকাশ্যে ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলছে, যারা নৌকায় ভোট না দিবে তাদের হাতে ভিন্ন রংয়ের কালি লাগিয়ে তাদের চিহ্নিত করা হবে। টেবিলে ভোট দিলে তাদের হাতে কালো কালি আর যারা বুথে ভোট দিবে তাদের হাতে লাল কালি লাগিয়ে চিহ্নিত করে নির্বাচনের পর তাদের দেখে নেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হচ্ছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশুতোষ বেপারীর ১৫ ভাগ জনসর্মথন নাই। তিনি ভোট কেটে চেয়ারম্যান হওয়ায় পরিকল্পনায় নির্বাচনে এসেছে। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে দেয়ালে স্টিকার লাগাচ্ছে, পথসভার পরির্বতে জনসভা করছে, ৩টি ক্যাম্প করার বিধান থাকলেও ১৫টি ক্যাম্প করেছে। এছাড়া গত ২৮ মে পিরোজপুর-১ আসনের এমপি আউয়ালের স্ত্রী লায়লা ইরাদকে প্রধান অতিথি করে নির্বাচনী জনসভা করেছে। গত ৩০ মে ওই ইউনিয়ন সংলগ্ন তালতলা নদীর অপর পাড়ে শাখারীকাঠী ইউনিয়নের একটি অসমাপ্ত সাইক্লোন সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পিরোজপুর-১ আসনের এমপি আউয়াল উদ্বোধক হিসেবে সেখানে যোগদান করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ করার বিধান না থাকলেও সরকারি অর্থায়নে ওই ইউনিয়নের উত্তর লেবুজিলবুনিয়া থেকে রাস্তায় ব্রিক সোলিং, লোহার পুল ও মসজিদে সোলার প্যানেল দিয়ে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। গত মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ওই ইউপি’র উত্তর লেবুজিলবুনিয়া এলাকায় কথা হয় স্বতন্ত্রপ্রার্থী দ্বিজদাস হালদারের কর্মী এমাম হোসেন, সুলতান ও শ্যামলের সাথে তারা অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে আমরা আমাদের প্রার্থীকে নিয়ে ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের লেবুজিলবুনিয়া এলাকায় গণসংযোগের জন্য গেলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশুতোষ বেপারীর কর্মী মিজান, উজ্জল, গাফ্ফার ও জাকিরসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের পথরোধ করে। আমাদের গণসংযোগে বাধা দেয় এবং হুমকি-ধমকি দিয়ে আমাদের ওই এলাকা থেকে বের করে দেয়। স্বতন্ত্রপ্রার্থী দ্বিজদাস হালদার বলেন, দীর্ঘা ইউনিয়নের মোট ভোটারের ৬০ ভাগ জনসর্মথন আমার। তারপরও চলমান পরিস্থিতির কারণে আমি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছি। আমার ভোটারা কি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে? পারলেও ভোট গণনা বা ফলাফল কি সঠিকভাবে ঘোষণা হবে। সর্বপরি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচনের অন্তত দুদিন পূর্ব থেকে নির্বাচনী এলাকায় বিজিবি ও র্যাব মোতায়েনের দাবি জানাচ্ছি। অভিযোগের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কথা হলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশুতোষ বেপারী তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিশ্চিত পরাজয় জেনে প্রতিপক্ষ প্রার্থী আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং মিথ্যা অভিযোগ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।