মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির মৃত্যুর সাথে সাথে শেষ হয়ে গেছে মিসরীয়দের গণতন্ত্রের পথে যাত্রা ও মুক্তির স্বপ্ন। তিনি ছিলেন দেশটির প্রথম ও একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার মৃত্যুতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছে মিসর। এ ঘটনায় জাতিসংঘের তদন্ত দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। কাতার গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। আর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, মুরসির মৃত্যুর জন্য ইতিহাস মিসরের একনায়ককে ক্ষমা করবে না।
ব্রিটেনের এক্সিটার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্ট্রাটেজি অ্যান্ড সিকিউরিটি ইন্সটিটিউট’র গবেষক ও ২০১৫ সালে আল-জাজিরার ‘ইয়ং রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড’ জয়ী তালহা আবদুর রাজাক তার প্রবন্ধে বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে পালাতে হয়েছিল তিউনিসিয়ার ৩০ বছরের স্বৈরশাসক বেন আলিকে। তিউনিসীয়দের দেখেই গণতন্ত্র ও মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিল দশকের পর দশক ধরে স্বৈরশাসনের কবলে থাকা মিসরীয়রাও। মাত্র কয়েকদিনের আন্দোলন আর প্রতিরোধেই বেন আলির মতোই ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন মোবারক। অবসান হয় ৬৬ বছর ধরে চলা স্বৈরশাসনের। এর পরে উৎসবের আমেজে অনুষ্ঠিত হয় মিসরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচন। নতুন স্বপ্ন ও আশা নিয়ে দেশের হাল ধরেন জননন্দিত নেতা মোহাম্মদ মুরসি। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই ভেঙে যায় সে স্বপ্ন। গণতন্ত্রের ওপর ফের স্বৈরশাসনের থাবা। ক্ষমতাচ্যুত ও বন্দি হন মোহাম্মদ মুরসি। অবশেষে গত সোমবার চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে। এ অকাল মৃত্যুর মধ্যদিয়ে শেষ হয়ে গেল স্বৈরশাসনের দেশ মিসরের গণতন্ত্র ও মুক্তির স্বপ্ন। অস্ত গেল গণতন্ত্রের শেষ সূর্য।
মিসরের বর্তমান বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে যাদের জানা আছে, তার এ মৃত্যুতে তারা কেউ অবাক হননি। এ অকাল মৃত্যুর মধ্যদিয়ে সিসির স্বৈরাচারী সরকার একটা বার্তাই দিতে চেয়েছে, মিসরীয়রা যেন আর কখনোই গণতন্ত্র ও মুক্তির স্বপ্ন দেখার দুঃসাহস না করে। যদি করে তাহলে কায়রোর তাহরির, রামসেস আর রাবিয়া স্কয়ারে হাজার হাজার মিসরীয়কে হত্যা করে যে রক্তের বন্যা বইয়ে দেয়া হয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও সেটাই করা হবে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, মিসরীয়দের মুক্তির জন্য শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত মুরসি যে সংগ্রাম করে গেছেন, সেটি সব মুসলমান যুগ যুগ স্মরণ করবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে মোহাম্মদ মুরসি শহীদ। ইতিহাস ও মিসরের জনগণ সেই (সিসি) একনায়ককে ক্ষমা করবে না, যে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে জেল দিয়েছে, নির্যাতন করেছে এবং তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। তার হাজার হাজার বিপ্লবী সমর্থককে নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে কারাগারে ছিলেন, কিন্তু পাশ্চাত্যের কেউ এর প্রতিবাদ করেনি।’ তিনি বলেন, মুরসিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যার সব ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। তিনি আদালতে গিয়েও তার ওপর জুলুমের প্রতিবাদ করেছেন। মিসরের জনগণ ও নিজের ওপর রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতিবাদী মুরসির এ মৃত্যু জুলুমের সাক্ষী হয়ে থাকবে।
গত সোমবার দেশটির একটি আদালতে বিচার চলাকালে মুরসির মৃত্যু হয়। ২০১৩ সালে এক সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও বন্দি হন তিনি। ক্ষমতায় এসেই বিরোধীদের ওপর সাঁড়াশি অভিযান চালান স্বৈরশাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। গণ-আদালতে হাজার হাজার ব্রাদারহুড সমর্থককে মৃত্যুদন্ড ও যাবজ্জীবন দেন। ছাড় পায়নি ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধীরাও। কয়েক বছরে ‘মিসরের নতুন ফেরাউন’ হিসেবে আবির্ভ‚ত হয়েছেন। তার স্বৈরশাসনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে মিসরীয় বিচারব্যবস্থাও। সূত্র : বিবিসি, আনাদোলু এজেন্সি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।