মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
জোশুয়া ওং হংকং-এর ২২ বছর বয়সী এক ছাত্র। তিনি হংকং-এর উত্তাল বিক্ষোভের একজন কেন্দ্রীয় আন্দোলনকারী। সোমবার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। কারামুক্ত হওয়ার পর জানান, বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিলের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন বিক্ষোভে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি। এই বিলে অপরাধীদের চীনের কাছে প্রত্যর্পণের বিধান রয়েছে। এই বিলের বিরুদ্ধে সম্প্রতি হংকং-এর রাজপথে নেমে আসে লাখ লাখ মানুষ। উত্তাল গণবিক্ষোভের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হন অঞ্চলটির চীনপন্থী শাসক ক্যারি ল্যাম। বিক্ষোভের তীব্রতায় বিতর্কিত বিলটি স্থগিত করে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। তবে এখনই রাজপথ ছাড়তে রাজি নন হংকং-এর বাসিন্দারা। তারা অঞ্চলটির চীনপন্থী শাসকের পদত্যাগ চান। আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, জোশুয়া ওং আরও মানুষের সমাগমের মাধ্যমে বিক্ষোভ সমাবেশ করে হংকং-এর চীনপন্থী শাসকের ওপর চাপ বাড়াবেন। বিবিসি-কে তিনি বলেন, স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে আমরা মূল্য দিচ্ছি পিপার স্প্রে, টিয়ার গ্যাসের মোকাবিলা করে, এমনকি রক্ত দিয়ে। আমার বিশ্বাস এখনও পর্যন্ত যে সমাবেশ হয়েছে তা সবচেয়ে বিশাল বলা যাবে না। ভবিষ্যতে আরও বেশি মানুষ রাজপথে নেমে আসবেন। হংকং-এর জন্য চূড়ান্ত সমাধান হচ্ছে, এখানকার বাসিন্দাদের নিজেদের নেতা নির্বাচনের অধিকার তাদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। এই গণতান্ত্রিক দাবিতেই আমরা লড়াই করছি। আয়োজকরা বলছেন, সা¤প্রতিক বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন ২০ লাখেরও বেশি বিক্ষোভকারী। এই আন্দোলন ২০১৪ সালের আমব্রেলা মুভমেন্টকে স্মরণ করিয়ে দেয়। সে সময় পুলিশের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বল প্রয়োগের অভিযোগ উঠে। ২০১৪ সালের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন যা আমব্রেলা মুভমেন্ট হিসেবে পরিচিত হয় সেই আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছিলেন জোশুয়া ওং। সেই আন্দোলনে দাবি ছিল, চীনের চাপিয়ে দেওয়া নেতার বদলে অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে হংকং-এর নেতৃত্ব নির্ধারণ করা হবে। জোশুয়া ওং এবং অন্যান্য ছাত্র নেতারা সেই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন। তখন ৭৯ দিন ধরে হাজার হাজার মানুষ হংকং-এর কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক সড়কে ক্যাম্প বসায় এবং শহরটি স্থবির হয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের অনেককে পরে ‘বেআইনি সমাবেশের’ দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে ওং-কে ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে দুইটি আলাদা কারাদন্ড দেওয়া হয়। পরে সাজার মেয়াদ কমিয়ে দিলে গত ১৭ জুন তিনি মুক্তি পান। সোমবার কারাগার ছাড়ার পরই হংকং-এর চীনপন্থী শাসক ক্যারি ল্যামের পদত্যাগের দাবি তুলে জোশুয়া ওং বলেন, ক্যারি ল্যামকে সরে যেতে হবে। সে হংকং-এর নেতা হওয়ার উপযুক্ত নয়। আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কথিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিলের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের ঢেউ ২০১৪ সালের আন্দোলনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। জোশুয়া ওং বলেন, জোরালো কণ্ঠে আমাদের অসন্তুষ্টির কথা তুলে ধরার জন্য এটাই উপযুক্ত সময়। তার মতে, এই বিলের মাধ্যমে বেইজিং হংকং-এর বাসিন্দাদের মৌলিক মানবিকারকে পদদলিত করার চেষ্টা করেছে। তার ভাষায়, আমি নাগরিক অবাধ্যতা এবং যে কোনও ধরনের সরাসরি অ্যাকশন সমর্থন করি। কারণ এই প্রত্যর্পণ আইনের সংশোধন আমাদের মৌলিক মানবিক অধিকারকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। যখন নাগরিকরা নির্দিষ্ট কিছু আইন মানতে অস্বীকৃতি জানান তখন সে পরিস্থিতিতে বোঝানো হয় সিভিল ডিজওবিডিয়েন্ট হিসেবে। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে জোশুয়া ওং বলেন, আমাদের দাবি এই আইনের সাময়িক স্থগিতাদেশের পরিবর্তে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার: আদৌ কোনও প্রত্যর্পণ আইন নয়। তিনি বলেন, আমরা যেটা করার চেষ্টা করছি তা হচ্ছে নাগরিক আইন অমান্য করা এবং সরাসরি অ্যাকশনের মধ্য দিয়ে পুরো দুনিয়াকে বোঝানো যে, হংকং এর মানুষ মুখ বুজে থাকবে না। কর্তৃপক্ষের ধরপাকড় অভিযান এই বিক্ষোভকারীদের থামিয়ে রাখতে পারবে না। জোশুয়া ওং বলেন, পুলিশ যখন হংকং-এ টিয়ার গ্যাস, পিপার স্প্রে নিক্ষেপ কিংবা কোন আন্দোলনকারীকে শারীরিকভাবে নিগৃহীত করে তখন তা একটি পরিষ্কার বার্তা দেয়। আর তা হচ্ছে শাসকগোষ্ঠী সমগ্র একটি নাগরিক প্রজন্মকে সাধারণ বাসিন্দা থেকে বিদ্রোহী হিসেবে পরিণত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদেরকে দাঙ্গাবাজ হিসেবে অভিহিত করায় তীব্র সমালোচনা করেছেন জোশুয়া ওং। তিনি বলেন, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের শারীরিকভাবে নিগৃহীত করেছে। এমনকি ক্যারি ল্যাম গণবিক্ষোভকে দাঙ্গা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আমরা তাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। গত কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভ ছিল আইনের প্রতি নাগরিক অবাধ্যতা, দাঙ্গা নয়। বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।