বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল মহানগরীর ভিআইপি এলাকা খ্যাত রাজা বাহাদুর রোডের ডিসি লেক’র পানি পচে ছোট-বড় রুই কাতল, সিলভার কার্প সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মড়ে ভেসে উঠছে। দুর্গন্ধে ঐ সড়ক সহ পার্শ্ববর্তী বঙ্গবন্ধু উদ্যান-বেল পার্ক-এ ওয়াকওয়েতে হাটতে আসা নগরবাসী সহ গ্রিন সিটি পার্কের শিশুদের প্রাণ উষ্ঠাগত। গত দিন তিনেক ধরে স্থানীয় বালুর মাঠ বস্তির ছেলে বুড়ো সকলেই ডিসি লেকে অর্ধমৃত অবস্থায় ভেসে উঠা এসব মাছ ধরছে। তবে ইতোমধ্যে মৎস বিভাগ থেকে পানি শোধনের জন্য কিছু রাসয়নিক প্রয়োগ করায় এসব মাছ খাবার উপযোগী কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও বিষয়টি নিয়ে উদাশীন জেলা ও নগর প্রশাসন। এমনকি লেকটিতে ভেসে ওঠা অর্ধমৃত প্রায় ১৫ কেজি ওজনের বিশাল একটি কাতল মাছ তুলে এনেছে স্থানীয় এক যুবক।
দীর্ঘদিনের পুরনো এ লেকটির সাথে ইতোপূর্বে পাশ্ববর্তি কির্তনখোলা নদীর জোয়ার-ভাটার পানি চলাচল সুবিধা থাকলেও জেলা প্রশাসকের বাড়ীর দক্ষিন পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সে নালাটি বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি এবার বৃষ্টিপাতের পরিমান যথেষ্ঠ কম হবার ফলেও লেকটিতে বাড়তি পানির উৎস বন্ধ। দীর্ঘ কয়েকটি বছর ধরে এ লেকটির ময়লা আর্বজনা পরিস্কার করা সহ সব ধরনের সংস্কার বন্ধ থাকায় এ করুন পরিনতি বলে মনে করছেন ওয়াকিবাহাল মহল। উপরন্তু বঙ্গবন্ধু উদ্যানের আসেপাশে গত বছর খানেক যাবত বেশ কিছু স্থায়ী ও পথ খাবর দোকান চালু হওয়ায় সেখানে প্লাস্টিক তৈজসপাত্র সহ খাবারের উচ্ছিষ্ট এ লেকটিতে ফেলা হচ্ছে রাতের আঁধারে। ফলে দুষনের কবলে পড়ে লেকের পানি পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধীক দায়িত্বশীল মহলের মতে, বর্তমানে পানির অবস্থা মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রানীর জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। তাই লেকের পানিতে থাকা মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রানী মরে কিংবা অর্ধমৃত অবস্থায় ভেসে উঠছে। এতে নগরীর অন্যতম বিনোদন এলাকাখ্যাত ও গরমে প্রশান্তি পেতে লেকের পাড়ে গ্রীন সিটি পাক-এর শিশু সহ বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আসা দর্শনার্থীরা বিপাকে পড়ছেন। লেকের পচা পানি, মাছসহ মৃত জলজ প্রানীর দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন দর্শনার্থীরা। লেকটির পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম কোনে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা জজ, সিভিল সার্জন, পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক সহ জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বাসভবন। পশ্চিম তীরে জেলা প্রশাসক’র বাসভবনের সামনে একটি সুদৃশ্য ঘাটলাও নির্মান করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের মালিকানাধীন ও তত্ত¡াবধানে থাকায় এ লেকটি ডিসি লেক হিসেবে পরিচিত।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আরেফিন বাদল-এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বিষয়টি শুনেছেন বলে জানিয়ে পানির নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরিক্ষা করার কথাও জানান। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন তাদেরকে কিছু অবহিত করেননি।
বরিশালের জেলা প্রশাসক দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। জেলা নাজির হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ‘লেকের পানি নষ্ট হয়েছে মাস দুই আগেই। তবে এর কোন সঠিক কারন আমাদের জানা নেই। মাস দেড়েক আগে মৎস দপ্তরের পরামর্র্শে পানি শোধনের জন্য ১০ মন চুনা ফেলা হয়েছিল লেকটিতে। কিন্তু পানি শোধন না হয়ে তা আরো বিষাক্ত হয়ে গেছে। ফলে মাছ মরে ভেসে উঠছে। তিনি আরো জানান, রোববার মৎস বিভাগের কর্মকর্তারা লেকটি পরিদর্শন করেছেন। তারা পানি শোধনের জন্য নতুন করে ওষুধ প্রয়োগ করেছেন। এ বিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রোববার পানি শোধনের জন্য ১০ হাজার টাকা মূল্যের ২শ কেজি ‘জিওলাইক’ নামের ওষুধ পানিতে দেয়া হয়েছে। এটি পানির সাথে মিশে গেলে মাছ মড়া বন্ধ হবে। তবে এ ওষুধ প্রয়োগের পরে বৃষ্টি হওয়া জরুরী। কেননা বৃষ্টি ছাড়া ওষুধ পানির সাথে মিশানো সম্ভব না। যেহেতু বৃষ্টি হয়নি তাই লেকে পাম্পের মাধ্যমে নতুন পানি দেয়া জরুরী বলেও জানান ঐ মৎস কর্মকর্তা। তবে সোমবার সন্ধা পর্যন্ত এ নগরীতে কোন বৃষ্টির দেখা মেলেনি। পানি পাম্প করারও কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।