পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সংস্কার হচ্ছে একশ’ বছরের পুরনো মহাসড়ক আইন। গত ৯ দশকে আইনটি সংস্কার না হওয়ায় সড়কের পাশেই যত্রতত্র গড়ে উঠছে বহুতল ভবন, শিল্প-কারখানাসহ নানা ধরনের স্থাপনা। এ অবস্থায় আইনটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সড়ক-মহাসড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে ‘মহাসড়ক আইন ২০১৯’-শীর্ষক আইনটি খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে স¤প্রতি। এতে মহাসড়কের সংজ্ঞা নির্ধারণের পাশাপাশি সড়ক-মহাসড়ক অবৈধ দখলমুক্ত করা, মেরামত ও মহাসড়কের প্রবেশ-প্রস্থান, স্থাপনা নির্মাণসহ নানা বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। খসড়া আইনটি সম্পর্কে জনমত যাচাই করছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে আইনটি চূড়ান্ত করা হবে। ৯৪ বছর আগে প্রণয়ন করা হয় ‘দ্য হাইওয়ে অ্যাক্ট ১৯২৫’। এর পর আইনটি কার্যকর না হওয়ায় আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হতে পারেনি বাংলাদেশের মহাসড়ক।
সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত আইনের আওতায় মহাসড়কের ডিজাইন স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণ ও আধুনিকায়নের কাজ করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর। এছাড়া মহাসড়ক নির্মাণ এবং উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজও করবে সংস্থাটি। পাশাপাশি আওতাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন মহাসড়কগুলো যথোপযুক্ত পরিচালনার জন্য যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করবে সওজ। এক্সপ্রেসওয়ে, জাতীয় মহাসড়ক ও কৌশলগত মহাসড়ক-সম্পর্কিত বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ প্রদান করবে।
আইনের আওতায় সরকার প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোনো সড়ককে মহাসড়ক, প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়ক ও এক্সপ্রেসওয়ে ঘোষণা করতে পারবে। তবে এক্সপ্রেসওয়ের ক্ষেত্রে দুটি শর্ত পালন করতে হবে। এগুলো হলো- এক্সপ্রেসওয়েতে শুধু দ্রুত গতির গাড়ি চলাচল করবে ও নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী তা নির্মিত হবে। এছাড়া প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়কের মূল উদ্দেশ্য হবে যানবাহন চলাচলে গতিশীলতা নিশ্চিত করা। এজন্য মহাসড়কে যত্রতত্র প্রবেশাধিকার বন্ধ করতে হবে।
মহাসড়কের পার্শ^বর্তী আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য স্থাপনা থেকে মহাসড়কে অবাধে বা সরাসরি যানবাহন প্রবেশ করতে বা বের হতে পারবে না। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক এক্সেস লেন বা মার্জিন লেনের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারবে। এছাড়া অধিদফতরের পূর্বানুমতি ও চার্জ প্রদান সাপেক্ষে নাগরিক সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো মহাসড়কের রাইট অব ওয়ের শেষ প্রান্তে ইউটিলিটি লাইন স্থাপন করতে পারবে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মহাসড়কের ওপর কোনো পণ্যসামগ্রী বা মালামাল মজুত বা ফেলে রাখতে পারবে না। মহাসড়কের নির্ধারিত স্থান ছাড়া হেঁটে চলাচল করা যাবে না। এছাড়া ধীরগতির জন্য নির্ধারিত লেন ব্যতীত মহাসড়কে মোটরযান ছাড়া অন্য কোনো যান চলাচল করতে পারবে না। পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান ব্যতীত যানবাহন পার্কিংও করা যাবে না।
যানবাহনের ওভারলোডিংজনিত ক্ষতি হ্রাস করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সওজ। এক্ষেত্রে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে সব ধরনের যানবাহনের ওজন পরিমাপ করা হবে। কোনো যানবাহনে অতিরিক্ত মালামাল থাকলে তা নামিয়ে ওজন হ্রাস করে মহাসড়কে চলাচল করতে হবে। এছাড়া অতিরিক্ত মালামাল বহনের জন্য জরিমানাও গুনতে হবে যানচালককে। আর সীমার অতিরিক্ত ওজন নিয়ে যান চলাচলের জন্য মহাসড়ক বা এতে বিদ্যমান সেতু, কালভার্ট বা অন্য কোনো অবকাঠামোর ক্ষতি হলে মোটরযানের চালক ও মালিককে নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বৈধ বা অবৈধ ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা চিহ্নিত করে তা অপসারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে সওজ। এছাড়া এ আইন দ্বারা মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য দায়ী বা ভবিষ্যতে ক্ষতির কারণ হতে পারে এরূপ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা যে কোনো কর্মকান্ডকে বাধা প্রদান করতে পারবে সওজ। অধিদফতরের সাংগঠনিক কাঠামোতে হাইওয়ে অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কার্যালয় স্থাপনে ব্যবস্থা করতে হবে।
মহাসড়কের রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার ও মেরামতের জন্য একটি তহবিল থাকবে, যার কাঠামো, কার্যপরিধি ও কর্মকান্ড ‘সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল বোর্ড আইন ২০১৩’-দ্বারা নির্ধারিত হবে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাব্য ক্ষতি হ্রাসে মহাসড়ক নেটওয়ার্কের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলো চিহ্নিত করতে জলবায়ু সহনশীল টেকসকই অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও পার্বত্য অঞ্চলের জন্য ভূমিধসজনিত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
প্রস্তাবিত মহাসড়ক আইনের বিভিন্ন ধারা অমান্য করায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানার বিধান রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কিছু অপরাধের শাস্তি হবে ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ অনুযায়ী। বাকি অপরাধগুলোর সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। আর নতুন আইন অনুমোদনের পর ১৯২৫ সালে দ্য হাইওয়ে অ্যাক্ট রহিত করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।