পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
উবার, পাঠাওসহ রাইড শেয়ারিং সেবায় উৎসে কর এক শতাংশ বাড়ছে। বছরে প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার পরিমাণ ২৫ লাখ টাকার কম হলে বর্তমানে তিন শতাংশ হারে উৎসে কর দিতে হয়। আর ২৫ লাখ টাকার বেশি হলে করের পরিমাণ দাঁড়ায় চার শতাংশ। তবে, নতুন অর্থবছরের বাজেটে (২০১৯-২০) প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার পরিমাণ ২৫ লাখ টাকার কম হলে চার শতাংশ হারে উৎসে কর দিতে হবে। আয় যদি ২৫ লাখ টাকার বেশি হয় তাহলে উৎসে কর দিতে হবে পাঁচ শতাংশ। তবে প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আরোপ করা ভ্যাটের হার ৫ শতাংশই স্থির থাকছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কয়েক বছর আগে যাত্রা শুরু করা অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবা উবার ও পাঠাও এখন বেশ জনপ্রিয়। হাতের নাগালে মোটরবাইক ও গাড়ি পাওয়ায় বেড়েছে এর চালক ও গ্রাহক সংখ্যাও। জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠার সঙ্গে সঙ্গে হয়রানি, বিড়ম্বনা ও নানা ধরণের অভিযোগের কারণে শুরুর দিককার গ্রহণযোগ্যতাও হারিয়েছে এ ধরণের সেবা। পরিধি বাড়ায় গত বছরই প্রথমবারের মতো রাইড শেয়ারিং সেবায় কর ও ভ্যাট বসায় সরকার।
অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবাকে ‘ভার্চুয়াল বিজনেস’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে এ ধরনের সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের ওপর পাঁচ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ করা হয়। এনবিআর এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করে। প্রতিষ্ঠানটির ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অ্যাপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান যে সেবামূল্য প্রাপ্ত হন, শুধু সে অংশের উপর নিট পাঁচ শতাংশ হারে মূসক আদায়যোগ্য হবে।
এদিকে রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর থেকে কর ও ভ্যাট তুলে নিতে প্রস্তাব দিয়েছিল পাঠাও। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে এক চিঠিতে আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাইড শেয়ারিং সেবায় ভ্যাট ও কর অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন পাঠাওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হুসেইন মোহাম্মদ ইলিয়াস। ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘অ্যাপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান রাইডারদের অংশগ্রহণ, বাছাইকরণ, প্রশিক্ষণ, গ্রাহকদের আলাদা আলাদা সেবা, কল সেন্টার পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনা করে থাকে। যে কারণে এই ব্যবসাকে ‘ভার্চুয়াল ব্যবসা’র পরিবর্তে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সেবা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।
চিঠিতে আরও বলা হয়, রাইডারদের মোট আয়ের ওপর ৩ থেকে ৪ শতাংশ উৎসে কর আরোপ করা হয়েছে, যা এই শিল্প বিকশিত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা। নতুন এ খাতে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। পাশাপাশি জনসাধারণের দৈনন্দিন যোগাযোগ গতিশীল হয়েছে। এর বিকাশ ও সুরক্ষার জন্য এ সেবা খাতকে ভ্যাট ও করমুক্ত রাখার আহ্বান জানানো হয় পাঠাওয়ের প্রেরিত ওই চিঠিতে।
এদিকে, ২০২০-২১ অর্থবছরের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আহরিত মোট রাজস্বে আয়কর খাতের অবদান ৫০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য সরকারের। সে লক্ষ্যে আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় ২৫ লাখ টাকার কম হলে উৎসে কর এক শতাংশ বাড়িয়ে চার শতাংশ করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। আর ২৫ লাখ টাকার বেশি হলে চার ভাগ থেকে বাড়িয়ে ৫ ভাগ করার কথা বলছে এনবিআর। তবে রাইড শেয়ারিংয়ে গাড়ি দিলে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) এবং রিটার্ন দাখিলে যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে তা অব্যাহত থাকছে। রাইড শেয়ারিং ছাড়াও আরও ১৭ ধরনের আয় বা এ ধরণের কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকলে রিটার্ন জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আগামী অর্থবছরেও তা বহাল থাকছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।