পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারী নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার এই ঘুষ দেয়ার কেলেঙ্কারি এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালকের ঘুষ নেয়ার কাহিনী এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। সর্বত্রই পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষ দেয়া এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালকের ঘুষ নেয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা বিতর্ক চলছে। গতকাল দুদকের সাময়িক বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির দাবি করেছেন তিনি ঘুষ নেননি; ঘুষ নেয়ার যে অডিও প্রকাশ করা হয়েছে তা বানোয়াট।
অন্যদিকে একই দিন নারী নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত ঘুষ দিয়ে আলোচনায় আসা পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান দাবি করেছেন তিনি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘুষ দিয়েছেন। তার কাছে সব তথ্য প্রমাণ রয়েছে। দুদক চাইলে তিনি তাদের কাছে সবকিছু সরবরাহ করবেন।
অভিযুক্ত পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগকে সম্পূর্ণ বানোয়াট দাবি করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। গতকাল মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন সাময়িক বরখাস্ত দুদকেই এই কর্মকর্তা। এনামুল বাছির বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট একটি অভিযোগ’। আপনারা সব এক্সপার্ট নিয়ে এটা প্রমাণ করুন।
ডিআইজি মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথোপকথনের অডিও সম্পর্কে জানতে চাইলে এনামুল বাছির বলেন, ‘সব বানোয়াট। তাকে অভিযোগ প্রমাণ করতে বলেন।’ ঘুষ নেয়ার অভিযোগ যে মিথ্যা, তার কোনো প্রমাণ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মিথ্যা জিনিসের প্রমাণ কী?’
দুর্নীতি ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে দুই দফায় ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তথ্য ফাঁসের অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে দুদক। একই সাথে তিনি ঘুষের টাকা নিয়েছেন কি না, নিলে সেই টাকা কোথায় আছে, এ বিষয়ে আলাদা তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
জানা গেছে, ডিআইজি মিজানুর রহমান আলোচিত বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা। গত বছর নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয় পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে। এরপর তার বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। তবে অভিযোগ ওঠে তদন্ত চলাকালেই প্রাপ্ত তথ্য অভিযুক্তের কাছে চালান করে দিয়ে ‘আপসরফার’ মাধ্যমে দুই দফায় তিনি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন। ডিআইজি মিজান নিজেই এমন অভিযোগ করেছেন দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে।
ডিআইজি মিজানের দুদকের কাছে করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের সঙ্গে তার চুক্তি ছিল টাকার বিনিময়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাবেন। তবে টাকা নিয়েও শেষ পর্যন্ত তার (অভিযুক্ত ডিআইজি মিজান) বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দেন দুদক কর্মকর্তা বাছির। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অবৈধ লেনদেনের এই ঘটনা দুদকের কাছে ফাঁস করেন ডিআইজি মিজানুর রহমান। তার অভিযোগ আমলে নিয়ে এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে বিষয়টি তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে দুর্নীতি দমনকারী সংস্থাটি। যদিও দুদক পরিচালক এনামুল বাছির অভিযোগটি অস্বীকার করেন।
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির ঘুষ নেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট দাবি করলেও অভিযোগকারী নারী নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত ডিআইজি মিজানুর রহমান উল্টো দাবি করেছেন তার কাছে ঘুষ দেয়ার সব রেকর্ড রয়েছে। দুদক থেকে ডাকা হলে তিনি তা উপস্থাপন করবেন। গতকাল মঙ্গলবার বেইলি রোডের বাসায় সাংবাদিকদের এসব কথা জানান বিতর্কিত ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
অডিও ফাঁসের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নিজেকে সেভ করার জন্যই ঘুষি দিয়েছি। আমার কাছে সব রেকর্ড আছে। আমাকে যখন ডাকবে তখন সব দেখাবো।’ কেন তিনি ঘুষ দিয়েছেন এই প্রশ্নের উত্তরে মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্নভাবে আমাকে প্রেসার ক্রিয়েট করে। বারবার দেখা করতে চায়। আমি দেখা করলাম। যখন দেখলাম যে এই লোকটা নিজেই দুর্নীতিবাজ, তখন সেটা তো প্রমাণ করতে হবে। আমি এই বিষয়টাই প্রমাণ করেছি। আমি ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়েছি। আমার স্বজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি তার সব তথ্য আছে।
দুদকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি কমিশনের কাছে অন্যায় কিছু চাচ্ছি না। আইন অনুযায়ী ন্যায়বিচার চাচ্ছি। আমি আশা করব তদন্ত কর্মকর্তা কোনো রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে নয়, স্বাধীন নিরপেক্ষ কমিশনের একজন সদস্য হিসেবে আমার ওপর জাস্টিস অ্যাপ্লাই করবেন।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।