পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সোনাগাজীর পলাতক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ঢাকায় আছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। কিন্তু তারপরও পুলিশ আইনের নানা অজুহাত দেখিয়ে তাকে ১৬ দিনেও গ্রেফতার করতে পারেনি। তাই প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশ সদস্য বলেই কি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এত সদয়? অন্যদিকে তাকে গ্রেফতার করতে ফেনী পুলিশের একটি টিম এরই মধ্যে ঢাকায় এসেছে। যেকোনো সময় তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ফেনীর সোনাগাজী সার্কেলের এএসপি শফিকুল আহমেদ ভূঁইয়া।
মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন গতকাল মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট অ্যানেক্স কোর্টের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে আগামী ১৬ জুনের মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে অথবা তিনি আত্মসমর্পণ না করলে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে। মোয়াজ্জেম হোসেন যেন কোনোভাবেই সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পালিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ও হিলি সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা জারি করেছে পুলিশ ও বিজিবি।
ঈদের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সচিবালয়ে বলেন, সরকার কাউকে ছাড় দেয় না। ওসি মোয়াজ্জেমকেও নয়। দেখবেন যেকোনো সময় গ্রেফতার হয়ে যাবে।
ফেনীর সোনাগাজী সার্কেলের এএসপি শফিকুল আহমেদ ভূঁইয়া জানিয়েছেন, ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করতে একটি টিম ঢাকায় অবস্থান করছে। যেহেতু ঘটনাটি সোনাগাজী থানা এলাকায় হয়েছে। সুতরাং সোনাগাজী থানা পুলিশই আসামি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করবে।
ওই ওসির বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে করা মামলার বাদী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন আরো বলেন, ওসি মোয়াজ্জেমের খুঁটির জোর কোথায়? গত ২৭ মে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। নুসরাতের পরিবারসহ সারা দেশের মানুষ অপেক্ষা করছে কখন পলাতক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন গ্রেফতার হবেন বা আইনের আওতায় আসবেন। আমরা ভেবেছিলাম, আজকে তিনি হাইকোর্টে আগাম জামিন নিতে আসবেন। কিন্তু তার মামলাটি হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ওঠেনি। মনে হচ্ছে এর মাধ্যমে তিনি সময়ক্ষেপণ করে আমাদের ও জাতির সঙ্গে ইঁদুর-বিড়াল খেলছেন। এ সপ্তাহে হাইকোর্টের আর মাত্র দুই দিন অবকাশকালীন বেঞ্চ বসবে। আগামী ১৬ জুন রোববার থেকে হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চ বসবে। তাই এ সময়ের মধ্যে মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার না করা হলে আমি বাদী হয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ বলে ঘোষণা করা হবে না তা নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করব।
তিনি আরো বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম পুরোপুরি বহিষ্কৃত হননি, সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছেন। আর কতটা সময় নিলে মনে হবে পুলিশ প্রশাসন তাকে গ্রেফতারে ব্যর্থ হয়নি? আমি জানি, পুলিশ প্রশাসন চাইলে এমন কোনো কাজ নেই যে তারা করতে পারে না। অসংখ্য উদাহরণ আছে যে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেও তারা আসামি ধরেছেন। নুসরাত হত্যাকান্ডের মামলায় ১৬ জন আসামিকে তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে ধরে এনেছেন। পিবিআই এক মাস তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন এবং এই প্রতিবেদন পুলিশের হাতে ছিল। প্রতিবেদনে তিনি (মোয়াজ্জেম) দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ওসি ফিরোজ কবির জানান, ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন যেন কোনোভাবেই এই পথ ব্যবহার করে ভারতে পালিয়ে যেতে না পারে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা আমাদের প্রধান দফতর থেকে ইতোমধ্যে আমরা পেয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা তার নাম ব্লক করে দিয়েছি। সে কোনোভাবেই এই পথ দিয়ে ভারতে যেতে পারবে না। সেই সঙ্গে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াতরত সব ধরনের পাসপোর্ট যাত্রীদের ছবি ওয়ান্টেডভুক্ত তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে তাদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই তাদের আসা-যাওয়ার অনুমতি দেয়া হচ্ছে।
বিজিবির হিলি আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার চান মিয়া জানান, আমরা সীমান্তে সব সময় সতর্কাবস্থায় থাকি। আমরা বিষয়টি অবগত।
পিবিআই এসপি আহসান হাবিব পলাশ বলেন, ওসি মোয়াজ্জেমকে এখন যেকোনো এলাকার পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে। আইনে বলা হয়েছে। এমনকি সাধারণ মানুষও তাকে ধরে পুলিশে দিতে পারেন। আর এটার মূল দায়িত্ব সোনাগাজী থানা পুলিশের।
উল্লেখ্য, মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার কয়েক দিন আগে তাকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেছিলেন প্রিন্সিপাল সিরাজ উদ্দৌলা। আর সেই ঘটনায় মামলা করতে গেলে সোনাগাজী থানার তখনকার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নুসরাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এই জিজ্ঞাসাবাদ তিনি মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ১৫ এপ্রিল ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ব্যারিস্টার সায়েদুল ইসলাম সুমন। ২৭ মে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত ওইদিনই ডাকযোগে তা সোনাগাজী ধানায় পাঠিয়ে দেন। এরপর শুরু হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা পাওয়া না পাওয়া এবং তা তামিল নিয়ে নাটক। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর ৩ জুন ফেনীর সোনগাজী থানা তা পাওয়া কথা স্বীকার করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।