Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

প্রাণ ফিরছে ঢাকার

স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

এবার সর্বস্তরের মানুষ মহাউৎসবে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন। গ্রামে ঈদ করতে প্রায় অর্ধকোটি মানুষ রাজধানী ঢাকা ছেড়ে গিয়েছিল। তারা এখন ঢাকায় ফিরছেন। ঈদুল ফিতরের ছুটির শেষে গতকাল ছিল দ্বিতীয় কর্মদিবস। এর মধ্যে অনেকেই ঈদের আনন্দ শেষে ঢাকায় ফিরে এসেছেন। প্রতিদিন বাস, লঞ্চম ট্রেনে লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় আসছেন। তবে ঢাকা এখনো আগের চিরচেনা রূপ পায়নি। গতকাল সোমবার ঢাকার সবচেয়ে ব্যস্ততম ব্যাংকপাড়া মতিঝিলে দেখা যায়, খুব কমসংখ্যক যানবাহন ও লোকজন রয়েছেন। রাস্তা ফাকা। অফিসগুলো খুললেও কর্মচারীর সংখ্যা কম হওয়ায় অনেক চেয়ার ফাকা। এছাড়া যানজট না থাকায় ঢাকা শহরের সব প্রান্তেই খুব কম সময়ে যাওয়া যাচ্ছে।

রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা রুবায়াত হোসেন বলেন, ঈদের আগে মিরপুর থেকে মতিঝিল আসতে তিন ঘণ্টার বেশি লাগতো। তবে আজকে ৪৫ মিনিটের মধ্যে চলে আসতে পেরেছি। এভাবে ঢাকা শহর ফাঁকা থাকলে চলাফেলা করে অনেক মজা লাগে। পাশাপাশি মানুষজন দিনের কাজ দিনেই করতে পারে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতীক থাকেন যাত্রাবাড়ির দনিয়ায়। বারিধারার ক্যাম্পাস থেকে ধনিয়া পৌঁছাতে গতকাল তার সময় লেগেছে মাত্র ৪০ মিনিট। যানজট না থাকায় সে দারুণ খুশি। রোকন নামের আরেক ব্যক্তি জানান, ঢাকার উত্তরা থেকে সকাল ১০ টায় রওনা দিয়ে ১১ টার মধ্যেই মিরপুর এসে পৌঁছেছেন। কাজ শেষে তিনি উত্তরা চলে গেছেন ৫০ মিনিটেই। তিনি বলেন, যানজটের কারণে আগে উত্তরা থেকে মিরপুর আসতে ৩ ঘন্টার বা তার বেশি সময় লাগতো। এখন ১ ঘন্টায় চলে আসতে পেরেছি। এখন বাসায় গিয়ে দুপুরের খাবার খেতে পারব। গুলিস্তানে মফিজ নামের এক রিকশাচালক বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাই নি। কোরবানির ঈদে যামু। ঈদের সময় রিকশা চালাইয়া অনেক ট্যাকা কামাইছি। ঈদের পর থেকে রাস্তায় যানজট নেই। রাস্তায় লোকজনও কম, রিকশা চালায়া ভালা লাগতাছে। আর কম সময়ের যে কোন জায়গায় যাওন যাইতাছে।

এদিকে ঢাকা শহরের ব্যস্ততম এলাকা ফার্মগেটে গিয়ে দেখা গেছে, গাড়ির চালকরা যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছে। কম সংখ্যক যাত্রী নিয়েই গন্তব্যে গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে। রাজধানীর অধিকাংশ রুটের বাসেই যাত্রী কম।
এদিকে অধিক ভাড়া দিয়েই ঢাকার কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে মানুষকে। বিভিন্ন জেলা শহর থেকে ঢাকায় ফেরার পথেও ভোগান্তি পিছু নিয়েছে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের। ট্রেনে-বাসে লক্ষ্য করা গেছে বাড়তি ভিড়। আসন না পেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছেন লোকজন।

গতকাল সোমবারও শিডিউল বিপর্যয় ছিল ট্রেনে। দুই ঘণ্টা ৩৬ মিনিট দেরিতে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ছেড়েছে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি এক্সপ্রেস। ফলে রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্মে অপেক্ষমাণ মানুষের দুর্ভোগের অন্ত ছিল না। অন্যান্য রুদের ঢাকামুখী ট্রেনগুলোরও একই চিত্র। ট্রেনের পাশাপাশি লঞ্চ ও বাসে বেড়েছে ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর দুই গুন তিনগুন বেশি দামে টিকেট কেটে বাসে উঠছেন ঢাকামুখী মানুষ। টাঈাইলের এক যাত্রী জানান, ঢাকা যেতে লোকাল বাসে ৬০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। অথচ অন্যান্য সময় সর্বোচ্চ ২০০ টাকায় নিয়ে যেত বাসগুলো। আসন না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, খুলনা, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকামুখী যাত্রীদের বেশি টাকা গুনেই কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তোভোগীদের। মানুষ ঢাকায় ফিরে আসায় ধীরে ধীনের প্রাণ ফিরে পাচ্ছে যানজটের রাজধানী ঢাকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাকা

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ