Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বছরে একবার জাগে গ্রামটি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গোয়ার একটি গ্রাম কুর্দি। বছরে মাত্র এক মাস জেগে থাকে গ্রামটি। বাকি ১১ মাস থাকে পানির নিচে। গ্রামের বাসিন্দাদের সবাই আশপাশের গ্রামগুলোয় বসতি গড়েছে। শুধু মে মাসে যখন পানি নেমে যায়, তারা ফিরে আসে কুর্দিতে। পুরোনো বাড়িঘর, খেত, ফলের গাছ, উপাসনালয়ের স্মৃতি রোমন্থন করে। এক বুক কষ্ট নিয়ে পরিচয় হারানোর ব্যথায় কাতর হয়। কুর্দি গ্রামটি পশ্চিমঘাট পর্বতমালার দুটি পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত। এর মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে সালাউলিম নদী। সালাউলিম গোয়ার অন্যতম প্রধান নদী জুয়ারির একটি উপনদী। গোয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি সমৃদ্ধিশালী গ্রাম ছিল এই কুর্দি। প্রায় তিন হাজার বাসিন্দা ছিল এ গ্রামে। তবে ১৯৬১ সালে পর্তুগিজ উপনিবেশ থেকে মুক্ত হওয়ার পর গোয়ার চিত্র বদলে যেতে শুরু করে। গোয়ার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী দয়ানন্দ বন্দোড়কার কুর্দি সফরে এসে ঘোষণা করলেন, গোয়ার প্রথম বাঁধটি নির্মিত হবে এই গ্রামেই। তিনি গ্রামবাসীকে জড়ো করে বোঝালেন, গোয়ার পুরো দক্ষিণাঞ্চলের সব মানুষের জন্য এই বাঁধ উপকারী হবে। তবে বাঁধটি নির্মাণের ফলে কুর্দি গ্রামটি ডুবে যাবে। বৃহত্তর স্বার্থের জন্য গ্রামবাসীকে এই ত্যাগ স্বীকার করার অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী। কুর্দির আদি বাসিন্দা গজানন কুর্দিকার (৭৫) বলেন, তারা মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ মেনে নিয়ে বসতভিটা স্থানান্তরে রাজি হন। তবে প্রতিশ্রুতি ছিল, এই বাঁধ গোয়ার দক্ষিণাঞ্চলের সব গ্রামে খাওয়ার পানি, সেচের পানি ও শিল্পের পানি

জোগান দেবে।

মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ রেখে কুর্দির ছয় শতাধিক পরিবার সে সময় বসতি স্থানান্তর করে। এর বিনিময়ে অন্য এলাকায় জমি ও ক্ষতিপূরণ পেলেও তাদের ভোগান্তি কম পোহাতে হয়নি।

বাঁধটি এখন পুরোপুরি চালু থাকলেও প্রতিশ্রুতিমতো খাওয়ার পানি দক্ষিণের গ্রামগুলোতে পৌঁছায়নি। কুর্দির বাসিন্দারা যেসব গ্রামে ঘর বেঁধেছেন, এখনো সেসব গ্রামে পানের জন্য কূপের পানিই মূল উৎস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ